ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পরিচ্ছন্ন ঢাকা

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পরিচ্ছন্ন ঢাকা

পরিচ্ছন্ন স্মার্ট ঢাকা তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশন এক ব্যাপক অভিযান চালাতে কর্মসূচী শুরু করেছে। ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে ফুটপাথ থেকে অবৈধ স্থাপনাসহ নিয়মবহির্ভূত দোকানপাট, এমনকি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়কেও ছাড় দেয়া হবে না। এই চিরুনি অভিযানে ডিএনসিসিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সুশীল নাগরিক সমাজও এই নতুন কার্যক্রমের নজরদারিতে থাকবে। বেআইনীভাবে কাউকে কোন ধরনের ব্যবসা করার সুযোগ দেয়া হবে না। ঢাকা শহরে এমনিতে হরেকরকম বিশৃঙ্খলা এবং বিপত্তির আবর্তে নাগরিকদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলছে। তার ওপর পথচারী চলাচলের জন্য সড়কে যে ফুটপাথ এবং ছোট রাস্তা থাকে সেখানেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রকম পণ্যের পসরা সাজিয়ে বাণিজ্য করতে বসে। ছোট চায়ের স্টল থেকে শুরু করে জুতার দোকান, অতিসাধারণ প্রসাধনীর সরঞ্জাম, গেঞ্জি, লুঙ্গি, গামছাসহ দৈনন্দিন চাহিদার আরও প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দোকানদার তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে থাকে। ফলে পথচারীরা কোনভাবেই তাদের জন্য নির্ধারিত ফুটপাথটি ব্যবহার করতে পারে না। ফুটপাথ ও রাস্তা সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমন জনবান্ধব অভিযানে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে বলে নির্দেশনা উল্লেখ করা হয়। এমন নির্দেশ আর পরামর্শ এসেছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে। পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বচ্ছ, পরিচ্ছন্ন আধুনিক ঢাকা তৈরির কর্মসূচী বাস্তবায়ন করবে। প্রতিনিয়ত নজরদারির মাধ্যমে এই কার্যক্রমের যথার্থ ও স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করা হবে। সুন্দর ও আকর্ষণীয় ঢাকা গড়ার ক্ষেত্রে আরও অনেক আনুষঙ্গিক বিষয় বিবেচনায় রাখা জরুরী। কারণ ইতোমধ্যে বসবাসের অযোগ্য ঢাকাকে অপরিচ্ছন্নতার নিরিখে বিশ্বে দ্বিতীয় হিসেবে গণ্য করা হয়। শুধু অবৈধ স্থাপনা নয়, নদ-নদীর দূষণ থেকে আরম্ভ করে শিল্প-কারখানার বর্জ্য পদার্থ, ঘনবসতিপূর্ণ অস্বাস্থ্যকর বস্তি, মশা-মাছির উপদ্রবসহ বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের প্রাদুর্ভাবে জনজীবনের চরম ভোগান্তি ঢাকা শহরের নিত্যনৈমিত্তিক চিত্র। সড়ক-মহাসড়কে তীব্র যানজটে জনসাধারণের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম। দূষণের মাত্রায় শব্দ, বায়ু ও প্রাকৃতিক বিপন্ন অবস্থাও হরহামেশাই ঘটে যাচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্তৃপক্ষকে তার কার্যক্রমে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেয়াও অত্যন্ত জরুরী। আর সেখানে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সচেতনতা, দায়বদ্ধতা এবং সার্বিক সহযোগিতা প্রদান বিশেষ প্রয়োজন। কারণ, জনগণ যদি সচেতন না হয় তাহলে পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি বেগ পেতে হবে। পরিচ্ছন্ন ঢাকা শহর গড়ার লক্ষ্যে অবৈধ সব দোকানপাট উচ্ছেদ করাই শুধু নয়, মশা-মাছির প্রজননস্থলও সমূলে উৎখাত করা বাঞ্ছনীয়। তা হলেই আমরা জন ও স্বাস্থ্যবান্ধব ঢাকা শহর বিনির্মাণে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে সফল হব।
×