ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বে প্রতি তিন শিশুর একটি শীর্ণ কিংবা স্থূলকায়

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ১৬ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্বে প্রতি তিন শিশুর একটি শীর্ণ কিংবা স্থূলকায়

বিশ্বের পাঁচবছরের কম বয়সী তিনজনের মধ্যে একজন শিশু অপুষ্টির শিকার অথবা স্থূলকায়। এ সংখ্যা ৭০ কোটির কাছাকাছি। এই ধরনের শিশুরা জীবনভর নানা ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতায় ভোগে। মঙ্গলবার প্রকাশিত বিশ্ব শিশু তহবিল ইউনিসেফের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বিশ্বের নানা প্রান্তের শিশুদের শৈশবকালীন পুষ্টিহীনতার বিষয়টি মূল্যায়ন করা হয়। খবর এএফপির। ইউনিসেফের প্রধান নির্বাহী হেনরিয়েটা ফোর বলেন, কোন শিশু পর্যাপ্ত খাবার না পেলে তাদের জীবনমানটাও পড়ে যায়। এসব শিশুকে আজীবন এই সমস্যার ধকল সহ্য করতে হয়। ১৯৯৯ সালের পর প্রথমবারের মতো ইউনিসেফ শিশুদের ওপর এই ধরনের বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করল। হেনরিয়েটা ফোর বলেন, বাল্যকাল থেকেই আমরা স্বাস্থ্যকর খাবার পাচ্ছি না। এর প্রভাব আমাদের জীবনের ওপর পড়ছে। এসব সমস্যা বিশ্বের গরিব অথবা মধ্যআয়ের দেশগুলোতে প্রকট বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বের গরিব দেশগুলোর শিশু স্বাস্থ্যের অবস্থা ৪০ শতাংশ বাড়লেও এখনও প্রায় ১৫ কোটি শিশু অথবা তরুণের উচ্চতা বয়সের তুলনায় কম। এসব শিশুর মস্তিষ্ক অথবা শারীরিক বিকাশও তেমন হয়নি। অপরদিকে বিশ্বের পাঁচ কোটি শিশু এখনও আবর্জনাজনিত সংক্রমণের শিকার। অথবা অতি দরিদ্রতার কারণে অনেক শিশু জন্মগতভাবেই রোগাপাতলা হয়ে জন্মায়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় অর্ধেক শিশু প্রয়োজনীয় ভিটামিন অথবা খনিজ পায় না। এতে তাদের শরীরের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার বাসা বাঁধে। ইউনিসেফ একে ‘অদৃশ্য ক্ষুধা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এদিকে গত তিন দশকে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিশুদের রোগা পাতলার পরিবর্তে এদের মুটিয়ে যাওয়ার হার বেড়েছে। ইউনিসেফের পুষ্টি বিষয়ক প্রকল্পের প্রধান ভিক্টর আগুয়াও বলেন, এসব শিশুর মধ্যে কার্যত তিনটি সমস্যা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে, তারা অপুষ্টি, খুবই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান অথবা স্থূলতার সমস্যায় ভুগছে। এই সমস্যা একটি দেশের কোন কোন নির্দিষ্ট এলাকার প্রতিবেশী অথবা একই পরিবারের মানুষের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, গবেষণায় ফুটে উঠেছে যে একজন অরিক্তিক ওজন অথবা স্থূলকায় মায়ের গর্ভের সন্তান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কম উচ্চতা নিয়ে জন্মায়। আবার এসব মায়ের সন্তান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায়। ভিক্টর আগুয়াও বলেন, বর্তমানে বিশ্বের সব বয়সের ৮০ কোটি মানুষ অতিমাত্রায় খাদ্য সমস্যায় ভুগছে। অপরদিকে দুই শ’ কোটি মানুষ অতিমাত্রায় ভুল খাদ্য গ্রহণ করছে ফলে তাদের মধ্যে স্থূলতা, হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিস সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আবার জন্মের এক হাজার দিন সঠিক খাবার না পাওয়ায় শিশুদের সঠিক স্বাস্থ্য ও মানসিক বিকাশ হচ্ছে না। এ জন্য শিশুর জন্মের প্রথম ছয়মাস সঠিকভাবে বুকের দুধ পান করানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
×