ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্যাশনে শরৎ ও শারদীয় পোশাক

প্রকাশিত: ১২:১০, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ফ্যাশনে শরৎ ও শারদীয় পোশাক

‘শাপলা শালুকে সাজাইয়া সাজি, শরতে শিশিরে নাহিয়া শিউলি ছোপানো শাড়ি পরে ফের, আগমনী গীত গাহিয়া’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এ চরণগুলোর মতোই প্রকৃতি সেজেছে নতুন মহিমায়। শুভ্র সকালে শিশির ধোয়া এক আবেশ যে কারও মনকে ব্যাকুল করে তুলবে। মন ব্যাকুল হবেই বা না কেন, প্রকৃতিতে বইছে হেমন্তের হাওয়া। মিষ্টি শীতল হাওয়া সতেজ করে দেয় মন। সাদা শুভ্র মেঘগুলো আপন মনে উড়ে বেড়াচ্ছে, খেয়ালি পাখিরা কিচিরমিচির শব্দে দল বেঁধে ছুটে চলছে এ যেন এক অনাবিল আনন্দের বহির্প্রকাশ। নদীর ধারের কাশ ফুলগুলো মাথা নুইয়ে যেন পাখির কলতানকে স্বাগত জানায়। পুরো পরিবেশটাই যেন মন মাতাল করা। রঙ, রূপ, বৈচিত্র্যে মৌলিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। এ কারণে শরৎ ঋতু নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান, কবিতা ও উপন্যাস। ঋতুর এ পালাবদল মনকে যেমন দোলা দিয়ে যায়, ঠিক তেমনি ফ্যাশন ট্রেন্ডকেও আন্দোলিত করে। আর বর্তমান সময়ে ঋতুভিত্তিক পোশাকের আলাদা একটা চাহিদা রয়েছে। যে কারণে ফ্যাশন হাউসগুলো ঋতুভিত্তিক পোশাক তৈরিতে বাড়তি মনোযোগ দেয়। যে কারণে এ ধরনের পোশাকও চোখে পড়ে হরহামেশা। তবে একেক ঋতুর রঙ-রূপ একেক রকম। আর পোশাক তৈরিতে এ রঙ-রূপকেই প্রাধান্য দেয় ফ্যাশন হাউসগুলো। প্রকৃতিতে বইছে শরতের হাওয়া। শুভ্র কাশবন আর সাদা মেঘের ভেলাকে প্রাধান্য দিয়ে ডিজাইন করা হয় শরতের পোশাক। যে ডিজাইনে প্রাধান্য পায় সাদা রঙ। তবে অন্যান্য কালারের কম্বিনেশনও থাকছে। এ প্রসঙ্গে ডিজাইনার জাহিদ আকরাম জানান, একেক ঋতুতে একেক ডিজাইন এবং কালার ডিমান্ড করে। সেদিক মাথায় রেখেই ড্রেস ডিজাইন করে থাকি। এই শরতেও থাকছে ডিজাইন ভেরিয়েশন। ঋতুভিত্তিক পোশাকগুলো সাধারণত তরুণ প্রজন্মকেই বেশি আকৃষ্ট করে। সে কারণে তাদের রুচি ও পছন্দকেই প্রাধান্য দেয়া হয় বেশি। এ ছাড়া সব বয়সীর জন্যও থাকছে আকর্ষণীয় শারদীয় পোশাক। পোশাকের ধারা গতানুগতিক থাকলেও ডিজাইনে রয়েছে। সাদা, অফ হোয়াইট, বা ক্রিম কালারের কাপড়ের সঙ্গে লাল, গোলাপি এবং মেজেন্ডা রঙ ম্যাচ করে তৈরি করা হয়েছে সালোয়ার কামিজ এবং শর্ট পাঞ্জাবি। থাকছে হাতের কাজ, এ্যাপ্লিক, ব্লক, এবং হ্যান্ড স্প্রে’র সমন্বয়। ফতুয়ার ভেরিয়েশনও চোখে পড়ার মতো। কাশফুলের সিম্বলিক হ্যান্ড পেইন্ট দ্যুতি ছড়াবে আপন মহিমায়। সবচেয়ে বেশি ভেরিয়েশন রয়েছে টি-শার্টে। স্ক্রিন প্রিন্ট, কিংবা স্কেচ করা বিভিন্ন ডিজাইন ক্রেতাদের সহজেই আকৃষ্ট করবে। তরুণ প্রজন্ম টি-শার্টের বেশ ভক্ত। ভাদ্র-আশ্বিন এই দু’মাস মিলিয়ে শরৎকাল। তবে আশ্বিনের তুলনায় ভাদ্রে গরমের মাত্রা একটু বেশি। তাই শরতের পোশাক প্রস্তুতের ক্ষেত্রে কাপড়ের দিকটাও খেয়াল রাখতে হয়। যে কারণে সুতি, ভয়েল, এ্যান্ডি কটনকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কোটা এবং ধুতি কাপড়ও রয়েছে এ তালিকায়। কালার কম্বিনেশনে এবার নীল রঙটি সংযোজন করা হয়েছে। নীল আর সাদার কম্বিনেশন দেখে মনে হবে এ যেন নীল আকাশে সাদা মেঘ খেলা করছে পোশাকে। সাদা স্টোন এবং পুঁতির কাজ এর দ্যুতি যেন বাড়িয়ে তুলেছে বহুগুণ। প্রতিটি ফ্যাশন হাউসেই দেখা মিলবে শরতের পোশাকের। ঈদ-পরবর্তী পোশাকের সমাগম এখন শরতের পোশাক ঘিরেই। তাছাড়া আর কিছুদিন পরেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হবে। এ উৎসবটি শারদীয় উৎসবের আওতাভুক্ত। অনেকেই শরতের পোশাকটি শারদীয় উৎসবের জন্যও সংগ্রহ করে থাকেন। এ কারণে ফ্যাশন হাউসগুলোও শারদীয় পোশাকের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। সিম্পল ডিজাইন থেকে শুরু করে গর্জিয়াস ড্রেস পর্যন্ত মিলবে হাউসগুলোতে। কাপড়, রঙ এবং ডিজাইনের ওপর নির্ভর করছে পোশাকের দাম। সিম্পল শাড়ি মিলবে ৮০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকায়। গর্জিয়াস শাড়ি পাওয়া যাবে ১৫০০ টাকা থেকে ৪৫০০ টাকায়। শার্ট ৪০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা, ফতুয়া ৩৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, শর্ট পাঞ্জাবি ৬০০ টাকা থেকে ১৪৫০ টাকা। টি-শার্টের মূল্য পড়বে ২০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা। সালোয়ার কামিজ ১২৫০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা, টপস ৪০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা। শরতের আকাশ আরও বেশি বর্ণিল করে তুলবে শরৎকেন্দ্রিক এই পোশাকগুলো। স্নিগ্ধ পরিবেশে যা আপনাকে করে তুলবে আরও বেশি মোহনীয়, আরও বেশি আকর্ষণীয়। আর ফুটিয়ে তুলবে আপনার রুচি। ফ্যাশন ডেস্ক ছবি : রিয়াজ হোসেন ইফতি মডেল : এমরান, সজিব, মেহকা ও গুপ্তা পোশাক : অন্যরকম মেকআপ : ওমেন্স ডল
×