ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজধানীর নিকেতনে বিলাসবহুল অফিস ও বাড়িতে হানা ;###;সাত দেহরক্ষী আটক ;###;নগদ এক কোটি ৮১ লাখ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকারও বেশি এফডিআরের কাগজপত্র উদ্ধার;###;পাওয়া গেছে অস্ত্র, গোলাবারুদ, ডলার ও বিদেশী মদ

এবার গ্রেফতার শামীম ॥ যুবলীগ নেতা খালেদের তথ্যে অভিযান

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

এবার গ্রেফতার শামীম ॥ যুবলীগ নেতা খালেদের তথ্যে অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার পর এবার আরেক যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীমকে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তার অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা, অস্ত্রগোলাবারুদ, ডলার ও বিদেশী মদ। বৈধ অস্ত্রগোলাবারুদ চাঁদাবাজি ছাড়াও অন্যান্য বেআইনী কাজে ব্যবহার করার দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার অফিস থেকে শুধু নগদ টাকাই মিলেছে এক কোটি ৮১ লাখ। সেখান থেকে ১৬৫ কোটি টাকারও বেশি এফডিআরের কাগজপত্র পাওয়া গেছে। যার মধ্যে মায়ের নামে ১৪০ কোটি টাকার এফডিআর। আর গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতাসহ পরিবারের অন্যদের নামে বাকি টাকার এফডিআর করা। একটি অফিসে এত টাকা থাকার বিষয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এসব টাকা চাঁদাবাজি বা অন্যকোন অবৈধ পথে রোজগার করা কিনা সে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে র‌্যাব। বিপুল এই টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে গভীর তদন্ত চলছে। এদিকে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে জুয়ার আসর থাকার অভিযোগে সেখানে অভিযান চালিয়ে ক্লাবটির সভাপতি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শফিকুল আলম ফিরোজসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারের তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে। গ্রেফতারের তালিকায় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ছাড়াও আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতার নাম রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে। যেভাবে অভিযান ॥ গুলশানের নিকেতনের নিরাপত্তা প্রহরীরা বলছিলেন, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে র‌্যাব নিকেতনের সামনের দিকে অবস্থান নেয়। অবস্থানকারী র‌্যাব সদস্যদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন র‌্যাবের পোশাক পরা। আবার অনেকের পরনে র‌্যাবের পোশাক ছিল না। তবে তাদের কাছে ওয়্যারলেস দেখা গেছে। কারও কারও কোমরে অস্ত্রও ছিল। খানিকটা শলাপরামর্শ করার পর তারা সোজা নিকেতনের ভেতরে ঢুকে ১১৩ নম্বর যুবলীগ নেতার বাড়ির সামনে হাজির হন। ওই বাড়ি থেকেই তারা যুবলীগ নেতা ও তার সাত দেহরক্ষীকে আটক করেন। তখন ভোর ছয়টার মতো বাজে। এরপর সাত দেহরক্ষীকে র‌্যাব অন্যত্র সরিয়ে নেয়। জানা গেছে, তাদের র‌্যাব হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে যুবলীগ নেতা শামীমকে নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা নিকেতনের এ ব্লকের ৫ নম্বর সড়কের পশ্চিম দিকের দেয়াল লাগোয়া ১৪৪ নম্বর সাড়ে চার তলা জি কে বি এ্যান্ড কোম্পানি (প্রাইভেট লিমিটেড) নামক অফিসে অভিযান শুরু করেন। এটি যুবলীগ নেতার নিজস্ব মালিকাধীন বাড়ি ও অফিস। প্রায় দুই বছর আগে পাঁচ কাঠারও বেশি জমির ওপর নির্মিত বিশাল এই আলিশান বাড়িটি যুবলীগ নেতা কিনে নেন। এদিকে আগ থেকেই র‌্যাব সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে রাখে। আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেয় র‌্যাব সদস্যরা। বাড়ির প্রতিটি ফ্লোরে তল্লাশি চালানো হয়। কোটি কোটি নগদ টাকা, অস্ত্রগোলাবারুদ, মদ ও শত শত কোটি টাকার এফডিআর উদ্ধার ॥ তল্লাশি শেষে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম ও র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম সাংবাদিকদের জানান, জি কে শামীমকে তার বাড়ি থেকেই আটক করা হয়েছে। এ সময় তার সাত দেহরক্ষীকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে সাতটি শর্টগান পাওয়া গেছে। এছাড়া একটি বিদেশী অত্যাধুনিক পিস্তল ও বুলেট মিলেছে বাড়িতে। এসব অস্ত্র বৈধ। তবে বৈধ অস্ত্রগুলো চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা কাজে বেআইনীভাবে মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। বৈধ অস্ত্রের বেআইনী ব্যবহারের কারণে অস্ত্র ও বুলেটগুলো জব্দ করা হয়েছে। অস্ত্রগুলোর লাইসেন্সের মেয়াদ আছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে। এছাড়া জি কে শামীমের অফিসে বেআইনীভাবে মজুদ করা পাঁচ বোতল বিদেশী মদ পাওয়া গেছে। তল্লাশিতে বাড়িটি থেকে নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। এত টাকা অফিসে কি কারণে রাখা হয়েছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। এসব টাকা বৈধ পথে রোজগার নাকি চাঁদা বা টেন্ডারবাজি থেকে রোজগার করা হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। এছাড়া প্রায় নয় হাজার সিঙ্গাপুর ও মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে। অফিসে মোট এক শ’ ৬৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার এফডিআর করার বিভিন্ন ব্যাংকের কাগজপত্র উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে ১৪০ কোটি টাকার এফডিআর জি কে শামীমের মায়ের নামে করা। আর বাকি টাকার মধ্যে ২৫ কোটি টাকা জি কে শামীমের নামে এবং বাকি টাকা পরিবারের অন্যদের নামে করা। এসব টাকা কিভাবে উপার্জিত হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। রিমান্ডে থাকা যুবলীগ নেতার তথ্য মোতাবেক জি কে শামীম গ্রেফতার ॥ গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনো চালানোর দায়ে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গুলশানের তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে তার পরিচালিত অবৈধ ক্যাসিনোতেও অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে ১৪২ নারী-পুরুষকে জুয়া খেলার সময় গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের সাজা দেয় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, মানিলন্ডারিংসহ মোট চারটি মামলা হয়। অস্ত্র ও মাদক আইনে দায়ের করা দুই মামলায় সাতদিনের রিমান্ডে রয়েছে খালেদ মাহমুদ। র‌্যাবের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, খালেদ মাহমুদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল জি কে শামীম। তাদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগও ছিল। রিমান্ডে খালেদ মাহমুদ তার সঙ্গে অবৈধ নানা কর্মকান্ডে জড়িতদের নাম প্রকাশ করছে। খালেদের তথ্য মোতাবেক গ্রেফতার করা হয় জি কে শামীমকে। বাড়ি নয় যেন রাজপ্রাসাদ ॥ জি কে শামীমের ঢাকার বনানী, গুলশান ও নিকেতনে মোট চারটি বাড়ি রয়েছে বলে র‌্যাব ও নিকেতনের বাড়িতে থাকা অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন। নিকেতনের যে বাড়িটিতে জি কে শামীম থাকেন সেটি বাড়ি নয়, যেন রাজপ্রাসাদ। আর যেটি অফিস সেটিও আরেক রাজপ্রাসাদ। ১৪৪ নম্বর বাড়িটি তিনি দুই বছর আগে কিনে নিয়েছেন। সাড়ে চার তলা বাড়িটির সামনের ফটকটি তৈরি করতেই ব্যয় করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা। ভেতরের প্রতিটি দরজা করা হয়েছে রাজপ্রাসাদের দরজার মতো। কারুকাজ করা। দামী কাঠ দিয়ে করা হয়েছে। দ্বিতীয় তলার ভেতরে করা হয়েছে ডুপ্লেক্স। ভেতরে আলিশান সিঁড়ি। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। সাড়ে চার তলা বাড়ির উপরের দিকে হাঁটা, অবসর সময় কাঁটানো, আনন্দ স্ফুর্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক কথায় বাড়িতে আনন্দ স্ফুর্তি থেকে শুরু করে সব ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা আছে। দামী দামী ফার্নিচারে সাজানো হয়েছে বাড়িটি। সিঁড়ির প্রতিটি ধাপে লাখ লাখ টাকা খরচ করে কারুকাজ করা হয়েছে। মন্ত্রীদের চেয়েও বেশি দাপটে চলতেন ॥ জি কে শামীম গ্রেফতার হওয়ার পর মুখ খুলছেন নিকেতনের অনেক বাসিন্দাই। তারা বলছিলেন, তার অত্যাচারে নিকেতনের বাসিন্দারা রীতিমতো অতিষ্ঠ ছিল। তার চলাফেরা ছিল মন্ত্রীদের চেয়েও বেশি নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে। মনে হতো প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার অন্তত ২০ মিনিট আগে যে রাস্তায় সে যেত, সেই রাস্তা বন্ধ করে দিত তার দেহরক্ষীরা। মানুষজনকে চলাচল করতে দিত না। এমনকি কোন গাড়ি পর্যন্ত ওই রাস্তায় বের হতে দিত না। এ নিয়ে কেউ কোন কথাও বলতে পারত না। বললেই বিপদ। অনেকেই তিরস্কার করে বলতেন, নিকেতনের প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন। বাড়িতেই বার ॥ বাড়িটিতে রয়েছে ছোটখাটো বার। সেখান থেকে পাঁচ বোতল বিদেশী মদ। সেখানে নেশার আড্ডা বসত। যার মধ্যে মদের আড্ডা ছিল সবচেয়ে বেশি। বাড়িটি থেকে নগদ এক কোটি ৮১ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে। যা সাধারণত কোন বাড়িতে থাকার রেকর্ড খুবই কম। এত টাকার লেনদেন সাধারণত ব্যাংকে হয়ে থাকে। এসব অবৈধ টাকা হতে পারে বলে তদন্তকারীদের ধারণা। এছাড়া যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে, তাতে বাড়িটিতে জুয়ার আসর বসত বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছেন। আমাকে বেইজ্জতি কইরেন না ॥ গ্রেফতারের সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে জি কে শামীম বলেন, আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে বেইজ্জতি কইরেন না। আমার ছবি তুইলেন না। আমার একটা সম্মান আছে। তিনি ক্যামেরাম্যানদের ছবি না তুলতে বার বার অনুরোধ করেন। কখনও দাঁড়িয়ে, চেয়ারে বসে, হাত দিয়ে মুখ ঢাকছিলেন ছবি তোলার সময়। ক্যামেরায় ছবি তোলা থেকে বাঁচতে টেবিলের নিচে মাথা দিয়ে ছিলেন অনেক সময়। কে এই শামীম ॥ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সন্মানদী ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত মোঃ আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে তিনি। আফসার উদ্দিন মাস্টার ছিলেন হরিহরদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিন ছেলের মধ্যে জি কে শামীম মেজো। শামীমের বড় ভাই গোলাম হাবিব নাসিম ঢাকায় জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেন। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারী স্কুল ও হাইস্কুল পাস করার পর সে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকার বাসাবো ও সবুজবাগ এলাকায় বড় হয়েছেন। গত জাতীয় নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রচারও চালিয়েছিলেন তিনি। মতিঝিলের এজিবি কলোনি, হাসপাতাল জোন ও মধ্য বাসাবোতেই পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন শামীম। বাসাবোর ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির মাধ্যমেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি। পরবর্তীতে মির্জা আব্বাসের ভাই মির্জা কালু ও মির্জা খোকনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলে। তাদের সহযোগিতায় গণপূর্ত ভবনের ঠিকাদারি ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে গণপূর্ত বিভাগে তিনি দাপটের সঙ্গে দলের লোক হিসেবে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। একসময় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ক্যাডার ছিলেন। মির্জা আব্বাসের ডানহাত হিসেবে পরিচিতি পেয়েই পুরো গণপূর্তের ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করত। পরবর্তীতে ক্ষমতার পালাবদল ঘটলে তিনিও নিজেকে পাল্টে ফেলেন। সরকারী দলীয় লোক বনে যান। আর আগের মতোই নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন ঠিকাদারী ব্যবসা। তিনি ঢাকার সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত। জীবনের ভয়ে অনেক আওয়ামী লীগের ঠিকাদার গণপূর্ত ছেড়ে পালিয়ে যান। কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতা হওয়ার পর তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। দেশের প্রায় সব কাজ তিনিই নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন। ঢাকা মহানগর যুবদলের সহসম্পাদকের পদও বাগিয়ে নেন। বিএনপি আমলে গণপূর্ত ভবন ছিল তার দখলে। একসময় মির্জা আব্বাস আর খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের ছবিসহ সবুজবাগ-বাসাবো এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শোভা পেত জি কে শামীমের ব্যানার-পোস্টার। এখন শোভা পায় যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবিসহ পোস্টার-ব্যানার। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কিংবা যুবলীগের পার্টি অফিস, বিয়ে বাড়ি কিংবা বন্ধুর বাড়ি, যেখানেই তিনি যান, সঙ্গে থাকে অস্ত্রধারী প্রটোকল বাহিনী। ভারি অস্ত্র নিয়ে সাত নিরাপত্তারক্ষী আগে-পেছে পাহারা দিত তাকে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতারও হয়েছিল জি কে শামীম। বাসাবো এলাকায় পাঁচটি বাড়ি এবং একাধিক প্লট রয়েছে তার। বাসাবোর কদমতলায় ১৭ নম্বর বাড়িটি তার। ম্যানেজার হিসেবে সেটি দেখাশোনা করেন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ ইসমাইল হোসেন সর্দার। শামীম কয়েক বছর বাসাবোর ওই বাড়িতে বসবাস করলেও পরে বনানীর পুরনো ডিওএইচএসে নিজের ফ্ল্যাটে বসবাস শুরু করেন। নিজের কার্যালয় বানিয়ে বসেন নিকেতন এলাকায়। বাসাবোতে আরও তিনটি বাড়ি, ডেমরা, দক্ষিণগাঁও ছাড়াও সোনারগাঁ উপজেলা, বান্দরবান ও গাজীপুরে কয়েক শ’ বিঘা জমি কিনেছেন তিনি। যুবদল থেকে যুবলীগ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জি কে শামীম ॥ যুবদলের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে নামেন জি কে শামীম। এরপর তিনি নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা বলে দাবি করতেন। সূত্র বলছে, ২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এস এম মেজবাহ হোসেন বুরুজ মারা যাওয়ার পর শূন্য পদটি দেয়া হয় জি কে শামীমকে। শামীম ওই পদ ব্যবহার করেই সাংগঠনিক কর্মকান্ড চালাত। মূলত জি কে শামীম নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। জি কে শামীম দলের কেউ নয় ॥ যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী দাবি করেছেন, জি কে শামীম যুবলীগের কেউ নয়। শামীমের সঙ্গে যুবলীগের কোন সম্পর্ক নেই। যুবলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুল ইসলাম মিজু বলেন, শামীম যুবলীগের কেউ নন। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
×