ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেয়ারবাজারে বড় দরপতন অব্যাহত দোষারোপে ব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ১৪ অক্টোবর ২০১৯

শেয়ারবাজারে বড় দরপতন অব্যাহত  দোষারোপে ব্যস্ত সংশ্লিষ্টরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বড় দরপতন অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা ছয় কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকল শেয়ারবাজার। তবে এই টানা পতনের পরও প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঢাকা স্টক একচেঞ্জের কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। এমনকি প্রভাবশালী ব্রোকারেজ হাউসগুলোর পক্ষ থেকেও কোন সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। ডিএসইর পক্ষ থেকে তারল্য সংকট, মন্দ আইপিও অনুমোদনের অজুহাত দিয়ে নিজেদের পক্ষে সাফাই গাওয়া হচ্ছে। এদিকে স্টক একচেঞেঞ্জর এমন ব্যর্থতা নিয়ে একাধিকবার সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এমনকি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে নতুন স্টক একচেঞ্জর চালুর কথাও বিএসইসির এক কমিশনার বারবার উল্লেখ করেছেন। ডিএসইর সদস্যরাও যেন চাইছে শেয়ারবাজার আরও পতন হউক, যেন এইটা প্রতীয়মান হোক যে একটি স্টক একচেঞ্জই চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সেখানে নতুন স্টক একচেঞ্জ চালুর উদ্যোগ হবে বুমেরাং ছাড়া আর কিছু না। সবাই বিনিয়োগকারীদের ভাগ্য নিয়ে যেন ইদুর-বিড়াল খেলায় মত্ত রয়েছে। ব্রোকারেজ হাউসগুলো ঘুঁরে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন ঘটছে। কিন্তু ডিএসই ও বিএসইসি কার্যত কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। দুই মাস ধরে এমডি শূণ্য ডিএসই। এখন পর্যন্ত এমডি নিয়োগ দেওয়া যায়নি। ভারপ্রাপ্ত এমডি দিয়ে চলছে কাজকর্ম। সিআরও বেশিরভাগ সময়ই দেশের বাইরে যাতায়াত করেন। এছাড়া উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নানা ইস্যুতে বিদেশ ভ্রমণ লেগেই আছে। শেয়ারবাজার নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। সবাই বাজারের এই পরিস্থিতির জন্য তারল্য সংকট স্বত্ত্বেও শেয়ারেরর যোগান বাড়ানোকে দায়ী করছেন। কিন্তু ডিএসই নিজের দায়িত্বের কথা বেমালুম ভুলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটলে বিনিয়োগকারীদের ভাগ্যের শিকে ছিড়বে না। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে শেয়ারবাজারের মূল্য সূচকের ধারাবাহিক পতনের সঙ্গে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে তারল্য সংকট। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় এদিনও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ দুইশ কোটি টাকার ঘরেই রয়েছে। এদিন ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫০ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭১১ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ১৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। মূল্য সূচক ধসে পড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৮০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩১টির। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৯৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ বাজারটিতে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন বেড়েছে। লেনদেন খরার বাজারে গত কয়েক কার্যদিবসের মতো টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল টিউবের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ১৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওয়াটা কেমিক্যাল। এছাড়া লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে - বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, সামিট পাওয়ার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, জেএমআই সিরিঞ্জ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, মুন্নু জুট স্টাফলার্স এবং এটলার্স বাংলাদেশ।
×