ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাদারীপুরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে স্বামীর বাড়িতে ৫ দিন ধরে অনশন

প্রকাশিত: ০০:২৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মাদারীপুরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে স্বামীর বাড়িতে ৫ দিন ধরে অনশন

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ ভালোবেসে বিয়ে ঘর বাঁধতে পারছে না মুক্তা মন্ডল (২০) নামের এক তরুণী। পরিণতি হলো অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশায় সে এখন স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে ৫ দিন ধরে স্বামীর বাড়ির ঘরের দরজায় বসে অনশন করছে। মুক্তা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদভিটা গ্রামের দরিদ্র ইজিবাইক চালক রান্টু মন্ডলের মেয়ে। দুই বছর আগে রাজৈর কদমবাড়ি গ্রামের বাবু রায়ের ছেলে সৈকত রায়ের সাথে তার বিয়ে হয়। সৈকত রায় ঢাকার স্ট্যাম্পফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র। অনশনরত মুক্তা মন্ডল জানায়, বিগত ৪ বছর আগে সৈকত রায়ের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর সুত্র ধরে ২ বছর পূর্বে পরিবারের অজান্তে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর বাবার বাড়িতে থাকত মুক্তা। গত ৬ মাস আগে ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় বাসা ভাড়া করে সৈকত তার স্ত্রী মুক্তাকে নিয়ে যায়। তাদের সংসার ভালই চলছিল। সৈকতের বাবা বাবু রায় ইতালী প্রবাসী। সৈকতের মা শেলী রায় সংসারের কর্তা। শেলী রায় যখন জানতে পারেন তার ছেলে বিয়ে করে ঢাকায় থাকে, তখন থেকেই ছেলেকে কুপরামর্শ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে মায়ের পরামর্শ অনুযায়ী সৈকত কিছুদিন আগে মুক্তাকে নির্যাতন করে ঢাকার বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয় এবং সৈকত বাসা ছেড়ে মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপন করে। কোন উপায় না পেয়ে মুক্তা গত শনিবার সৈকতের বাড়িতে এসে ওঠে এবং স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবীতে অনশন শুরু করে। এ সময় সৈকতের মা শেলী রায় মুক্তাকে ঘরে ঢুকতে বাধা প্রদান করেন এবং তিনি মুক্তাকে অরক্ষিত অবস্থায় রেখে ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে আত্মগোপন করেন। শনিবার থেকে মুক্তা সৈকতদের ঘরের বাইরে শিঁড়ির উপর একাকী বসে অনশন চালিয়ে যাচ্ছে। সৈকতও আত্মগোপনে থেকে ভাড়াটিয়া গুন্ডা পাঠিয়ে মুক্তাকে হুমকি দিচ্ছে। এমন কি তাকে জোরপূর্বক সৈকতের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বুধবার বিকেলে সৈকতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে তালা লাগানো এবং মুক্তা শিড়ির উপর বসে আছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় মেম্বরদের নিয়ে সেখানে হাজির হন। মুক্তার মুখে বিস্তারিত শুনে তাকে বিচারের আশ্বাস দেন। কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, ‘বাবু রায়ের বাড়িতে গিয়ে দেখি ঘরে তালা লাগানো। মেয়েটিকে বাবু রায়ের পরিবারের মুরুব্বীদের জিম্মায় রাখা হয়েছে। অতিসত্ত্বর এর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ রাজৈর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহজাহান বলেন, ‘ঘটনাটা আমার জানা নেই। তবে মেয়েটি যদি আইনের সাহায্য চায়, তাহলে তাকে আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে।’
×