ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে ফেলে চম্পট স্বামী

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে ফেলে চম্পট স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্ত্রীর লাশ ফেলে পালিয়েছেন রহিদুল ইসলাম (৩৪) নামের এক ব্যক্তি। তিনি উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের কুলিবাড়ি গ্রামের মৃত আহসান আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে রহিদুল ইসলাম অটোভ্যানে করে তাঁর স্ত্রী শিমু খাতুনকে (২৭) অচেতন অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। স্ত্রী বিষপান করেছেন বলে তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জানান এবং চিকিৎসা শুরু করার অনুরোধ করেন। পরে বিষপানের কোনো নমুনা না পেয়ে চিকিৎসকের ইনজেকশন দেন। এর কিছুক্ষণ পর শিমু খাতুন মারা যান। এসময় খবর পেয়ে শিমুর স্বজনেরাও হাসপাতালে ছুটে আসেন। তবে বিষয়টি টের পেয়ে মৃত স্ত্রীকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ফেলে রেখেই সটকে পড়েন স্বামী রহিদুল ইসলাম। খবর পেয়ে রাতেই ছুটে আসেন থানা পুলিশ। গৃহবধূ শিমুর ছোট ভাই রেজাউল করিম অভিযোগ করেন, তার বোনকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার বোনের পরকীয়া সর্ম্পক রয়েছে এমন অভিযোগে ভগ্নিপতি রহিদুল ইসলাম প্রায়ই নির্যাতন করতেন। গত তিন দিন ধরে থেমে থেমে তার বোনের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এর ফলেই বোনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অন্য সদস্যরা জানান, প্রায় এক যুগ আগে উপজেলার কাঁঠালবাড়ি গ্রামের শিমু খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার কুলিবাড়ি গ্রামের রহিদুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। স্ত্রী পরকীয় প্রেম করছেন বলে স্বামী রহিদুল ইসলাম সন্দেহ করতেন। এছাড়া অন্য কোনো বিরোধ ছিল না। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌসুমী সরকার বলেন, তিনি চিকিৎসা দেওয়ার পরেই গৃহবধূ মারা গেছেন। তবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা বিষপানের আলামত পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে গৃহবধূর শরীরে আঘাত বা বিষপানের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। পুলিশ আসার আগেই স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে ফেলে পালিয়েছেন স্বামী। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বিষয়টির গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।
×