ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘লেডি লিবার্টির’ মূর্তি বসালো হংকংয়ের আন্দোলনকারীরা

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

‘লেডি লিবার্টির’ মূর্তি বসালো হংকংয়ের আন্দোলনকারীরা

অনলাইন ডেস্ক ॥ সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের উদ্দীপ্ত করতে হংকংয়ের আন্দোলনকারীরা শহরটির লায়ন রক পাহাড়ের চূড়ায় বিশাল এক নারী মূর্তি স্থাপন করেছে। গ্যাস মুখোশ, হেলমেট এবং চোখরক্ষায় ব্যবহৃত চশমা পরা নয় ফুট লম্বা মূর্তিটিকে আন্দোলনকারীরা ‘লেডি লিবার্টি’ নামে ডাকছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মূর্তিটির হাতে একটি কালো ব্যানারে লেখা রয়েছে ‘আমাদের সময়ের বিপ্লব, হংকংকে স্বাধীন করা’, যা পাহাড়ের নিচ থেকেও দেখা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শনিবার গভীর রাতে কয়েক ডজন গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারী বজ্রঝড়ের মধ্যেই পাহাড়ের এক হাজার ৫০০ ফুট উঁচু চূড়ায় মূর্তিটিকে নিয়ে যান। এসময় আন্দোলনকারীদের অনেকের মাথায় হেডল্যাম্প ছিল। চীনের ভূখণ্ডভুক্ত এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হংকংয়ে পরিকল্পিত বিক্ষোভ কর্মসূচির আগেই তারা মূর্তিটির স্থাপন সম্পন্ন করে। পুলিশের ছোড়া প্রজেক্টাইলে চোখে আঘাত পাওয়া আহত এক নারী বিক্ষোভকারীর আদলে বানানো এ ‘লেডি লিবার্টি’ হংকংয়ের বাসিন্দাদের লড়াইয়ের প্রেরণা যোগাবে বলে বিশ্বাস এক আন্দোলনকারীর। “আমরা লোকজনকে বলছি, আপনারা হাল ছাড়বেন না। হংকংয়ের জনগণের প্রতিরোধ এবং লক্ষ্যে পৌঁছাতে কঠোর পরিশ্রমই সব সমস্যার সমাধান করতে পারে,” বলেছেন তিনি। চীনশাসিত শহরটিতে বেইজিংয়ের কঠোর নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের টানা চার মাসের সহিংস আন্দোলন ও বিক্ষোভ হংকংকে পর্যদুস্ত করে রেখেছে। বিক্ষোভ-সহিংসতায় পর্যটন ও ব্যবসা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এক দশকের মধ্যে এবারই প্রথম হংকংয়ের অর্থনীতি মন্দায় পড়েছে। জুন থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভে পুলিশ এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৩০০রও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর থেকে আটক করাদের প্রায় ৪০ শতাংশেরই বয়স ১৮-র কম বলে জানিয়েছে রয়টার্স; ১০ শতাংশের বয়স ১৫-রও নিচে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ আনলেও পুলিশ তা অস্বীকার করছে। বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত দুই বিক্ষোভকারীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার কাউলুন টং মেট্রো স্টেশনে পেট্রোল বোমা ছোড়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছে হংকংয়ের সরকার। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলেও জানিয়েছে তারা। কাউলুনের সরকারি দপ্তরেও আগুন দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ লোককে পরিবহন করা হংকংয়ের ম্যাস ট্রানজিট রেলওয়ে (এমটিআর) রোববার তাদের যান চলাচল আগেভাগে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে। এয়ারপোর্ট এক্সপ্রেস বিমানবন্দর থেকে সেন্ট্রাল হংকংয়ের মধ্যে কোথাও থামবে না বলেও জানিয়েছে তারা। আন্দোলনকারীদের চলাচলে বাধা দিতে সরকারের নির্দেশনায় এমটিআর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন স্টেশন বন্ধ রাখছে এই সন্দেহে বিক্ষোভকারীরা এরই মধ্যে অনেকগুলো মেট্রো স্টেশনে আগুন দিয়েছে ও টিকেট মেশিন ভাংচুর করেছে। সহিংসতার আশঙ্কায় এমটিআর গত সপ্তাহে তাদের যানগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিল।
×