ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হেমন্তের শিল্পী ভ্যান গগ

প্রকাশিত: ১৩:০৩, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

হেমন্তের শিল্পী ভ্যান গগ

মহান চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গগ ১৮৫৩ সালের ৩০ মার্চ নেদারল্যান্ডসের ছোট্ট একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এ গ্রামটি ছিল বেলজিয়াম সীমান্তবর্তী। ছোটবেলা থেকেই অনেক দুঃখ-কষ্ট করে বেড়ে ওঠেন। চিত্রশিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গগ ‘ভ্যান গগ’ নামেই সমধিক পরিচিত। তাঁর চিত্রকর্মের বেশির ভাগই পরিবেশ নিয়ে, ফুল নিয়ে, বিভিন্ন ঋতু নিতে। নদী আর পাখিও তাঁর তুলির আঁচড় থেকে বাদ যায়নি। প্রকৃতি, পরিবেশ আর প্রতিবেশ নিয়ে নান্দনিক সব ছবি এঁকেছেন গগ। চিত্রকর্মকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। তিনি বিভিন্ন ঋতুর বিভিন্ন পর্যায়ের ছবি এঁকেছেন অত্যন্ত নিপুণভাবে। পরিবেশের নান্দনিকতা নিয়ে এঁকেছেন। পাহাড়-পর্বত আর নদী নিয়ে তুলির পরশ বুলিয়েছেন। জাহাজে যাত্রা বা গ্রামের সৌন্দর্য বা পরিবেশ নিয়ে ছবি এঁকে শিল্পিত রূপ দিয়েছেন। হেমন্ত বা শরতের প্রকৃতি এঁকেছেন চমৎকারভাবে। কৃষকের সংগ্রামমুখর জীবনী তুলে ধরেছেন তাঁর চিত্রে। এক একটি চিত্র যেন হাজার হাজার কথার বর্ণনা পাই আমরা। ফসলের বিভিন্ন পর্যায়ের নান্দনিক ও চোখ ঝলসানো কিছু ছবি আঁকলেন। যার সংখ্যাও কম নয়। কয়েকটি হচ্ছে- সমাজের প্রায় উপাদান যা আমরা দেখতে পাই বা তিনি দেখতে পেতেন সেটা নিয়েই তুলি ধরেছেন। চাকরিও করেছেন তিনি। মাতৃভূমি নেদারল্যান্ডস হলেও অভাব বা বিভিন্ন কারণে ফ্রান্স, জার্মানিও কাটিয়েছেন অনেক সময়। সর্বত্র তাঁর তুলির আঁচড়ও পড়েছে। শিল্পী বলতেন শিল্পকর্মকে ভালবাসি। যখন আমি ছবি আঁকি সবকিছুই ভুলে যায়। নিমগ্ন হয় চিত্রকর্মে। এতেই বোঝা যায় চিত্রকর্মের প্রতি তাঁর ঝোঁক ও আন্তরিকতা। এ কর্মকে তিনি ভালবাসতেন খুব। সন্তানতুল্য ভালবাসা বা তারচেয়েও বেশি। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন এ মহান চিত্রশিল্পী। তবে তাঁর আত্মহত্যা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। অনেকে বলেন যে, তাঁকে হত্যা করা হয়। দরিদ্র চিত্রশিল্পী নিজের পেটে গুলি চালিয়ে দিলেন ১৮৯০ সালের ২৭ জুলাই বিকেলে, উত্তর ফ্রান্সের এক গ্রামে। কিন্তু তাঁর মৃত্যু তখনই হয়নি। গুলি চালাবার পর ঘরে গিয়ে দিব্যি ধূমপান করলেন, কিন্তু ৩০ ঘণ্টার মাথায় পাড়ি জমালেন পরপারে। ঘুণাক্ষরেও তিনি জানলেন না, তাঁর মৃত্যুর পর অখ্যাত থেকে পরম পূজনীয় চিত্রকরের কাতারে নাম উঠে যাবে তাঁর। ভিনসেন্ট ভ্যান গগের নাম চিত্রশিল্পের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে আজীবন।
×