ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এজবাস্টনের জোড়া সেঞ্চুরিকেই এগিয়ে রাখছেন স্টিভেন

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

এজবাস্টনের জোড়া সেঞ্চুরিকেই এগিয়ে রাখছেন স্টিভেন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবিশ্বাস্য এক এ্যাশেজ শেষ করলেন স্টিভেন স্মিথ। চোটের কারণে এক ম্যাচ ও এক ইনিংস খেলতে পারেননি। চার টেস্টের ৭ ইনিংসেই রান ৭৭৪। গড় ১১০.৫৭। সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি সমান ৩টি করে। ইনিংসগুলো ১৪৪, ১৪২, ৯২, ২১১, ৮২, ৮০ ও ২৩! কোন্টিকে এগিয়ে রাখবেন? অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন ওল্ডট্র্যাফোর্ডর ডাবল সেঞ্চুরি। না, স্মিথ এজবাস্টনের দুই ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরিকেই এগিয়ে রাখছেন। কারণ সেটি ছিল তার বহুল আলোচিত বল টেম্পারিংয়ের কারণে পাওয়া এক বছরের শাস্তি শেষে প্রথম টেস্ট ম্যাচ, ‘দীর্ঘদিন পর টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নেমে অনেক বেশি নার্ভাস ছিলাম। তবে নিজের ওপর আস্থা ছিল। প্রথম টেস্টের দুই সেঞ্চুরি আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত এ্যাশেজ ধরে রাখতে পেরেছি আমরা। দলের জন্য ভাল কিছু করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’ ওভালের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট শেষে বলেন সিরিজজুড়ে অতিমানবীয় ব্যাটিং উপহার দেয়া স্মিথ। এ্যাশেজে এবার অস্ট্রেলিয়া যে দুটি ম্যাচ জিতেছে সেই দুটিতেই ম্যাচসেরা স্মিথ। বেন স্টোকসের সঙ্গে যৌথভাবে উঠেছে সিরিজ সেরার পুরস্কার। ২-২এ সিরিজ ড্র করা সত্ত্বেও ট্রফি নিয়ে বাড়ি ফিরেছে টিম পেইনের দল। সেটি গত বছর ঘরের মাটিতে ইংলিশদের ৪-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করার সুবাদে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর ইংল্যান্ড থেকে এ্যাশেজ ট্রফি নিয়ে ফিরেছে অসিরা। সেটি বহুল আলোচিত স্মিথের এমন বর্ণময় ব্যাটিংয়ের জন্য। স্মিথ আরও বলেন, ‘প্রথম টেস্টের দুটি সেঞ্চুরি অনেক বেশি আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। আমার মনে হয়, পুরো সিরিজে ঐ দুটি সেঞ্চুরিই আমার সেরা দুটি ইনিংস। আমরা জানি, প্রথম টেস্ট সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। এ্যাশেজেও ব্যতিক্রম ছিল না। কিছু সমস্যা নিয়ে আমরা এ্যাশেজ খেলতে নেমেছিলাম। তবে প্রথম টেস্টের পর থেকে আমরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠি এবং বাকি ম্যাচগুলোতেও পারফর্মেন্স করতে পারি।’ দীর্ঘ দেড় বছর পর সাদা পোশাকে এমন ঝলমলে প্রত্যাবর্তনে স্ত্রীকে বিশেষ ধন্যবাদ দিয়েছেন অসি তারকা, ‘১৮ মাস টেস্ট থেকে দূরে ছিলাম। আমার স্ত্রীকে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য প্রচুর মানুষ পেয়েছি।’ লর্ডসে জোফরা আর্চারের বাউন্সারে আহত হয়ে পরের টেস্টে খেলতে পারেননি। অথচ পেশাদার স্মিথের মুখে প্রতিপক্ষ পেসারের স্তুতি, ‘গত বছর আইপিএলে আমি আর্চারকে দেখেছিলাম। তখনই বুঝেছিলাম, ও অত্যন্ত প্রতিভাবান। ওর ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল।’ ছবি তুলেছেন ঝগড়ায় জড়ানো ইংল্যান্ড স্পিনার জ্যাক লিচের সঙ্গেও। এই স্মিথ যেন অন্য মানুষ। বহুল আলোচিত বল টেম্পারিংয়ের কলঙ্ক মাথায় নিয়ে এজবাস্টনের প্রথম টেস্টে স্মিথ যখন মাঠে নামেন গ্যালারি থেকে ইংলিশ সমর্থকদের দুয়োধ্বনি ভেসে আসছিল। মাঝের ম্যাচগুলোতেও কম বেশি সেটি ঘটেছে। অথচ অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে সেই তিনিই ভক্তদের মনোভাব বদলে দিয়েছেন। ওভালে শেষ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে যখন ২৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তখন দর্শকরা দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানিয়েছেন, ‘এটি একটি দুর্দান্ত অভ্যর্থনা ছিল। তবে এ ম্যাচে আমার আরও কিছু রান থাকলে খুবই ভাল হতো। আমি মানসিক ও শারীরিকভাবে বেশ স্বস্তিতে ছিলাম। অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্মের আগে এখন বেশ কয়েক সপ্তাহ বিশ্রামের জন্য আমি মুখিয়ে আছি’ বলেন স্মিথ।
×