ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শাহবাগ থেকে ঢামেক এলাকা দৃষ্টিনন্দন করা হবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২:৩৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 শাহবাগ থেকে ঢামেক এলাকা  দৃষ্টিনন্দন করা হবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ শাহবাগ থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (ডিএমসিএইচ) পর্যন্ত গোটা এলাকা দৃষ্টিনন্দন করতে সরকার এখানকার প্রধান প্রধান ভবন ও স্থাপনা নান্দনিক নক্সায় নতুন করে নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, ‘এলাকাটিকে একটি ভিন্ন চেহারা দিতে এখানকার চারটি বৃহৎ স্থাপনা- জাতীয় জাদুঘর, গণগ্রন্থাগার, ঢাবি শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র (টিএসসি) ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নতুন করে নির্মাণ করা হবে।’ খবর বাসসর। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার শুক্রবার বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে সাক্ষাত করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। টিএসসি’র উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬০-এর দশকে টিএসসি যখন নির্মাণ করা হয়, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ থেকে ৫ হাজার। কিন্তু এখন এর ছাত্র-শিক্ষক সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি। এই বিপুল সংখ্যক ছাত্র-শিক্ষকের জন্য আরও বড় জায়গা ও সুযোগ-সুবিধা দরকার। তিনি বলেন, এছাড়া টিএসসি মিলনায়তন ও ক্যাফেটেরিয়া বেশ কয়েক দশকের পুরনো। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার টিএসসিকে এমনভাবে নির্মাণ করবে, যাতে টিএসসি কমপ্লেক্সে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যালয়ের স্থান সঙ্কুলান হয়। ‘টিএসসিতে একটি আন্তর্জাতিক মানের মিলনায়তনও নির্মাণ করা হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিএসসি কমপ্লেক্স উন্নয়নে ইতোমধ্যে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। গণগ্রন্থাগার সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে খুবই দৃষ্টিনন্দন করে গণগ্রন্থাগারকে নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, বিপুলসংখ্যক পাঠক ও গবেষকের স্থান সঙ্কুলানের জন্য গণগ্রন্থাগার আকারে দ্বিগুণ করা হবে। সেখানে যারা যাবেন তারা গ্রন্থাগার কমপ্লেক্সের নান্দনিক সৌন্দর্র্যও উপভোগ করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানকার পুকুরকে কেন্দ্র করে এলাকাটিকে পাঠকদের অবসর সময় কাটানোর জন্য একটি সুন্দর স্থানে পরিণত করা হবে। জাতীয় জাদুঘর প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে জাদুঘরের জন্য একটি দর্শনীয় নক্সাও প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল যাতে একই সঙ্গে ৪ থেকে ৫ হাজার রোগীকে সেবা দিতে পারে, সেভাবে নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, ডিএমসিএইচ’কে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা ও চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত করে উন্নয়ন করা হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখতে শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর পর্যন্ত মেট্রোরেলকে সাউন্ড-প্রুফ করা হবে। ঢাবি ছাত্র-ছাত্রীদের মেট্রোরেল নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ মেট্রোরেল শিক্ষার পরিবেশে বিঘœ ঘটাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ভেতর দিয়ে মেট্রোরেল রুট ও এর স্টেশন নির্মাণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের একাংশের প্রতিবাদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল শ্রেণীর মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে তিনি নিজেই মেট্রোরেলের রুট নির্ধারণ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও রোগীদের কথা চিন্তা করে শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর রুট নির্ধারণ করেছেন। তিনি বলেন, এটি হবে কম্পিউটারাইজড সর্বশেষ মডেল ইলেকট্রনিক ট্রেন যা প্রতিটি স্টেশনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে থামবে। শেখ হাসিনা বলেন, বিপুলসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীর যাতায়াতের কথা বিবেচনায় রেখে টিএসসি এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের চলাফেরা ও একুশে বইমেলার কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা বাংলা একাডেমির সামনে একটি বড় আন্ডারপাস নির্মাণ করব। তিনি বলেন, মেট্রোরেল বা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ থেকে ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন স্থানে আন্ডারগ্রাউন্ড রেল (টিউব) ও এলিভেটেড রেল নির্মাণ করে পুরো ঢাকা মহানগরকে মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, নগরবাসীদের চলাফেরা সুগম করতে সরকার ঢাকা মহানগরের চারদিকে এলিভেটেড রিং-রোডও নির্মাণ করবে।
×