ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিবদের সেরা নৈপুণ্য দেখতে চান কোচ ডোমিঙ্গো

প্রকাশিত: ১২:০৪, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সাকিবদের সেরা নৈপুণ্য দেখতে চান কোচ ডোমিঙ্গো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চট্টগ্রামে শতভাগ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। এবার ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজের ফাইনালে আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরেকটি জয় তুলে আনার অপেক্ষায় স্বাগতিকরা। সেখানে ফ্ল্যাট উইকেটে খেলা হলেও মিরপুরের উইকেটে থাকবে স্পিনারদের জন্য সহায়তা। প্রতিপক্ষ আফগানরা স্পিন শক্তিতে এগিয়ে থাকলেও তা নিয়ে ভাবছেন না বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। তিনি মনে করেন নিজেদের সেরা খেলাটা দিতে পারলে বিশ্বের যেকোন দলকেই হারাতে পারে বাংলাদেশ। সেজন্য ব্যাটিংয়ের শুরুর ১৫ ওভারে ২ উইকেটের বেশি হারাতে চান না তিনি। সোমবার ফাইনালের আগের দিন উইকেটে কিছুটা ঘাসের উপস্থিতি দেখে চার পেসার নিয়ে খেলানোর চিন্তাও করছেন। তবে স্পিন শক্তিতে বাংলাদেশও ভাল হওয়ায় স্পিন-পেসের সমন্বয়েই একাদশ গড়ার পরিকল্পনা তার। এসব বিষয়ে পুরোপুরি সফল না হতে পারলে এবং শতভাগ দিতে না পারলে আফগানরা জিতে যেতে পারে বলে মনে করেন ডোমিঙ্গো। তাই ফাইনালে নিখুঁত খেলা উপহার দেবে তার শিষ্যরা এমনটাই প্রত্যাশা এ দক্ষিণ আফ্রিকান কোচের। মিরপুরের উইকেট মানেই স্পিনারদের জন্য বাড়তি সহায়তা। আর সেজন্যই চলমান সিরিজের আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম মোকাবেলায় হেরে গেছে বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ দলের স্পিনারদের বিপক্ষে দুর্বলতা নিয়ে তাই সোমবার ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কাজ করেছেন ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের উইকেটে বরাবরই স্পিন বেশি ধরে না। ঢাকার উইকেটে স্পিনারদের সহায়তা একটু বেশি থাকবে। এটি অবশ্যই আফগানিস্তানকে সুবিধা দেবে। তবে আমাদেরও সুবিধা দেবে। আমাদের দলেও ক’জন ভাল স্পিনার আছে। আমাদের মনে হচ্ছে, এখানকার উইকেটে স্পিনারদের জন্য একটু বেশি সহায়তা থাকবে। ওদের স্পিনারদের বিপক্ষে অনেক ব্যাটসম্যানই ধুঁকে থাকে। মুজিব ও রশীদ খান এখন স্পিনে অনেক বড় নাম। আমরা নেটে চেষ্টা করছি ওদের খেলার উপায় বের করতে। মানসিকতা নিয়ে, পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। এসব নিয়ে আসলে কাজ চলছে। রাতারাতি আয়ত্ত করা সম্ভব নয়।’ টি২০ ক্রিকেটে আফগানিস্তান অনেক ভাল দল তা সিরিজ শুরুর আগেই জানা ছিল। কারণ তারা র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে (৭ নম্বর) এবং টানা ১০ ম্যাচ জিতে এ সিরিজ খেলতে এসেছিল তারা। সিরিজ শুরুর পরও তারা প্রমাণ করেছে এ ফরমেটে নিজেদের শক্তি। কিন্তু নিজেদের সামর্থ্য অনুসারে সেরা খেলাটা সাকিব আল হাসানরা উপহার দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা ডোমিঙ্গোর। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান অবশ্যই ভাল দল। তবে আমরা জানি, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেললে আমরা যেকোন দলকে হারাতে পারি। সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে তাই বিস্ময়ের কিছু নেই। আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে আমাদের দক্ষতা ও মানসিকতা এক বিন্দুতে মেলাতে পারা।’ বাংলাদেশ দলের মূল চিন্তা ব্যাটিং নিয়েই। সব ম্যাচেই টপঅর্ডাররা ব্যর্থ হয়েছেন এবং বড় কোন জুটি হয়নি। শুরুর দিকেই দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল। এ বিষয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমরা এখনও নিখুঁত ক্রিকেট খেলতে পারিনি। কিছু কিছু জায়গায় আমরা ভাল ছিলাম, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গড়পড়তা। আমরা এখনও সেরা খেলাটা দেখানোর পথ খুঁজছি। যেমন, আমরা কেবল ২ উইকেট হারিয়ে শেষ ৫-৬ ওভারে যেতে পারিনি। প্রথম ১০ ওভারে আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলেছি। আমাদের চাওয়া, ২ উইকেটে হারিয়ে ১৫ ওভার শেষ করা। তাতে শেষ দিকে ঝড় তোলার ভিত গড়ে উঠবে। এটায় মনোযোগ দিতে হবে। আশা করি ফাইনালে সেটি পারব।’ শতভাগ দিয়ে খেলা কি সম্ভব হবে বাংলাদেশ দলের? টপঅর্ডারে আগের ম্যাচে সাকিব ৭০ রানের ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু বাকিরা ব্যর্থ হয়েছেন। এ বিষয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমি মনে করি না, ৬০-৭০ ভাগ দিয়ে জেতা সম্ভব। জিততে হলে অনেক ভাল খেলতে হবে। আমরা ৬০ ভাগ দিলে ও আফগানিস্তান সামর্থ্য অনুযায়ী খেললে ওরা আমাদের হারিয়ে দেবে। আমরা যদি আমাদের একাগ্রতা বাড়াতে না পারি, আফগানিস্তান অবশ্যই হারাতে পারে আমাদের, কোন সন্দেহ নেই।’ সোমবার উইকেটে কিছুটা ঘাস দেখা গেছে। তাই বাংলাদেশের একাদশে বাড়তি পেসার যোগ হতে পারে। এ বিষয়ে ডোমিঙ্গো বলেন, ‘সম্ভবত একজন বাড়তি পেসার নিয়ে আমরা ১২ জনের দল গড়ব আজ, কালকে (আজ) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে উইকেট দেখে। আজকে উইকেটে খানিকটা ঘাস আছে, বাউন্স মিলতে পারে। চার পেসার তাই ভাল বিকল্প হতে পারে। তবে কালকে উইকেট কন্ডিশন দেখে সিদ্ধান্ত হবে। আমাদের ভাবনায় সবসময় থাকে আমরা বিশ্বকাপ কোথায় খেলব। অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ খেলব আমরা, সেখানে ১-২ জন পেসার খেলানোর সম্ভাবনা দেখি না। অন্তত তিনজন তো বটেই, চার পেসারও খেলানো হতে পারে সেখানে। এখন জেতাটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই, পাশাপাশি ভবিষ্যতের পথচলা নিয়েও ভাবতে হবে আমাদের। খুব সুক্ষ্মভাবে সমন্বয় করতে হবে এটি। দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে আমি সবসময়ই ৪ পেসার খেলাতে পছন্দ করি। তবে আমি এখানকার সংস্কৃতি বুঝি। এই দলের শক্তি যে স্পিনে, সেটি জানি। কোচ হিসেবে তাই দুটির সমন্বয়ের চেষ্টা করছি।’
×