ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবলকে বিদায় বললেন জার্মান তারকা বাস্তিয়ান

প্রকাশিত: ১২:০৭, ১০ অক্টোবর ২০১৯

ফুটবলকে বিদায় বললেন জার্মান তারকা বাস্তিয়ান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দল থেকে আরও আগেই অবসর নিয়েছিলেন বাস্তিয়ান শোয়েইনস্টেইগার। এবার ক্লাব ফুটবল থেকেও অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক জার্মানির এই তারকা। মঙ্গলবার সবধরনের ফুটবল থেকে নিজের অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন ৩৫ বছর বয়সী শোয়েইনস্টেইগার। তবে চলতি মৌসুম শেষেই ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোন কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির বিশ্বকাপ জয়ী এই তারকা মিডফিল্ডারের। অবসর প্রসঙ্গে সাবেক বেয়ার্ন মিউনিখ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা ফুটবলার বলেন, ‘সময় হয়েছে। চলতি মৌসুমের শেষেই আমার পেশাদার ক্যারিয়ারের ইতি টানবো। আমি বেয়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, শিকাগো ফায়ার এবং জার্মান জাতীয় দলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তোমাদের জন্যই অবিশ্বাস্য সময় কেটেছে আমার।’ জার্মানির এই কিংবদন্তির অবসর ঘোষণার পর সবার আগে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে তার সাবেক ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখ। জার্মান বুন্দেসলিগার চ্যাম্পিয়নরা শোয়েইনস্টেইগারকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছে, ‘সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ, বাস্তি (শোয়েইনস্টেইগার)।’ নিজের দেশ জার্মানিতেই অবিস্মরণীয় সময় কেটেছে বাস্তিয়ান শোয়েইনস্টেইগারের। ২০০১ সালে বেয়ার্ন মিউনিখের বয়সভিত্তিক দলে অভিষেক ঘটেছিল তার। এর পরের গল্পটা তো শুধুই এগিয়ে যাওয়ার। জাতীয় দলের পাশাপাশি স্বদেশী ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখ এমনকি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও তার ঝলক দেখা গেছে। জাতীয় দলের জার্সিতে তার পারফর্মেন্স ছিল মুগ্ধ-বিমোহিত করার মতোই। ২০০৫ সালে ফিফা কনফেডারেশন কাপ এবং ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান ছিল তার। ২০০৬ ও ২০১০ সালের বিশ্বকাপে তৃতীয় সেরা দল হয় জার্মানি। তাতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন শোয়েইনস্টেইগার। মিরাসøাভ ক্লোসা, ফিলিপ লামদের নিয়ে জার্মানিকে অপ্রতিরোধ্য এক দলে পরিণত করেছিলেন শোয়েইনি। জাতীয় দলের হয়ে জার্সিটা শেষবার গায়ে জড়িয়ে ছিলেন তিন বছর আগে। তারপর রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন না বুঝে ডাই ম্যানশেফটদের হয়ে বিদায় বলে দিয়েছিলেন আগেই। জার্মানির হয়ে ১২১ ম্যাচে করেছিলেন ২৪ গোল। জাতীয় দলকে বিদায় বলে দিলেও ক্লাব ফুটবলে নিজের খেলাটা চালিয়ে যাচ্ছিলেন শোয়েইনস্টেইগার। কিন্তু এবার ইতি টানলেন ক্লাব ক্যারিয়ারেরও। নতুন মৌসুম শুরু হতে না হতেই সবধরনের ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন তিনি। জাতীয় দলের মতো ক্লাব জার্সিতেও দারুণ রঙ্গিন শোয়েইনস্টেইগারের ক্যারিয়ার। ১৩ বছর খেলেছেন জার্মান জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে। বাভারিয়ানদের জেতান ৮টি বুন্দেসলিগা ও ১টি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা। তারপর ২ বছরের জন্য ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলেন তিনি। তবে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সবচেয়ে সফল ক্লাবটিতে। যে কারণে ২০১৭ সালেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে দেন তিনি। তারপরও হাল ছাড়েননি শোয়েইনস্টেইগার। নতুন করে ঠিকানা গড়েন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব শিকাগো ফায়ারে। সেখানে দুই বছর খেললেও ৩৫ বছর বয়সে যুতসই পারফর্মেন্স করতে পারছিলেন না। যে কারণেই চলতি মৌসুম শেষে আর কখনও ফুটবল পায়ে মাঠে দেখা যাবে না জার্মান মিডফিল্ডারকে। বিদায়বেলায় ক্লাব ও সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি শোয়েইনস্টেইগার ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার স্ত্রী আনা ইভানোভিচকেও। শোয়েইনস্টেইগার যেমন ফুটবলে তেমনি টেনিস জগতের আলোচিত নাম ইভানোভিচ। ২০১৬ সালেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। শোয়েইনস্টেইগার ও ইভানোভিচ ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের পর পরস্পরের সান্নিধ্যে আসেন। দীর্ঘদিনের সেই প্রেমটাকে বিয়েতে পরিণত করেন তারা। বিয়ের পর জার্মান তারকা ফুটবলটাকে চালিয়ে গেলেও সার্বিয়ান তারকা ইভানোভিচ টেনিসকে বিদায় বলে দেন। মনিকা সেলেসকে দেখে ৫ বছরেই র‌্যাকেট হাতে তুলে নেয়া সার্বিয়ার এই টেনিস সুন্দরী ২০০৮ সালে ফরাসী ওপেন জেতেন। ওই বছরই বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা হন। ক্যারিয়ারের শেষের দিকে চোটের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে ইভানোভিচকে। ভুগছিলেন ফর্মহীনতায়ও। যে কারণেই শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টেনিস থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
×