ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

টানা ছয় জয়ে লিভারপুলের ইতিহাস

প্রকাশিত: ১২:০৩, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

টানা ছয় জয়ে লিভারপুলের ইতিহাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপ্রতিরোধ্য লিভারপুল ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে দুর্দান্ত ছন্দে এগিয়ে চলেছে। রবিবার রাতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে চেলসিকে তাদেরই মাঠে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। লন্ডনের স্টামফোর্ড ব্রিজে অনুষ্ঠিত ম্যাচ জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে জার্গেন ক্লপের দল। এই জয়ে প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা দুই মৌসুমে প্রথম ছয় রাউন্ডেই জয়ের স্বাদ পেয়েছে লিভারপুল। গত মৌসুমেও নিজেদের প্রথম জয় ম্যাচ জিতেছিল তারা। সেবার অবশ্য মাত্র এক পয়েন্টের জন্য শিরোপা জিততে পারেনি দ্য রেডসরা। তাদের টপকে চ্যাম্পিয়ন হয় ম্যানচেস্টার সিটি। তবে এবার আগেরবারের হতাশা ভুলতে মরিয়া লাল শিবির। অনন্য কীর্তি গড়ার পথে লিভারপুল নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারিয়েছে নরউইচ সিটিকে ৪-১ গোলে। এরপর যথাক্রমে তারা হারিয়েছে সাউদাম্পটনকে ২-১, আর্সেনালকে ৩-১, বার্নলিকে ৩-০ ও নিউক্যাসল ইউনাইটেডকে ৩-১ গোলে। সর্বশেষ হারিয়েছে আরেক পরাশক্তি চেলসিকে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে প্রথম ছয় ম্যাচে লিভারপুল হারিয়েছিল ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেড, ক্রিস্টাল প্যালেস, ব্রাইটন এ্যান্ড হোভ এ্যালবিওন, লিচেস্টার সিটি, টটেনহ্যাম হটস্পার ও সাউদাম্পটনকে। গেল মৌসুমে লীগে মাত্র একটি ম্যাচ হেরেছিল লিভারপুল। শেষ দিনে গড়ানো শিরোপা লড়াইয়ে ৩০ জয় ও সাত ড্রয়ে ৯৭ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হতে হয় তাদের। এবার ছয় ম্যাচে পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট নিয়ে এখন পর্যন্ত স্পষ্টভাবে শীর্ষে লিভারপুল। সমান ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানসিটি। দারুণ জয়ে গত মৌসুমসহ প্রিমিয়ার লীগে টানা ১৫ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে লিভারপুল। ম্যাচের প্রথমার্ধেই দুটি দারুণ সেট পিস থেকে গোল আদায় করে দ্য রেডসরা। ১৪ মিনিটে মোহাম্মদ সালাহ’র ফ্রিকিক থেকে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনন্ড দুর্দান্ত কার্লিং শটে প্রথম গোল করেন। এরপর সিজার আজপিলিকুয়েটার গোলে চেলসি সমতা ফেরালেও ভিএআর প্রযুক্তিতে মেসন মাউন্টের অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করে। ম্যাচের ৩০ মিনিটে এ্যান্ডি রবার্টসনের ক্রসে রবার্টো ফিরমিনো লিভারপুলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন। দুই গোলে পিছিয়ে ম্যাচে ফিরতি মরিয়া চেলসি মাত্র এক গোল ফেরত দিতে পারে। ৭১ মিনিটে এন’গোলো কান্টে অনেকটা একক প্রচেষ্টায় গোলটি করেন। ম্যাচ শেষে লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ বলেন, আমরা মাত্র ছয় ম্যাচ খেলেছি। প্রতিটি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধ প্রস্তুত থাকতে হবে। সঠিক সময়ে আমাদের রুখে দেয়ার জন্য সবাই অপেক্ষায় আছে। কিন্তু আমরাও নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত আছি। আর চেলসি কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড বলেন, পারফর্মেন্সের দিক থেকে আমরা ভাল ছিলাম। আমাদের খেলার মধ্যে বেশি গতি ও সামর্থ্য ছিল। যে কারণে শেষ পর্যন্ত সমর্থকরা সমর্থন দিয়ে গেছে। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকায় হারতে হয়েছে। আরেক ম্যাচে লন্ডন স্টেডিয়ামে আন্দ্রি ইয়ারমোলেনকো ও এ্যারন ক্রেসওয়েলের দুটি দুর্দান্ত গোলে ওয়েস্টহ্যামের কাছে হেরেছে ম্যানইউ। এর ফলে গত পাঁচ লীগ ম্যাচে রেড ডেভিলসরা মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে। কোচ ওলে গানার সোলসজায়েরের অধীনে এ্যাওয়ে ম্যাচে এখনও জয় তুলে নিতে পারেনি ম্যানইউ। ইনজুরি আক্রান্ত পল পোগবা ও এ্যান্থনিও মার্শিয়ালের অনুপস্থিতিতে ইউনাইটেডের আক্রমণভাগ ছিল একেবারেই নিষ্প্রভ। তার উপর দ্বিতীয়ার্ধে মার্কাস রাশফোর্ড ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচ শেষে ম্যানইউ কোচ ওলে গানার বলেন, আমরা খুব একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারিনি। তবে কিছু বড় মুহূর্তের সদ্ব্যবহার করতে পারিনি। সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের ঘাটতি ছিল। লন্ডনের বিখ্যাত এমিরেটস স্টেডিয়ামে পাঁচ গোলের উত্তেজনাপূর্ণ আরেক ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয় পেয়েছে আর্সেনাল। ম্যাচের ২০ মিনিটে জন ম্যানগিনের গোলে প্রথমে এগিয়ে যায় অতিথি এ্যাস্টন ভিলা। বিরতির আগে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারণে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন আর্সেনালের ইংলিশ মিডফিল্ডার এইন্সলে মেইটল্যান্ড-নাইলস। ফলে দশজনের দলে পরিণত হয় তারা। একজন কম নিয়েও ৫৯ মিনিটে নিকোলাস পেপের পেনাল্টিতে সমতায় ফেরে আর্সেনাল। কিন্তু ওয়েসলির গোলে পরের মিনিটেই আবারও এগিয়ে যায় ভিলা। কিন্তু মাত্র চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে দুর্দান্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গানার্সরা। ৮১ মিনিটে ক্যালুম চেম্বার্স সমতা ফেরান। আর ৮৪ মিনিটে পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং ফ্রিকিকে চোখ ধাঁধানো গোল করে আর্সেনালকে দারুণ জয় উপহার দেন।
×