ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ এশিয়াতে জাতিগত সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে

প্রকাশিত: ০৭:৪৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 দক্ষিণ এশিয়াতে জাতিগত সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে

বিশ্ব শান্তি দিবসের আলোচনায় বক্তারা স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ^ শান্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দেশের বিশিষ্টজনরা বলেছেন, সারা পৃথিবী আজ নতুন করে যুদ্ধের বিপদের মধ্যে পতিত হয়েছে। বিশেষ করে, ধর্মের নামে, উগ্র জাতীয়তাবাদের নামে দক্ষিণ এশিয়াতে জাতিগত সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। যার ফলশ্রুতিতে এ অঞ্চলে এক যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদ এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতা উস্কে দিচ্ছে এবং বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এই সহিংসতা ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির জন্য শক্তিশালী জনমত ও মানবতার কোন বিকল্প নেই। শনিবার জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত সভায় রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকারকর্মী সহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু। বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত মমতাজ হোসেন প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন আশরাফুল হক ঝন্টু। বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে সমাজ জীবনেও শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জনমত প্রতিষ্ঠাও শান্তির সংগ্রামের অংশ। বিশেষ করে, দেশের তরুণ সমাজকে এই সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, যে ফুলকে বাঁচাতে আমরা মহান স্বাধীনতায় অংশ নিয়েছিলাম, সে ফুল আর রাজধানীতে ফোটে না। স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর যে শান্তির কথা উঠে এসেছিল, তার পরিবর্তে এখন ক্যাসিনো খেলা জমে উঠে। ভিসির কাছে ছাত্রের ৮০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি। পর্দা-বালিশের নামে লাখ টাকা লুটপাটের খেলা চলে। সেলিম বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা একটি ফুলকে বাঁচাতে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেই। অপরদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ফুলের মতো জীবন ধ্বংসে মেতে উঠেছিল। আমরা হয়তো ভেবেছিলাম এ যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ দেখতে হবে না। বড় কোনো যুদ্ধ না দেখলেও এখনও সেই ফুলকে আমরা ফোটাতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে শান্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন, যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করেছিলেন, তা হারিয়ে গেছে। এখন সেই ফুলের পরিবর্তে ছাত্ররা এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে ৮০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। বালিশ, পর্দাকা-ে মেতে থাকে এক শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তারা। আর সরকারী দলের লোকেরা এখন মেতে উঠেছে টেন্ডার, চাঁদাবাজি ও ক্যাসিনো খেলায়। তিনি বলেন, আমরা সব অনৈতিক কাজ বন্ধ করতে পারলে আমাদের দেশে শান্তি আসতো। কিন্তু এর পরিবর্তে বিভিন্ন সামরিক চুক্তি করা হচ্ছে। এটা কার স্বার্থে করা হচ্ছে জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, এতে আমার দেশের কোনো লাভ হবে না। যারা যুদ্ধ করে, তারা করবে। তারা শান্তি আনতে পারবে না। এসব সামরিক চুক্তির কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।
×