ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেজায় চটেছেন বেন স্টোকস

প্রকাশিত: ১১:৫২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বেজায় চটেছেন বেন স্টোকস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ইংল্যান্ড। কুলিন দেশটির ক্রিকেটের সেরা সাফল্যের রূপকার নিউজিল্যান্ড বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ৮৪ রানের স্মরণীয় ইনিংস খেলে লর্ডসের ফাইনালে নাটকীয় জয়ের ‘নায়ক’ ২৮ বছরের ক্রেজি বয়। সদ্য সমাপ্ত এ্যাশেজে হেডিংলি টেস্টে অপরাজিত ১৩৫ রান করে ইংল্যান্ডকে ১ উইকেটের জয় এনে দেয়ার পর অনেকেই স্টোকসকে দেশটির সর্বোচ্চ সম্মাননা নাইটহুড দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার রেশ না কাটতেই ৩১ বছর আগের অনাকক্সিক্ষত এক ঘটনা সামনে এনে তারকা ক্রিকেটারের হৃদয়টাকে একেবারে ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়েছে বৃটিশ দৈনিক ‘দ্য সান’। ১৯৮৮ সালে নিউজিল্যান্ডে স্টোকসের মা ডেবের সাবেক সঙ্গী (বয়ফ্রেন্ড) রিচার্ড ড্রুন তার দুই সন্তানকে গুলি করে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেন। ৩ বছর পর জেরার্ড স্টোকস ও ডেব দম্পতির ঘরে স্টোকসের জন্ম হয়। এতদিনে মর্মান্তিক সেই ঘটনা এভাবে সামনে তুলে আনার বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ইংলিশদের নয়নমণি হয়ে ওঠা তুখোড় এই অলরাউন্ডার। ক্ষুব্ধ বেন স্টোকস তার টুইটার পেজে লিখেছেন, ‘তিন দশকেরও বেশি সময় আগের ঘটনার ওই শোক কাটাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে আমার পরিবারকে। এই ধরনের ব্যক্তিগত ও দুঃখজনক ঘটনা গোপন রাখতে হয়েছে অনেক সতর্কতার সঙ্গে।’ দ্য সানের মতো জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে হঠাৎ করে আবার সেটা সবার সামনে তুলে ধরা অত্যন্ত ‘নীচ আর জঘন্য’ বলে উল্লেখ করেন স্টোকস, ‘দ্য সান একটি খুব বেদনাদায়ক, সংবেদনশীল আর একান্ত ব্যক্তিগত ঘটনা ছেপেছে যা আমাদের পরিবারে ঘটেছিল ৩১ বছর আগে। সাংবাদিকতার নামে এমন আচরণ কতটা নীচ আর জঘন্য সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যবে না। আমার পরিবারের অনুভূতি নিয়ে এমন নির্মম, নিষ্ঠুর আর ঘৃণ্য আচরণ আমি কল্পনাও করতে পারি না।’ স্টোকস লিখেছেন, ‘এটা অত্যন্ত নিম্নরুচির সাংবাদিকতা, যেটা কেবল সংবাদপত্রের কাটতির জন্যই করা হয়। আমি এবং আমার পরিবার গভীরভাবে ব্যথিত, মর্মাহত।’ ঘটনাটা আসলে কী? ১৯৮৮ সালে স্টোকসের মা ডেবের সঙ্গে ড্রুনের ছাড়ছাড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নিজের ৮ বছরের ছেলে ট্রেসি ও মেয়ে ৪ বছর বয়সী এ্যান্ড্রুকে গুলি করে হত্যার পর ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন এবং নিজে আত্মহত্যা করেন। নির্মম সেই ঘটনা তখন পুরো নিউজিল্যান্ডে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর স্টোকসের মা ডেবের সঙ্গে বাবা জেরার্ড স্টোকসের বিয়ে হয় এবং তিন বছর পর ১৯৯১ সালে স্টোকসের জন্ম হয়। ২০০৩ সালে স্টোকসের বয়স যখন ১২ বছর তখন নিউজিল্যান্ড ছেড়ে তারা সপরিবারে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান। নিজের সৎ ভাই-বোনদের নিয়ে অতীতে কখনই মুখ খোলেননি স্টোকস। টুইটারে অনেকেই স্টোকসের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন। আর দ্য সানের মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘স্টোকস ও তার মায়ের প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ সহানুভূতি আছে, কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার করা দরকার যে এই রিপোর্ট লিখতে তার পরিবারের একজন বিস্তারিত তথ্য দিয়ে, ছবি দিয়ে ও নিজে ছবি তুলে সহযোগিতা করেছেন। ঘটনাটি তখন ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এবং নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় প্রকাশিত হয়েছিল। স্টোকসকে আমরা অনেক পছন্দ করি। এই রিপোর্ট ছাপানোর আগে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম এবং কোনভাবে তিনি কিংবা তার কোন প্রতিনিধি আমাদের এই রিপোর্ট না ছাপাতে অনুরোধ করেননি।’
×