ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে বিনা খরচেই মিলছে প্রতিকার

১১৮ গ্রাম আদালতে বিচার পাচ্ছে মানুষ

প্রকাশিত: ১৩:০৪, ১০ অক্টোবর ২০১৯

১১৮ গ্রাম আদালতে বিচার পাচ্ছে মানুষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ৯ অক্টোবর ॥ গ্রামের মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি সহজ করতে দেশব্যাপী গ্রামআদালত চালু হওয়ার পর এর সুফল পাচ্ছে টাঙ্গাইলের গ্রামাঞ্চলের বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ। বিচারকার্য পরিচালনায় আইনজীবী না লাগায় বিনা খরচেই মিলছে প্রতিকার। আর দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি ও অল্প সময়ে বিচার শেষ হওয়ায় খুশি বাদী-বিবাদী দু’পক্ষই। জানা যায়, জেলার ১১৮ ইউনিয়নের সবকটিতেই চালু আছে গ্রাম আদালত। এর ফলে ইউনিয়নগুলোর গ্রামের মানুষরা তাদের ছোট-ছোট যে কোন বিরোধ নিষ্পত্তি করতে দারস্থ হচ্ছেন গ্রামআদালতের। আর বিচার প্রার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দু’পক্ষের পছন্দের মেম্বারদের নিয়ে গঠন করা হয় বিচারক প্যানেল। সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান সভাপতি হিসেবে থাকেন। তারা অভিযোগের ওপর আলোচনা করে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন। নিজ ইউনিয়নে বিচার হওয়ায় যাতায়াতের খরচও হচ্ছে না। ফলে বিচার চাইতে আসা বাদী ও অভিযুক্ত দু’পক্ষই খুশি। গ্রাম আদালতে বিচার হওয়ায় সময়ও কম লাগছে। সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের পাঁচকাহনিয়া গ্রামের আনিছুর রহমান বলেন, ৭ মাসে আগে আমার প্রতিবেশী জামাল হোসেনের সঙ্গে ৮০ হাজার টাকা লেনদেনের বিষয় নিয়ে এক বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে গত সপ্তাহে গ্রাম আদালতে অভিযোগ দেয়ার পর আমার সমস্যার সমাধান হয়েছে। বিষয়টি সমাধান করতে কোন প্রকার টাকা ও আইনজীবী লাগেনি। বিবাদী জামাল হোসেন বলেন, আনিছুর রহমানের সঙ্গে যে বিরোধ ছিল তা গ্রামআদালতের মাধ্যমে সমাধান করতে পেরে আমি খুব খুশি। আধুনিক যুগেও গ্রাম আদালত ধরে রাখায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বাউশা গ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, মোজাফফরের সঙ্গে আমার জমি সংক্রান্ত একটি বিরোধ ছিল। গ্রামআদালতে অভিযোগের পর তা সমাধান হয়েছে। আমি খুব খুশি। বিচার দেখতে আসা মামুনুর রহমান বলেন, কোন প্রকার খরচ ছাড়া বিচার পাওয়া যায়। এতে করে মানুষ হয়রানি থেকে মুক্ত থাকে। সেইসঙ্গে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তিও নিশ্চিত হয়। সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আরিফুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সভাপতি করে ৫ সদস্যদের একটি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে গ্রাম আদালত পরিচালনা করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাদীপক্ষের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যসহ গ্রামের এক মাতব্বর ও বিবাদী পক্ষের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যসহ গ্রামের এক মাতব্বর নিয়ে গ্রাম আদালত পরিচালনা করা হয়। তিনি আরও বলেন, প্রথমে বাদী চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে পরবর্তীতে নোটিসের মাধ্যমে নির্ধারিত তারিখে বাদী ও বিবাদী হাজির করে সমাধান দেয়া হয়। এখানে বাদী ও বিবাদী পক্ষের কোন প্রকার টাকা লাগে না। পাশাপাশি কোন প্রকার আইনজীবীও লাগে না। আমরা খুব সহজভাবে গ্রাম আদালতে বসে গ্রামের মানুষের সমস্যার সমাধান করতে পারি।
×