ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্র ও বাদী পক্ষের অভিযোগ খণ্ডন করলেন আসামি পক্ষের আইনজীবী

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রাষ্ট্র ও বাদী পক্ষের অভিযোগ খণ্ডন করলেন আসামি পক্ষের আইনজীবী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফেনী, ১৮ সেপ্টেম্বর ॥ ফেনী সোনাগাজীর মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। যুক্তিতর্কে তিনি নুসরাত হত্যাকা-ে রাষ্ট্র ও বাদী পক্ষের উত্থাপিত অভিযোগ খ-ন করেন এবং ঘটনার সঙ্গে আসামিরা জড়িত নয় বলে আদালতে উপস্থাপন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীগণ তাদের যুক্তিতর্ক শেষ করতে আরে ৩/৪ কার্য দিবস লাগতে পারে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আদালত মুলতবি করেছেন বিচারক। আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে মামলার রায় ঘোষণার দিন ঘোষণা করবে আদালত। বুধবার আদালতে মামলার কর্যক্রম শুরু হলে ঢাকা থেকে আসা আসামি পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ফারুখ আহমেদ যুক্তিতর্ক শুরু করেন। যুক্তিতর্ক শুরুতে তিনি মামলার এজাহার, চার্জশীট, ১৬৪ ধারায় আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও জেরার ওপর বক্তব্য রাখেন। মামলার এজাহার প্রসঙ্গে বলেন এজাহার দায়েরে সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে। যদিও বিলম্বের কারণ হিসেবে চিকিৎসার জন্য ঢাকা থাকায় এজাহার দায়েরে বিলম্ব হয়েছে। এটা দিক আছে কিন্তু আইনে সিআরপিসি ১৫৪ ধারায় বলা হয়েছে যে কোন লোক এফআইআর করতে পারে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের আগে থানায় জিডি এন্ট্রি হয়েছে। সুতরাং এ এজাহারের যৌক্তিকতা নেই। কারণ ৪৪ ডিএলআর এর- ৪৯০ পৃষ্ঠায় ডিসিশন আছে, মামলার বিলম্ব দায়েরের কারণে সুবিধা আসামিরা পাবে। সে হিসেবে ফাঁসির দ- দেয়া আসামিদের খালাস দেয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে মামলা বিলম্বিত হলে ম্যানিপুলেশনের জন্য ব্যবহার হতে পারে। নুসরাতের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল প্রসঙ্গে বলেন, নারীবাদী নেতারা ঘটনাকে উস্কে দিয়েছে। কারণ যেহেতু এটি মাদ্রাসার ঘটনা, অধ্যক্ষ মাথায় টুপি পরেন, মুখে দাড়ি আছে। যদি প্যান্ট-শার্ট পরা কোন লোক শ্লীলতাহানি করত তা হলে এত আলোচনা হতো না। আদালত আন্ধা কানুন। মৌখিক সাক্ষ্য, দালিলিক সাক্ষ্য ও পারিপার্শিক সাক্ষ্য-এ ৩টি বিষয় মামলার বিচারের জন্য জরুরী। আসামি ইমরান হোসেন মামুনের বিষয় তিনি বলেন, ইমরান হেসেন মামুন ঢাকা হাসপাতালে নুসরাতকে এক ব্যাগ রক্ত দিয়েছে, যা নুসরাত মারা যাওয়ার সময় তার শরীরে রয়েছে মামলার এজহারে তার নাম নেই। বাদীর সাক্ষ্য জেরাতে তার নাম আসেনি। অথচ মামলার তদন্তের গাফিলতির কারণে আজ ইমরান হোসেন ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের আসামি। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে কারও নাম আসলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তা তদন্ত করে নিশ্চিত হয়ে আসামিকে গ্রেফতার করবে। এখানে চেইন অব ইভিডেন্স লাগবে। মামলাটি মিডিয়া ট্রায়াল। মামলার চার্জশীট আদালতে জমা দেয়ার আগের দিন ঢাকা পিবিআই সদর দফতরে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর শাহা অলমকে দেখা গেছে। বনজ বাবুর নির্দেশে এ চার্জশীট করা হয়েছে। মামলার তদন্তে গাফিলতি, সঠিক তদন্ত না করা ও ভিন্ন খাতে ঘটনা নেয়ার জন্য এজন্য তদন্তকারী কর্মকর্তার শাস্তি হওয়া উচিত। বনজ বাবু তদন্ত কর্মকর্তাকে ভিকটিমাইজ করেছে। তদন্তকারী কমকর্তা চাজশীর্ট লেখেননি। বনজ বাবুর নির্দেশে ফরমায়েশি চার্জশীট আদালতে জমা দিয়েছে তদন্তকারী কমকর্তা। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনার জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিল। তেমনি এখানেও একটি নাটক সাজানো হয়েছে। সঠিত তদন্ত না করায় ও মামলা ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য জজ মিয়া নাটক সাজানোর অপরাধে গ্রেনেড মামলার তদন্তকারী র্কমকর্তা মুন্সি আজিজুর রহমানের ৩ বছর জেল হয়েছে। বনজ বাবু সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ম্যাজিস্ট্রেটরা আদালতে এসেছেন। এ জন্য ম্যাজিস্ট্রেটদের ধন্যবাদ। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটদের ধন্যবাদ দেয়া বা আদালতে আসার জন্য বলার ক্ষমতা রাখেন কি না? এতেই স্পষ্ট যে মামলার চার্জশীটের ওপর বনজ বাবু প্রভাব বিস্তার করেছেন। ১৬৪ ধারর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নির্যাতনের ফসল। বনজ বাবুর নির্দেশে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়েছে। যুক্তিতর্কে বলেন, ২০০৭ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের কোথাও দ-বিধির সঙ্গে সমন্বয়ের কথা উল্লেখ নেই।
×