ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রুতগতির মাছ

প্রকাশিত: ১২:৫১, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

দ্রুতগতির মাছ

মহাসাগরের বিশাল জলরাশিতে রয়েছে অসংখ্য সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদ। যার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় বিভিন্ন প্রজাতি ও বৈশিষ্ট্যের মাছের কথাও। মহাসাগরের এমনই কিছু দ্রুতগতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মাছ নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। -মুনতাসির সিয়াম সেইল ফিশ আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মাছ সেইল ফিশ। এরা সাধারণত উষ্ণ জলজ পরিবেশে থাকতেই পছন্দ করে। এদের পিঠের পাখনা দেখতে নৌকার পাল বা সেইলের মতো হওয়ায়, এদেরকে সেইল ফিশ বলা হয়। আকৃতির দিক থেকে সর্বোচ্চ ১০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এই মাছটি। ঘণ্টায় প্রায় ১০৯.৪ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারার ক্ষমতা আছে সেইল ফিশের। মারলিন মারলিনের মধ্যে চারটি ভিন্ন জাত রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, ব্ল্যাক মারলিন, ব্লু মারলিন, হোয়াইট মালরিন এবং স্ট্রিপড বা ডোরাকাটা মারলিন। নামের ভিন্নতা থাকলেও এরা দেখতে অনেকটা একই রকম। মারলিনের ঠোঁট দেখতে অনেকটা বর্শা আকৃতির হয়ে থাকে। যা দিয়ে খুব সহজেই শিকারের শরীরকে বিদ্ধ করতে পারে তারা। বিবিসির তথ্য মতে, এরাই মহাসাগরের সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন মাছ। যারা ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। ফ্লাইং ফিশ ফ্লাইং ফিশের পাখনাগুলো পাখার মতো বর্ধিত হয়ে থাকে। যার সাহায্যেই তারা উড়তে পারে। এদের টর্পেডোর মতো শারীরিক গঠন বিশিষ্ট হওয়ায় পানির নিচ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ গতি অর্জন করে খুব সহজেই উপরে উঠে আসে। পরবর্তীতে নিজেদের পাখনাগুলোর মাধ্যমে বাতাসে উড়ে চলতে সক্ষম হয় এই মাছ। ফ্লাইং ফিশ সর্বোচ্চ ১,৩১২ ফুট পর্যন্ত উড়ে চলতে পারে। আবার, পানির নিচ থেকে উপরে উঠে আসার জন্য ঘণ্টায় ৫৯ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে বলে জানা যায়। নীল হাঙ্গর হাঙর প্রজাতির মধ্যে নীল হাঙ্গর দেখতে সবচেয়ে সুন্দর হয়ে থাকে। বিশ্বের সকল মহাসাগরেই নীল হাঙ্গরের বসবাস রয়েছে। এরা লম্বায় ১৩ ফুট ও ওজনের দিক থেকে ২০৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়। নীল হাঙর ঘণ্টায় সাধারণত ৩৯.৩ কিলোমিটার পর্যন্ত ছুটতে পারে। তবে এরা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬৯ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ছুটে চলার ক্ষমতা রাখে। এই হাঙ্গরদের অদ্ভুত একটি দিক হচ্ছে, পুরুষ ও স্ত্রী হাঙ্গরদের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা দল হয় এদের। টুনা মাছ আটলান্টিক, প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরে দেখতে পাওয়া যায় নীল পাখনাওয়ালা টুনা মাছ। খাবার সংগ্রহের বেলায় এরা ভয়ঙ্কর মাত্রায় সুযোগ সন্ধানী প্রকৃতির হয়ে থাকে। প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এরা ক্রাস্টেসিয়ান, সাল্পসসহ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ ও প্রাণীদের শিকার করে খায়। ওজনের দিক থেকে এরা প্রায় ১৫৮-২০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। টুনা মাছ অবিরতভাবে সমুদ্রের বুকে ঘোরাফেরা করে এবং এই সময় তাদের গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় ২-৩ কিলোমিটারের মতো। তবে এদের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৭০ কিলোমিটার পর্যন্তও হয়ে থাকে বলে জানা যায়। তলোয়ার মাছ আটলান্টিক, প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগরে পাওয়া যায় তলোয়ার নামের এই মাছটি। শারীরিক দিক থেকে লম্বা, আঁশবিহীন ও পিঠে লম্বা পাখনা যুক্ত হয়ে থাকে এরা। এদের নাকটি বর্ধিত হয়ে অনেকটা তলোয়ারের রূপ নেয় বলে, এদেরকে তলোয়ার মাছ বলা হয়। ইংরেজীতে এর নাম সোর্ড ফিশ। তলোয়ারের মতো নাক দিয়ে খুব সহজেই এরা এদের শিকারকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলতে পারে। লম্বায় প্রায় ১৭৭ ইঞ্চি ও ওজনের দিক থেকে ৬৫০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে এই মাছ। ঘণ্টায় ৬০-৬৪ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। যা কিনা সময়ভেদে বৃদ্ধি পেয়ে ৮০-১০০ কিলোমিটার পর্যন্তও হতে পারে।
×