ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিদায়ী ম্যাচে জিম্বাবুইয়েকে জেতালেন মাসাকাদজা

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 বিদায়ী ম্যাচে জিম্বাবুইয়েকে জেতালেন মাসাকাদজা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ, তাই যেন অবিস্মরণীয় কিছু করার পণ নিয়েই নেমেছিলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। জিম্বাবুইয়ের অধিনায়ক তা-ব চালিয়ে মাত্র ৪২ বলে ৪ চার, ৫ ছক্কায় ৭১ রানের ইনিংস খেলেন। ফলে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজে শুক্রবার নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুইয়ে। ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ জিম্বাবুইয়ের জন্য এটি স্বস্তির জয়। আর টানা ১২ টি২০ ম্যাচে জয়ের রেকর্ড গড়ার পর অবশেষে পরাজয়ের স্বাদ নিল আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা আফগানরা। অধিনায়ক রশীদ খানের ২১তম জন্মদিনে আসল সেই হার। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রান তোলে আফগানিস্তান। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৫৬ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় জিম্বাবুইয়ে। আফগানদের বিপক্ষে টি২০তে এটি জিম্বাবুইয়ের প্রথম জয়। ফাইনাল আগেই নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে একাদশে ৩টি পরিবর্তন নিয়ে নামে আফগানিস্তান। অভিষেক হয় ফজল নিয়াজাইয়ের, সুযোগ পান শফিকুল্লাহ ও দৌলত জাদরান। আর তিন ফরমেট মিলিয়ে মাসাকাদজা ক্যারিয়ারের ৩১০তম ম্যাচ খেলতে নামেন ‘মুধারা ৩১০’ লেখা জার্সি গায়ে। মুধারা অর্থ সিনিয়র অধিবাসী। তিনি দলটাকে অপরিবর্তিত রেখেই নামেন। সাগরিকায় আগে ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের জন্য সুবিধাজনক আর পরে ব্যাটিংয়ে নামলে ধীরগতির উইকেটে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে আফগানরা। উদ্বোধনী জুটিতেই ঝড় তোলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও হজরতুল্লাহ জাজাই। দু’জন ৯.৩ ওভারেই ৮৩ রান তুলে নেন। তবে এরপর ঘুরে দাঁড়ায় জিম্বাবুইয়ের বোলাররা। ২৪ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৩১ রান করা জাজাইকে ফেরান টিনোটেন্ডা মুতোম্বদজি। এরপর ক্রিস্টোফার এমপোফুর পেস ঝড়ে আফগান ব্যাটিংয়ে ধস নামে। গুরবাজও ৪৭ বলে ৪ চার, ৪ ছক্কায় ৬১ রান করে বিদায় নেন। পরে আর কোন ব্যাটসম্যানই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। সে কারণে জিম্বাবুইয়ের বোলাররা শেষ ৭ ওভারে মাত্র ৩৯ রান দিয়ে আরও ৬ উইকেট তুলে নেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রানের সংগ্রহ পায় আফগানরা। এমপোফু ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে ৩০ রানে ৪ উইকেট এবং মুতোম্বদজি ২ উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে দারুণ শুরু করেন ব্রেন্ডন টেইলর আর মাসাকাদজা। ব্যাটিংয়ে নামার সময় মাসাকাদজা তার পুরনো ৩ নম্বর জার্সিতেই নামেন এবং উভয় দলের ক্রিকেটাররা তাকে দাঁড়িয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। সেই মাসাকাদজা খেলেছেন দুর্দান্ত। টেইলরকে নিয়ে ৪০ রানের জুটি গড়েন তিনি। টেইলর ১৯ রানে বিদায় নিলেও মাসাকাদজা ক্যারিয়ারের ১১তম অর্ধশতক আদায় করেন। দ্বিতীয় উইকেটে তিনি রেগিস চাকাবভাকে নিয়ে ৪৭ বলে ৭০ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন। মাসাকাদজা ৪২ বলে ৪ চার, ৫ ছক্কায় ৭১ রান করে দৌলত জাদরানের শিকার হন। ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে এমন একটি ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলার কারণে আফগান ফিল্ডাররাও তাকে এগিয়ে এসে অভিনন্দিত করেছেন। বাকি কাজটা চাকাবভা ও শন উইলিয়ামস করেই ফেলেছিলেন। তবে ১৮তম ওভারে মুজিব উর রহমান ফিরতি স্পেলে ফিরে এসে আঘাত হানেন, ফিরিয়ে দেন ৩২ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ৩৯ রান করা চাকাবভাকে। এতে কোন সমস্যাই হয়নি জিম্বাবুইয়ের জয় তুলে নিতে। ৩ বল হাতে রেখেই ১৯.৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৫৬ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় জিম্বাবুইয়ে। উইলিয়ামস ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। আফগানদের কাছে ৮ টি২০ খেলে সবগুলোতেই হেরেছিল জিম্বাবুইয়ে। অবশেষে প্রথম জয় তারা পেয়ে গেল মাসাকাদজার বিদায়ী ম্যাচে। অন্যদিকে ২১তম জন্মদিনে হার দেখলেন রশীদ। স্কোর ॥ আফগানিস্তান ইনিংস- ১৫৫/৮; ২০ ওভার (গুরবাজ ৬১, হজরতুল্লাহ ৩১; এমপোফু ৪/৩০, মুতোম্বদজি ২/১৮)। জিম্বাবুইয়ে ইনিংস- ১৫৬/৩; ১৯.৩ ওভার (মাসাকাদজা ৭১, চাকাবভা ৩৯, উইলিয়ামস ২১*; মুজিব ২/২৮)। ফল ॥ জিম্বাবুইয়ে ৭ উইকেটে জয়ী।
×