ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উত্তরাঞ্চলে এবার ৫ হাজার ২২১টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

উত্তরাঞ্চলে এবার ৫ হাজার ২২১টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ কদিন পরেই শুরু হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। কাঙ্খিত দিনটির জন্য সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।অপেক্ষার অবসান ঘটবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ১১ টা ৫৬ মিনিটে মহালয়ায় দেবী দুর্গাকে আহ্বান জানানোর মধ্যে দিয়ে। তিথি অনুযায়ী এবার দুর্গার আগমন ঘটবে ঘোড়ায় চেপে। সাধারণত মহালয়ার সাতদিন পরে শুরু হয় দুর্গাপূজা। ৫ অক্টোবর ষষ্ঠী তিথির সন্ধ্যা বোধনে দৃষ্টি খুলবেন দেবী দুর্গা। এরপর থেকে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। এই উৎসব ঘিরে উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের নীলফামারী সহ আট জেলায় সাজ সাজ রব পড়েছে। এবার এই আট জেলায় ৫ হাজার ২২১টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করতে পারে, সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । বিজয়া দশমী পর্যন্ত মন্ডপ গুলো ঘিরে থাকবে পুলিশের টহল। যেকোনও নাশকতা ঠেকাতেই সব সময় তৎপর থাকবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এ জন্য আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় থাকবে। পুলিশের পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালনে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। আজ সোমবার পুলিশের বিভাগীয় কট্রোলরুম সুত্রে জানানো হয় পূজায় নিরাপত্তার কথা ভেবে ৮ জেলার এক হাজার ৪৮৮টি মন্ডপকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং এক হাজার ২১২টি মন্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। আট জেলার ৫ হাজার ২২১টি মন্ডবের মধ্যে নীলফামারী জেলায় ৮৫৪টি,রংপুর জেলায় ৭৬৮টি, দিনাজপুর জেলায় এক হাজার ২৬২টি, গাইবান্ধা জেলায় ৬১১টি, কুড়িগ্রাম জেলায় ৫৪০টি, লালমনিরহাট জেলায় ৪৪৯টি, ঠাকুরগাঁও জেলায় ৪৫৯টি ও পঞ্চগড় জেলায় ২৭৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।ইতোমধ্যে রংপুর বিভাগের আট জেলার পুলিশ সুপার ও প্রতিটি জেলার পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি-স¤পাদককে নিয়ে বৈঠক করেছেন পুলিশের রংপুর রে্েঞ্জর ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য। সেখানে পূজা উদযাপনে জেলার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। পূজা উদযাপনে কোনও ধরনের নিরাপত্তার অভাব দেখা দিলে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা। এদিকে এই পুজো ঘিরে প্রতিমা গুলোকে আকর্ষনীয় করে তুলতে শেষ আঁচর দিচ্ছেন কারিগড় শিল্পীরা। পাশাপাশি মন্ডপের সাজ সজ্জা সহ আনুসাঙ্গিক কাজও চলছে। মন্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে নানান সাজে। নীলফামারী পৌর শহরের মিলন পল্লী ও দেবির ডাঙ্গায় সবচেয়ে বড় পুজা মন্দিরে মাটির কাঠামো নির্মানের মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন বাকী রয়েছে শুধু রং তুলির ছোঁয়া। নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া কাছাড়ী বাজার পুজা মন্ডবের মৃতশিল্পী রমানাথ রায় জানান, কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি ও মেঘলা আকাশের কারনে প্রতিমা শুকাতে পারছে না তারা। আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে এই সমস্যা কেটে যাবে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নীলফামারী জেলার সভাপতি অক্ষয় কুমার রায় জানান শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নয়, শারদীয় দুর্গোৎসব সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করবে দৃঢ় সম্প্রীতির বন্ধন, এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের সবার। তিনি বলেন পুজো, তাকে ঘিরে উন্মাদনা সবই আমাদের সমাজ-জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই পুজো যে ইতিমধ্যেই বঙ্গজীবনকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে, সে বিষয়ে কোনও দ্বিমত নেই।নীলফামারী পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সারদীয় দূর্গা উৎসবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি,র‌্যাব, আনসার ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
×