ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পেঁয়াজের কেজি এখন ৭০-৮০ টাকা

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ১০ অক্টোবর ২০১৯

পেঁয়াজের কেজি এখন ৭০-৮০ টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারতের রফতানি বন্ধের ঘোষণায় বেশ কিছুদিন বাজারে লাফিয়ে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। তবে দুয়েকদিন ধরে পাইকারি বাজারে পাশাপাশি খুচরা বাজারেও পণ্যটির দাম কমতে শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। শান্তিনগর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দেশী পেঁয়াজ ৮০ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশী পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম কমার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমরা খুচরা বিক্রেতা। যেমন কিনি তেমন বিক্রি করি। পাইকারি বাজার থেকে আজ কেজিপ্রতি দেশী পেঁয়াজ ৭৩ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬২ টাকা দরে কিনেছি। ফলে দেশী পেঁয়াজ ৮০ আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কেমন জানতে চাইলে শান্তিনগর বাজারের ক্রেতা আরেফিন হুসাইন বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা করে কমেছে। দুদিন আগেও ১০০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনেছি। আজ ৮০ টাকা কিনলাম।’ এদিকে মালিবাগ ও রামপুরা বাজার ঘুরেও দেখা গেছে একই চিত্র। রামপুরা কাঁচাবাজারে কথা হয় পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা কাদের আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা গতকাল থেকে কেজিপ্রতি দেশী পেঁয়াজ ৮০ আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এর আগে আমাদের বেশি দামে পেঁয়াজ কেনা ছিল তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়েছে।’ পেঁয়াজের দাম নিয়ে রামপুরা-বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা নাসরিন হুমায়রা বলেন, ‘দাম কমেছে। তবে আমরা তো ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। সরকার যখন নজর দেয় তখন দাম কমে। আবার যখন সরকারের নজর থাকে না তখন দাম বাড়ে।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে ২৩ দশমিক ৩০ লাখ টন। আর পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে ১০ দশমিক ৯২ লাখ টন। ফলে বাংলাদেশে পেঁয়াজের জোগান রয়েছে ৩৪ দশমিক ২২ লাখ টন। অন্যদিকে দেশে বাৎসরিক পেঁয়াজের চাহিদা ২৪ লাখ টন। ফলে দেশেই বাড়তি সরবরাহ রয়েছে প্রায় ১০ দশমিক ২২ লাখ টন। উল্লেখ্য, ভারতে বন্যার কারণে কয়েকটি রাজ্যে উৎপাদন কম হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় দেশটি। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দেয়। এদিকে রাজধানীর কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা যায়, এ সময়ে মান ভেদে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০-২৫ টাকা। ভারত, মিয়ানমার, মিসর ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৪ টাকা দরে। অবশ্য, উৎপাদনের পাশাপাশি জোগানও কম থাকায় কমেনি দেশি পেঁয়াজের দাম। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৭ টাকায়। এদিকে বিক্রেতাদের দাবি, বিদেশী পেঁয়াজের দাম পড়ে যাওয়াতেই মানুষ কিনছে না দেশীটা। ফলে গুনতে হচ্ছে লোকসান। তবে আমদানি আরও বাড়লেও পেঁয়াজের দাম আর কমার সম্ভাবনা নেই বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের। বলেন, মৌসুম শুরু হলে কমতে পারে দাম। পুরোপুরি দাম হাতের নাগালে আসতে এ মাস পেরিয়ে যেতে পারে বলে মত ব্যবসায়ীদের।
×