ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করার দাবি সেলিমের

প্রকাশিত: ১২:১৭, ১০ অক্টোবর ২০১৯

বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করার দাবি সেলিমের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের একাধিপত্য, দখলদারিত্ব ও সন্ত্রাসের কারণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ প্রাণ হারিয়েছে মন্তব্য করে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, এর পুনরাবৃত্তি রোধে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি উন্মুক্ত করতে হবে। বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এই চুক্তিকে জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি উল্লেখ করে জোট নেতারা বলছেন, জাতীয় স্বার্থবিরোধী অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে। চুক্তি বাতিলের দাবিতে আগামী ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে জোটের পক্ষ থেকে। ডাকসুর সাবেক ভিপি সেলিম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন একতরফা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সরকারী দলের ছাত্র সংগঠন। বুয়েটের ঘটনা তারই নমুনা। সত্য কথা হলো বুয়েটে কোন ছাত্র রাজনীতি নাই। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। এই নিষিদ্ধ থাকার কারণেই আবরার হত্যা হয়েছে। এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সেখানে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্টকে কাজ করতে দেয়া হয়? ছাত্র ফেডারেশনকে কী কাজ করতে দেয়া হয়? এগুলো হলো আদর্শ ছাত্র সংগঠন। তারা যে কাজটা করে তা ছাত্র রাজনীতি। আর ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল... যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তারাও (ছাত্রদল) দখলদারিত্ব করেছে। তারা যে কর্মকা- চালায় তা ছাত্র রাজনীতি না। তা কায়েমী স্বার্থবাদীদের দখলদারিত্ব ও লুটপাট। আবরার হত্যার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে ‘সন্ত্রাসী ক্ষমতাকেন্দ্রীক রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করে ‘ছাত্র রাজনীতিকে উন্মুক্ত করতে হবে’ হবে বলে মত দেন সেলিম। বাংলাদেশের স্বার্থ ঝুলন্ত রেখে ভারতের স্বার্থে চুক্তি ॥ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্য সম্পাদিত চুক্তির প্রেক্ষিতে বাম জোটের এ সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি সভাপতি বলেন, ভারতের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ইস্যুতে চুক্তি সম্পাদন হলেও বাংলাদেশের স্বার্থগুলো পেন্ডিং রাখা হয়েছে। এতে করে বন্ধুত্ব রক্ষা করা যাবে না। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের দাবি দাওয়া সম্পর্কে বলা হচ্ছে, হবে সুবিবেচনার সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাঙালকে আর হাইকোর্ট দেখাবেন না। এই এক তরফা সুবিধা নেয়ার নীতি অনুসরণ করে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কোন দিনই বন্ধুত্ব রক্ষা করা সম্ভব না। সমস্ত বাংলাদেশের জনগণ এখন ভারতকে বৈরী শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে। সেলিম বলেন, যে চুক্তি করে এসেছে তা বাংলাদেশের সর্বনাশ হবে। ভারত-বাংলাদেশের জনগণের ভেতরের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার পায়ে কুঠারাঘাত করা হয়েছে। এই সুযোগে সাম্প্রদায়িক শক্তি জেগে উঠবে। ভারতে তো সাম্প্রদায়িক শক্তি জেঁকে বসেছে এখন বাংলাদেশেও ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এসব করা হচ্ছে কী জন্য? একটা প্রহসনমূলক তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠ হয়েছে সেটাকে টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে। সংবাদ সম্মেলনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আবদুস সাত্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরে সম্পাদিত চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও ঘোষণা একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জাতি হিসেবে অপমানজনক এবং এটা বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহির্প্রকাশ। অন্যদের মধ্যে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুশরেফা মিশু এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
×