ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুটি কবিতা

প্রকাশিত: ১৩:০৫, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

দুটি কবিতা

গাফফার মাহমুদ কলতলার কবিতা কলতলাতে কবিতার জল আনা রেশম পালক চুল খোলা হাওয়া দোলা কত দিন কবিতা আসে না কলতলা! মৃৎশিল্প প্রভা নকশা আঁকা মাটির কলস বিকেলের হলুদ রোদে রোজই আসা কবিতার জল সময় রোদ ঝিলিক মুখে লেগে থাকা হাসির আভা। চোখময় রাখি চোখ কবিতার চোখাচোখি ভাষা খোঁজে কত কথা চোখ ভাষায় আগন্তুক একক্রোশ জল ছিটাই তার গায়ে কত দিন শুকনো বিরান কলতলার পলেস্তারা শ্যাওলা মাটি কবিতা মালো খুউব ভালো পায়ে মল অবিকল জল ঈশ্বরী অন্তর্দ্বন্দ্ব কবিতা ছন্দ করে তোলপাড় বুকের পাঁজর! শ্রেয়সী অপরাজিতা নেকাবে লুকাও মুখ অপরাজিতা চোখের আষ্টেপৃষ্ঠে খোঁজ কত মুুখ গানগ্লাস সুদর্শন অনাহূত যুবক পুরুষ ওষ্ঠে লেগে থাকা কামনার শিস অপলক লেগে থাকা যতুদূর চলে যায় লোভাতুর চোখ কেমন শ্রেয়সী তুমি নিজেকে বদলাও জলপাত্রে! আড়ালে আড়ালে ভাবো যত মুখ মুখের আদল অনুভবে আঁকো পায়ের আঙ্গুল মাটির সুড়সুড়ি ইশারায় রাখো চোখ ইথারে শিস দিয়ে গান কতটা লকাবে নিজে নেকাব আড়ালে মুখ স্বচ্ছ গ্লাস জল দাগে নিজেকে কতটা অপরাধী ভাবো! ** মাহফুজা অনন্যা পৌনঃপুনিক আশ্বিনের তরল সকালে এ শহর ছেয়ে গেল আলকাতরার মতো অন্ধকার আকাশে জ্বলা রাশভারী সূর্য দু’হাতে ঠেলতে পারে না সে অন্ধকার সুরমাটানা চোখে সেজে থাকে সন্ধ্যার ক্যাসিনো গর্বের ভ্রান্তিতে বেসুরো বাজে দিনের সঙ্গীত রাতভর বেজে চলে কানামাছির গান নর্তকীর ঊরু ভারি হয়ে আসে ক্রমশ, নেমে আসে ভোর শহরের হৃৎপি-ে জমেছে বদরক্ত আগন্তুক সময় শীঘ্র এসো, এ শহরের ওপেন হার্ট সার্জারি প্রয়োজন... ** পাতাখেকো হত্যা ও রক্তপাতের ওপর প্রতিষ্ঠিত এ পৃথিবী এ পৃথিবী উগ্র, ক্ষুধার্ত চিরকালের... প্রকৃতিও সোম্যশান্ত নয় কোনদিন পতঙ্গের নরম শরীর খায় পতঙ্গভূক প্রাণী মথ মাকড়সার শিকার, ঔষধিলতায় চলে শিকারকা- বৃক্ষের সর্বনাশে উলুধ্বনি দেয় পরগাছা... পৃথিবীর সব পথে নিজস্ব অভ্যাসে জ্বলে দু’রকম আলো একটি তার গাঢ় সবুজ অন্যটি ঘুটঘুটে কালো। মানুষ খেয়ে বাঁচে কিছু নিরীহ প্রাণী প্রকৃতির কীট যারা, তারাই কচি, নরম সবুজ পাতাখেকো। প্রকৃতির স্বভাবে একজন শিকার অন্য জন শিকারি নিষ্ঠুরতার পরিহাসে হাসে প্রকৃতির নীল নকশাধারী ** দশটি হাইকু সুজন হাজারী রোদেলা বৃষ্টি পাড়ায় কাদাজল মাঠে ফসল। চোখ জুড়ানো মন ভরা মৌসুমে মা দেয় ঘুমে। মন মজেছে চিরচেনা কদম বনে ফুটেছে। পা টিপে টিপে বধূ আলতা পায়ে শ্বাশত গাঁয়ে। প্রাণ জোয়ারে মন যেতে চায়রে ঘর দুয়ারে। শ্রাবণী রূপ স্যাঁতসেঁতে গৃহের টানছে ফের। ধবলী নিয়ে রাখাল ছেলে মাঠে যায় চরাতে। টিনের চালে ঝমঝম বৃষ্টির জল কে ঢালে। ময়ূরী নাচে পেখম খুলে বনে ফুটেছে কেয়া। বোরো আমন ধানের পরে ধান ভরছে মন।
×