ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আগামী ১৪ অক্টোবর বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা, আন্দোলন শিথিল

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ১২ অক্টোবর ২০১৯

আগামী ১৪ অক্টোবর বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা, আন্দোলন শিথিল

অনলাইন রিপোর্টার ॥ আগামী ১৪ অক্টোবর বুয়েটে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কথা চিন্তা করে আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর বুয়েটের আন্দোলন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ভর্তি পরীক্ষার পর আবারও তারা সমবেত হয়ে আন্দোলনে নামবেন তারা। শনিবার দুপুরে বুয়েট ক্যাম্পাস ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আন্দোলনকারীরা আলোচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের এক প্রতিনিধি সাংবাদিকদের বলেন, “১৩ ও ১৪ তারিখ ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে আন্দোলন শিথিল করছি। ভর্তিচ্ছু ১২ হাজার পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের এই সময় সর্বোচ্চ সহায়তা দেব।” আন্দোলনকারীরা ১৪ অক্টোবর বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছে। আগের দিন বৈঠকে উপাচার্য সাইফুল ইসলাম অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের ওই প্রতিনিধি বলেন, “আমরা আন্দোলন তুলে নিচ্ছি না, শিথিল করছি।”শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি মেনে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে ধন্যবাদও জানান তিনি। ওই শিক্ষার্থী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী, বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই। বিচার ঠিকঠাক চলছে। আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রয়েছে। “আমাদের দাবির বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে দেখে স্যারদের উপর আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। আমাদের বিশ্বাস ভেঙে দেবেন না।” প্রসঙ্গত, আবরার ফাহাদকে ৬ অক্টোবর রাতে শেরে বাংলা হলের নিজ কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত তিনটার দিকে হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ৭ অক্টোবর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।’ নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। এ হত্যার ঘটনায় আবরারের বাবা বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিসহ ১০ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন। বুধবার (৮ অক্টোবর) শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেন এবং দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট থেকে দলীয় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাইফুল ইসলাম। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক সভায় তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত ছাড়াই রাত আটটায় শেষ হয়। বৈঠকে প্রশাসন দলীয় ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা ও ১৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কারের আশ্বাস দেয় শিক্ষার্থীদের। তবে এর ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, হলগুলোতে এখনও দলীয় নেতাকর্মী রয়েছে। ১৯ জন সাময়িক বহিষ্কার হলেও তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়নি। এছাড়া সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা হলেও আবারও যে শুরু হবে না তার নিশ্চয়তা তারা পাচ্ছেন না। এ কারণে আগামী ১৪ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, ক্যাম্পাস এখনও অনিরাপদ। তাই ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নতুনদের বিপদের মুখে ফেলতে চান না তারা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চায় পরীক্ষা নিতে।
×