ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধার পাঁচ রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৬ অক্টোবর ২০১৯

গাইবান্ধার পাঁচ রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড

বিকাশ দত্ত ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় গাইবান্ধায় অপহরণ, লুটপাট, হত্যা, গণহত্যা, ও দেশত্যাগে বাধ্য করার অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা আব্দুল জব্বার ম-ল ও ছেলে মোঃ আছিজার রহমানসহ ৫ রাজাকারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মুত্যুদ- প্রদান করেছে ট্রাইব্যুনাল। ১৭৬ পৃষ্ঠার রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছে, আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা চার অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগেই আসামিদের দেয়া হয়েছে মৃত্যুদ-। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ রায় প্রদান করেছেন। এটি ট্রাইব্যুনালের ৪০তম রায়। রায় ঘোষণার পর প্রসিকিউশন পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে আসামি পক্ষ বলেছে আমরা এ রায়ে ক্ষুব্ধ। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। আপীল করব। প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও আসামি পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ আবুল হাসান। মুত্যুদ- পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন- মোঃ রঞ্জু মিয়া, আবদুল জব্বার ম-ল, তার ছেলে মোঃ জাছিজার রহমান খোকা, মোঃ আবদুল ওয়াহেদ ম-ল ও মোঃ মনতাজ আলী বেপারি ওরফে মমতাজ। তাদের মধ্যে কেবল রঞ্জু মিয়া রায়ের সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন, বাকিরা মামলার শুরু থেকেই পলাতক। এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তাদের অপরাধ বিবেচেনা করে আদালত মৃত্যুদ-ের রায় দিয়েছে। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। অন্যদিকে আসামি রঞ্জু মিয়ার আইনজীবী মোহাম্মদ আবুল হাসান বলেন, আমরা সংক্ষুব্ধ। কারণ আমার যিনি মক্কেল, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ১৪ বছর। শান্তি বাহিনী গঠন বা রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেয়ার মতো বয়স তখন তার ছিল না। রাজনৈতিক রেষারেষির কারণে তাদের এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সর্বোচ্চ আদালতে যাব। এদিকে গাইবান্ধার রঞ্জু মিয়াসহ ৫ আসাামির মামলাটি ট্রাইব্যুনালের ৪০তম রায়। ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৪০টি মামলায় মৃত্যুদ- প্রদান করেছে ৬৬ জনকে। আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করা হয়েছে ২৪ জনকে। আর একজনকে যাবজ্জীবন করাদ- প্রদান, একজনকে ৯০ বছরের দ- একজনকে ২০ বছরের কারাদ- প্রাদন করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের দ-ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে ৭টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যার মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। আর একজনকে আমৃত্যু কারাদ- প্রাদন করা হযেছে। আপীলে মামলা থাকা অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে আপীল বিভাগে ৩১টি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের করা আপীলের মামলার রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রাখা হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন দিন এ মামলার রায় প্রদান করা হবে। গাইবান্ধার এ মামলায় মোট আসামি ছিল ছয়জন। তাদের মধ্যে আজগর হোসেন খান মামলার তদন্ত চলাকালেই মারা যান। ২০১৮ সালের ১৭ মে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বাকি পাঁচ আসামির যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল।
×