ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

উপসাগরে মার্কিন বিরোধী জোট গড়ার উদ্যোগ

সংঘাত এড়াতে চায় ইরান

প্রকাশিত: ১২:১৩, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সংঘাত এড়াতে চায় ইরান

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে চায় ইরান। এই উদ্দেশে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কর্ম পরিকল্পনাটি তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জরিফ। রবিবার নিউইয়র্কের জাতিসংঘ ভবনে সাংবাদিকদের একটি গ্রুপের সঙ্গে আলাপকালে জরিফ বলেন, হরমুজ পিস এন্ডেভার নামে একটি শান্তি উদ্যোগ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য উপসাগরে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। বিবিসি ও নিউজউইক। জরিফ বলেন, তাদের পরিকল্পনাটির মূল লক্ষ্য উপসাগরে নৌ চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যে কোন ধরনের আগ্রাসী তৎপরতা রুখে দেয়া। এই লক্ষ্যে ইরান সেখানে একটি কোয়ালিশন গঠন করতে চায়। জরিফ বলেন, বিদেশী বাহিনী দিয়ে পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। আবার তাদের এই মুহূর্তে বিদায় করে দেয়াও তেহরানের লক্ষ্য নয়। ইরাকসহ ছয়টি উপসাগরীয় দেশকে এই জোটে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তিনি উল্লেখ করেন। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয়টি দেশের হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে উপসাগরে পরিস্থিতি ক্রমাম্বয়ে জটিল হয়েছে। রবিবার এর আগে রুহানির দফতর থেকে জানানো হয়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সম্মেলনের পার্শ্ব আয়োজনে রুহানির সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর সঙ্গে রুহানির বৈঠক হবে। এদিকে রুহানি সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা মোতায়েনের ঘোষণার পর বিদেশী শক্তিগুলো উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর বার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে একথা বলেন। ১৯৮০ থেকে ’৮৮ সাল পর্যন্ত চলেছিল ওই যুদ্ধ। রুহানি পশ্চিমা দেশগুলোকে উপসাগর থেকে দূরে থাকতে বলেন। তিনি বলেন, বিদেশী সেনারা সবসময়ই ‘যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ’ বয়ে এনেছে। উপসাগরীয় অঞ্চলকে তাদের ‘অস্ত্র প্রতিযোগিতায়’ ব্যবহৃত হতে দেয়া উচিত হবে না। গত সপ্তাহে সৌদি আরবের দুটি তেল শোধনাগারে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে। ওয়াশিংটন ও রিয়াদ ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করলেও তেহরান শুরু থেকেই তা অস্বীকার করে আসছে। ইরানের অভিজাত রেভলুশনারি গার্ড বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, যেই হামলা চালাবে তাদের ধ্বংস করে দেয়া হবে। তবে রুহানি পাল্টা হামলার হুমকি দিয়ে নয় বরং শান্তির আমন্ত্রণ জানিয়ে উত্তেজনা প্রশমন করতে চাইছেন। তিনি জানান, ইরান জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এ বছরের অধিবেশনেই উপসাগরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি নতুন উদ্যোগের প্রস্তাব দেবে। টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে রুহানি বলেন, বিদেশী শক্তিগুলো আমাদের এ অঞ্চল এবং এর জনগণের জন্য নিরাপত্তাহীনতা ও সমস্যার কারণ হতে পারে। অতীতে বিদেশী সেনা মোতায়েনের ঘটনা উপসাগরে ‘বিপর্যয়’ ডেকে এনেছিল। তাই আমি তাদেরকে দূরে থাকতে বলেছি। তারা যদি আন্তরিক হয়, তাহলে তাদের উচিত হবে না আমাদের অঞ্চলকে অস্ত্র প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র বানানো। তিনি বলেন, আমাদের দেশ ও এ অঞ্চল থেকে আপনারা (বিদেশী শক্তি) যত দূরে থাকবেন, এখানে তত বেশি নিরাপত্তা বজায় থাকবে। তেহরান প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার করতে চায় বলেও ভাষণে উল্লেখ করেন রুহানি।
×