ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নাওমির ‘ওসাকা’ জয়

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 নাওমির ‘ওসাকা’ জয়

জিএম মোস্তফা ॥ এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করলেন না নাওমি ওসাকা। প্রতিপক্ষকে সরাসরি সেটে পরাজিত করেই নিজের শহর ওসাকার টুর্নামেন্ট প্যানপ্যাসিফিক ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হলেন তিনি। রবিবার ফাইনালে জাপানের নাওমি ওসাকা ৬-২ এবং ৬-৩ সেটে পরাজিত করেন এ্যানাস্তাসিয়া পাভলিউচেঙ্কোভাকে। রাশিয়ান তারকাকে হারাতে নাওমি ওসাকার সময় লাগে মাত্র ১ ঘণ্টা ৯ মিনিট। সেই সঙ্গে চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। জানুয়ারিতে মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ওসাকা। তার দীর্ঘ ৮ মাস পর কোন শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ দুইযুগ পর জাপানের কোন খেলোয়াড় হিসেবে প্যানপ্যাসিফিক ওপেনের ট্রফি জয়ের রেকর্ডটাও এখন ওসাকার দখলে। তার আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন কিমিকো ডেট ১৯৯৫ সালে। তবে এই শিরোপা জয়ের অনুভূতিটা ওসাকার কাছে বিশেষ রকমের। কেননা এই শহরেই যে জন্ম তার। তাও আবার দুইবার ব্যর্থ হয়ে তৃতীয়বারের সময় এসে স্বপ্ন পূরণ হলো ওসাকার। নিজের দেশের সমর্থকদের সামনে উঁচিয়ে ধরলেন স্বপ্নের শিরোপা। তাই দারুণ রোমাঞ্চিত জাপানের তরুণ প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়। এ প্রসঙ্গে ম্যাচের শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ওসাকা বলেন, ‘এর আগেও এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছি আমি। এটা ছিল আমার তৃতীয় ফাইনাল। শেষ পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে সক্ষম হয়েছি। তাতে আমি খুবই আনন্দিত। এটা সেই শহর যেখানে আমার জন্ম। তাই এই শিরোপা আমার কাছে বিশেষ কিছু।’ শনিবার একইদিনে দুই ম্যাচ খেলেছিলেন ওসাকা। মূলত বৃষ্টির কারণেই এমন জটিল সূচীর মুখোমুখি হতে হয় তাকে। তবে দুই ম্যাচের দুটিতেই দাপট দেখিয়েছেন বর্তমান বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের চার নম্বরে থাকা ওসাকা। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচে জুলিয়া পুতিনসেভাকে হারান তিনি। এরপর সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের এলিস মার্টেন্সের বাধা অতিক্রম করেন ২১ বছরের এই খেলোয়াড়। ফাইনালেও দাপট অব্যাহত রেখেছেন ওসাকা। সরাসরি সেটে জিতেই ২০১৯ সালের দ্বিতীয় ট্রফি নিজের শোকেসে তুললেন তিনি। এই টুর্নামেন্টে তার এতোটাই দাপট ছিল যে একটি সেটও হারেননি তিনি। নিজের এমন পারফর্মেন্সে তাই দারুণ সুন্তুষ্ট ওসাকা। এ প্রসঙ্গে জাপানী তারকা বলেন, ‘শেষ দুই ম্যাচে আমার সার্ভ খুবই ভাল ছিল বলে মনে করি আমি। প্রতিপক্ষ হিসেবে পাভলিউচেঙ্কোভা দুর্দান্ত। বিশেষ করে ফিরতি শটে তার প্রশংসার জুড়ি নেই। কিন্তু তার বিপক্ষেও আমার সার্ভ ভাল ছিল।’ ওসাকার মতো পাভলিউচেঙ্কোভাও এই আসরে দাপট দেখিয়েছেন শুরু থেকে। শুরুটা করেছিলেন হল্যান্ডের কিকি বার্টেন্সের বিপক্ষে জয় দিয়ে। এরপর সেমিফাইনালেও অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় রাশিয়ান তারকাকে। তবে ২৮ বছর বয়সী পাভলিউচেঙ্কোভা সেই ম্যাচে জার্মানির এ্যাঞ্জেলিক কারবারকে হারিয়েই ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন। কিন্তু ফাইনালে এসে ওসাকার বাধা আর অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। যদিওবা এর আগে একমাত্র মুখোমুখি লড়াইয়ে জয়ের দেখা পেয়েছিলেন পাভলিউচেঙ্কোভাই ২০১৭ সালের হংকং ওপেনে। প্যানপ্যাসিফিক ওপেনে ২০১৬ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিলেন ওসাকা। সেবার ডেনমার্কের ক্যারোলিন ওজনিয়াকির কাছে হেরে যান তিনি। এরপর ২০১৮ সালে আবারও এই আসরের ফাইনালে জায়গা করে নেন জাপানী তারকা। কিন্তু এবার তার বাধা হয়ে দাঁড়ান চেক প্রজাতন্ত্রের ক্যারোলিনা পিসকোভা। অবশেষে তৃতীয়বার আর সুযোগ হাতছাড়া করেননি ওসাকা। নিজের দেশের সমর্থকদের ভালবাসায় মুগ্ধ-বিমোহিত ওসাকা জানালেন, এখানে খেলতে দারুণ পছন্দ করেন তিনি। সমর্থকদের এই ভালবাসা পেতে আগামী মৌসুমে প্যানপ্যাসিফিকে আসার আগাম সুসংবাদটাও দিয়ে রাখলেন পাভলিউচেঙ্কোভাকে হারানোর পর।
×