ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২৫ বছর পর প্রথম ম্যাচেই হার চ্যাম্পিয়নদের

প্রকাশিত: ১১:৫১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

২৫ বছর পর প্রথম ম্যাচেই হার চ্যাম্পিয়নদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১৯৯৪ সালের পর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের প্রথম ম্যাচেই হেরেছে বর্তমান শিরোপাধারী লিভারপুল। মঙ্গলবার রাতে ২০১৯-২০ মৌসুমের উদ্বোধনী দিনে ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে নেপলসে স্বাগতিক ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলির কাছে ২-০ গোলে হেরেছে অতিথি লিভারপুল। মূলত দশ মিনিটের ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে দ্য রেডসরা। গোলশূন্য ড্রয়ের দিকে যেতে থাকা ম্যাচের ৮২ থেকে ৯২ মিনিটে দুই গোল হজম করে জার্গেন ক্লপের দল। এর ফলে ২৫ বছর পর কোন চ্যাম্পিয়ন দল নতুন মৌসুমে প্রথম ম্যাচেই হারের স্বাদ পেয়েছে। সেই ১৯৯৪ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রথম ম্যাচে হেরেছিল ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান। স্টাডিও সান পাওলোতে নেপোলির হয়ে গোল দু’টি করেন পেনাল্টি থেকে বেলজিয়ামের ফরোয়ার্ড ড্রিয়েস মার্টেন্স ও টটেনহ্যাম হটস্পার থেকে দলবদল করে যাওয়া স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ফার্নান্ডো লরেন্টে। এই ম্যাচে লিভারপুল ভুগেছে তাদের তারকা গোলরক্ষক ব্রাজিলের এ্যালিসন বেকারের অনুপস্থিতিতে। এর ফলে গত মৌসুমে এ্যানফিল্ডে ১-০ গোলে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব নেপোলি। গতবারের ওই হারে নকআউট পর্বেই খেলতে পারেনি ইতালিয়ান ক্লাবটি। গ্রুপের আরেক ম্যাচে বেলজিয়ামের জেঙ্ককে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে অস্ট্রিয়ান লীগের চ্যাম্পিয়ন রেড বুল সালর্সবার্গ। রেড বুলের হয়ে চোখ ধাঁধানো হ্যাটট্রিক করেন নরওয়ের স্ট্রাইকার আরলিং হালান্ড। তিনি গোলগুলো করেন ম্যাচের ২, ৩৪ ও ৪৫ মিনিটে। ঘরের মাঠে বেশিরভাগ সময় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলার চেষ্টা করে স্বাগতিক নেপোলি। কার্লো আনচেলোত্তির দলের সুযোগও আসে এগিয়ে যাওয়ার। শুরুর দিকে নেপোলির ফ্যাবিয়ান রুইজকে দুইবার হতাশ করেন লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ান। ৪৯ মিনিটে মার্টেন্সের শট একহাতে দুর্দান্তভাবে রক্ষা করেন তিনি। অন্যদিকে লিভারপুলের হয়ে মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিও মানে বেশ কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করেন। তবে বিরতির আগে প্রথম সুযোগটি হাতছাড়া করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়র্ড রবার্টো ফিরমিনো। দু’দলেরই সুযোগ নষ্টের মধ্য দিয়ে ম্যাচটি ড্রয়ের দিকেই এগোচ্ছিল। কিন্তু ৮২ মিনিটে লিভারপুল ডিফেন্ডার এ্যান্ডি রবার্টসনের বিরুদ্ধে পেনাল্টি আদায় কনে নেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবলার জোশে ক্যালাজন। অবশ্য পেনাল্টির সিদ্ধান্ত পুরোপুরি নিশ্চিত হতে ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করেন জার্মান রেফারি ফেলিক্স। স্পট কিক থেকে নেপোলিকে এগিয়ে নিতে ভুল করেননি মার্টেন্স। গত জুনে লিভারপুলের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে টটেনহ্যামের হয়ে খেলেছেন লরেন্টে। এরপর তিনি এবার যোগ দিয়েছেন নেপোলিতে। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে হারভিং লোজানোর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন। মাঠে নেমে নিজের নামের প্রতি সুবিচারও করেন। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে (৯২ মিনিট) লিভারপুলের রক্ষণভাগের দুর্বলতায় নেপোলির হয়ে জয় নিশ্চিত করা গোলটি করেন লরেন্টে। গত মৌসুমে দুর্দান্ত খেলা ভার্জিল ভ্যান ডাইক ও গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগের গোলটি করেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। ইতালিয়ান সিরি’এ লীগে মৌসুমের প্রথম দুই ম্যাচে ৭ গোল হজম করা নেপোলির জন্য ম্যাচটি ছিল অগ্নিপরীক্ষার। এই পরীক্ষায় দারুণভাবে উতরে গেছে দলটি। ম্যাচ শেষে নেপোলি কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেন, এই মুহূর্তে লিভারপুল যেহেতু ইউরোপের সেরা দল তাই তাদের সঙ্গে সমান তালে লড়াই চালিয়ে যাওয়া সত্যিই কঠিন ছিল। সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি ও এসি মিলান কোচ আরও বলেন, আমরা জিতেছি ঠিক কিন্তু সবকিছু শতভাগ সঠিক ছিল না। তবে ম্যাচটি বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল। গত মৌসুমের তুলনায় লিভারপুল ভাল খেলেছে। তবে মূল কাজটাই করেছে ডিফেন্ডাররা। গোলশূন্য থাকার পর শেষ মুহূর্তের সুযোগগুলো আমরা কাজে লাগিয়েছি। লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ বলেন, নেপোলি ভাল খেলেছে। এই প্রতিযোগিতা জয়ের সব যোগ্যতা তাদের আছে। সঠিক পরিকল্পনা ও ভাল খেলোয়াড় দলে থাকলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ের জন্য বিশ্বের সেরা দল হওয়ার প্রয়োজন নেই। সঠিক মুহূর্তে পারফর্ম করে দেখালেই হবে। আমাদের এখনই সব শেষ হয়ে যায়নি।
×