ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

লিটন ঝড়ের পর মাহমুদুল্লাহ ঝলক

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

লিটন ঝড়ের পর মাহমুদুল্লাহ ঝলক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লিটন কুমার দাস শুরুতে কি ঝড়ো ব্যাটিংটাই না করলেন। ২২ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রান করে আউট হন। এরপর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ যে ব্যাটিং ঝলক দেখান, তাতে বাংলাদেশ বড় স্কোরই গড়ে। ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৭৫ রান যে করে বাংলাদেশ, তাতে মাহমুদুল্লাহ ৪১ বলে ১ চার ও ৫ ছক্কায় ৬২ রান করে ব্যাটিং ঝলক দেখান। সৌম্য সরকার না থাকায় ওপেনিংয়ে পরিবর্তন নিশ্চিতই ছিল। তবে তাইজুল ইসলাম ও সাব্বির রহমান রুম্মনকে বাইরে রাখা হয়। তাতে নাজমুল হোসেন শান্ত ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের অভিষেক হয়। পেসার শফিউল ইসলামও টি২০ খেলার সুযোগ পান। টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়ায় অভিষিক্ত ওপেনার শান্তর দিকে ভালভাবেই নজর থাকে। কিন্তু তিনি সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। সৌম্যর পরিবর্তে ওপেনিংয়ে নেমে ১১ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে লিটন ও মাহমুদুল্লাহ যে ব্যাটিংটা করেন, তাতে প্রভাব পড়েনি। সিরিজে প্রথম দুটি ম্যাচে পরে ব্যাটিং করতে হয় বাংলাদেশকে। একটিতে টস জিতে। আরেকটিতে টস হেরে। দুই ম্যাচেই চাপে পড়ে। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত আফিফ হোসেন ধ্রুবর ঝলকে জিতে। কিন্তু আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জেতা যায়নি। এবার আগে ব্যাটিং পাওয়ায় বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মুখে যেন হাসি ফুটে। তিনি বলেনও, আগে ব্যাটিং পাওয়াতে ভালই হয়েছে। টার্গেট অতিক্রম করার চাপটা নিতে হবে না। লিটন যেভাবে ব্যাটিং করতে থাকেন, শুরুতেই জিম্বাবুইয়ের ওপর চাপ তৈরি হয়ে যায়। মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন ওপেনার লিটন। প্রথম তিন ওভারে ৩ চার ও ২ ছক্কা হাঁকান লিটন। দ্রুত স্কোরবোর্ডে রান জমা হতে থাকে। শান্ত তো ব্যাটিং করারই সুযোগ পাচ্ছিলেন না। চতুর্থ ওভারে এসে যখন শান্ত ব্যাটিং করার সুযোগ পান, বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বসেন। কিন্তু খুব বেশিদূর তিনি এগিয়ে যেতে পারেননি। পেসার কাইল জার্ভিসের করা পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে কট এ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান শান্ত (১১)। কিন্তু লিটন তার ব্যাটিং নৈপুণ্য বজায় রাখেন। সৌম্য বাদ পড়ায় লিটনের ওপরও চাপ ছিল। ভাল ব্যাটিং করতে না পারলে বাদ পড়ার সম্ভাবনায় থাকবেন। তা তিনিও জানেন। সেই চাপ সামাল দিয়ে অসাধারণ ব্যাটিং করতে থাকেন। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৫৫ রান করে বাংলাদেশ। তবে হারায় ২ উইকেট। দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা লিটনও সাজঘরে ফেরেন। দলের ৪৯ রানে শান্ত আউটের পর আর ৬ রান যোগ হতেই লিটনও ব্যাটিং ঝড় তুলে ২২ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৮ রান করে আউট হয়ে যান। সাকিব ও মুশফিক এবার জুটি বাঁধেন। কি যে হয়েছে সাকিবের। বিশ্বকাপ মাতানো এ অলরাউন্ডার কিছুই করতে পারছেন না। প্রথম ওভার করতে এসেই রায়ান বার্লের স্পিনে আউট হয়ে যান সাকিব। দলের ৬৫ রানে সাকিব আউট হতেই দলও চাপে পড়ে। সেই চাপ মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ মিলে সামাল দেন। দুইজনই সমান তালে দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকেন। সুযোগ পেলেই ছক্কা, চার হাঁকান। হাফ সেঞ্চুরি জুটিও গড়েন। দুইজন মিলে ৭৮ রানের জুটিও গড়েন। দলের ১৪৩ রানের সময় মুশফিক (২৬ বলে ৩২ রান) আউট হলে আফিফ হোসেন ধ্রুব ব্যাট হাতে নামেন। ১৮তম ওভারে গিয়ে দল দেড় শ’ রান করে ফেলে। মাহমুদুল্লাহও আন্তর্জাতিক দশ ইনিংসের পর হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান। আফিফকে নিয়ে অনেক আশা দেখা হয়। কিন্তু প্রথম ম্যাচের পর আফিফ (৭) জ্বলে উঠতে পারছেন না। মাহমুদুল্লাহ শেষদিকে ঝড়ো ব্যাটিং করা শুরু করেন। বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলে গিয়ে আউট হয়ে যান। মাহমুদুল্লাহর আউটের পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও (২) আসেন আর যান। ইনিংসের শেষ বলে গিয়ে বাউন্ডারি হাঁকান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (৬*)। অভিষেক ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামলেও ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি আমিনুল। শেষ পর্যন্ত ১৭৫ রান করে বাংলাদেশ। লিটনের ঝড়ো ইনিংসের পর মাহমুদুল্লাহর পরিস্থিতি সামাল দেয়া ব্যাটিংয়ে বড় স্কোর গড়ে বাংলাদেশ।
×