ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে আট দিনের সরকারী সফরে শুক্রবার বিকেলে আবুধাবি হয়ে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএ ৭৪তম বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে শুক্রবার বিকেল তিনটা ৩৫ মিনিটে আবুধাবীর উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদের চীফ হুইপ নুর-ই আলম চৌধুরী লিটন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে আমিরাতের রাষ্ট্রদূত, ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ফ্লাইটটি আবুধাবীতে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে (স্থানীয় সময়) আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীতে একদিনের যাত্রাবিরতির পরে ২২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় (স্থানীয় সময়) ইত্তেহাদ এয়ার ওয়েজের একটি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের পথে যাত্রা করবে। একইদিনে প্রধানমন্ত্রী বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) নিউইয়র্কে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে কো-চেয়ার হিসেবে জাতিসংঘ ইকোনমিক এ্যান্ড সোস্যাল কাউন্সিলে (ইসিওএসওসি) একই সঙ্গে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বহুপাক্ষিক প্যানেল বৈঠক পরিচালনা করবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী অছি পরিষদে ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হলে ক্লাইমেট এ্যাকশন সামিটে বক্তব্য রাখবেন এবং ‘রিকগনাইজিং পলিটিক্যাল লিডারশিপ ফর ইম্যুনাইজেশন ইন বাংলাদেশ’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের কেনেডি রুমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দফতর (ইউএনএইচকিউ) বুথে জাতিসংঘ মহাসচিবের স্পেশাল এ্যাডভোকেট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স ফর ডেভেলপমেন্ট কুইন মেক্সিমার সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রী সফরকালে জাতিসংঘ সদর দফতরের কনফারেন্স রুম ৭-এ গ্লোবাল কমিশন অন এ্যাডাপ্টেশন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তিনি নর্থ ডেলিগেট’স লাউঞ্জে জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত স্টেট লাঞ্চনেরও অংশ নেবেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দফতরের কনফারেন্স রুম ১১-তে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও ওআইসি সচিবালয় আয়োজিত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের অবস্থার ওপর একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও যোগ দিবেন। শেখ হাসিনা ইউএনএইচকিউ-এর ইসিওএসওসি চেম্বারে ‘লিডারশিপ ম্যাটার্স-রিলেভ্যান্স অব মহাত্মা গান্ধী ইন দ্য কন্টেম্পোরারি ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়াও তিনি লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ২৫ সেপ্টেম্বর ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিলে টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি সম্মেলন) ওপর উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামে ‘লোকালাইজিং দ্য এসডিজিস’-এ প্রধানমন্ত্রী কো-মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সে ‘এ কনভারসেশন উইথ অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ শীর্ষ একটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন। একই দিনে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলে বাইলেটারেল মিটিং রুমে তিনি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সকলের জন্য স্যানিটেশন ও পানির সভাপতি কেভিন রাডের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ হাউসে একটি নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর লোটে নিউইয়র্ক প্যালেস হোটেলের বাইলেটারেল মিটিং রুমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইক্সোনমোবাইল এলএনজি মার্কেট ডেভেলপমেন্ট ইনকর্পোরেটেডের চেয়ারম্যান এলেক্স ভি. ভলকোভ, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, বিল এ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বিল গেটস এবং আইসিসি প্রনিবিউটর ফাতোউ বেনসোউদার সঙ্গে বৈঠক করবেন। শেখ হাসিনা একই দিনে লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসের হোলমেসে ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। এছাড়া তিনি ইউনিসেফ হাউসের লাবৌউইস হলে ইউনিসেফ আয়োজিত ‘এক ইভেনিং উইথ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএন সদর দফতরের কনফারেন্স রুম ১-এ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘সাইটেইনেবেল ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ : কমপ্রেভেনসিভ প্রাইমারি কেয়ার ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ এ্যান্ড ডিজেবিলিটিজ’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একই দিন জাতিসংঘ সাধারণ সম্মেলনের ৭৪তম বার্ষিক সাধারণ বিতর্কে বক্তৃতা দিবেন। ২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে প্রেস ব্রিফিং করবেন এবং এছাড়াও তিনি নিউইয়র্কের হোটেল ম্যারিয়ট মারকুইসে বাংলাদেশী কমিউনিটি আয়োজিত একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। জাতিসংঘ সচিবালয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিনেশন ও যুব দক্ষতা উন্নয়নে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার গ্রহণ করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গাভি) টিকা প্রদানে বাংলাদেশের অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ নামে পুরস্কার প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, এছাড়াও ইউনিসেফ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ শীর্ষক পুরস্কারে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মানিত করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই পুরস্কার প্রদানের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান জানানোর জন্য এক সন্ধ্যা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকা, ওয়াশিংটন পোস্ট ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ আন্তর্জাতিক সুপরিচিত গণমাধ্যমকে সাক্ষাতকার দেবেন। ২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৯টায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইত্তেহাদ এয়ার ওয়েজের একটি ফ্লাইটে করে নিউইয়র্ক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। তিনি আবুধাবি হয়ে ঢাকায় পৌঁছবেন। ৩০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৮টায় শেখ হাসিনা আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি বিমানযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। ১ অক্টোবর ভোরে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। প্রধানমন্ত্রী আবুধাবি পৌঁছেছেন ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক যাবার পথে শুক্রবার বিকেলে (স্থানীয় সময়) আবুধাবি পৌঁছেন। প্রধানমন্ত্রী ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএ ৭৪তম বার্ষিক অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে (স্থানীয় সময়) সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ১৫ মিনিট) আবুধাবী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
×