ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জবি মিলনায়তনে ‘লালজমিন’

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

জবি মিলনায়তনে ‘লালজমিন’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মঞ্চনাট্য প্রযোজনা শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের ‘লালজমিন’। ‘লালজমিন’ নাটকটি আগামীকাল ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে। এদিন সকাল ১০-৩০ মিনিটে এ নাটকের ২০৮তম মঞ্চায়ন হবে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের প্রখ্যাত নাট্যকার মান্নান হীরা রচিত নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন তরুণ নির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তী। নাটকে একক অভিনয় করেন দেশের বরেণ্য অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী। ‘লালজমিন’ নাটকের পোশাক পরিকল্পনা করেছেন ওয়াহিদা মল্লিক। সঙ্গীত পরিকল্পনা জুলফিকার চঞ্চল ও রামিজ রাজু। সঙ্গীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বারী সিদ্দিকী, রামিজ রাজু ও নীলা সাহা। মঞ্চায়নের নেপথ্য কারিগররা হলেন আতিকুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, মীর্জা শাকিব, মোসাম্মৎ মমতাজ, জুয়েল মিজি, তানভীর সানি ও নিথর মাহবুব। ‘লালজমিন’ নাটকটির গল্প মুক্তিযুদ্ধের একটি খন্ডচিত্রের বয়ান। মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন কিশোরীর অংশগ্রহণ, গল্পের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের ভয়াবহতা, মেয়েটির ত্যাগ- সবশেষে স্বাধীনতা অর্জন দর্শকদের এক নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখে দাঁড় করিয়ে দেয় ‘লালজমিন’। ‘লালজমিন’ কিশোরীর রক্তরাঙা অভিজ্ঞতার মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্য প্রকাশ। ‘লালজমিন’ নাটকের গল্প তেরো পেরিয়ে চৌদ্দ বছর ছুঁই ছুঁই এক কিশোরী কন্যার। কিশোরীর দু’চোখ জুড়ে মানিক বিলের আটক লাল পদ্মের জন্য প্রেম। সে কৈশোরেই শোনে বাবা-মায়ের মধ্যরাতের গুঞ্জন। শুধু দুটি শব্দ কিশোরীর মস্তকে আর মনে জেগে রয়, মুক্তি-স্বাধীনতা। ওই বয়সে কিশোরী এক ছায়ার কাছ থেকে প্রেম পায়। বাবা যুদ্ধে চলে যায়। অগোচরে কিশোরী নানা কৌশলে যুদ্ধে যাওয়ার আয়োজন করে, সশস্ত্র যুদ্ধ। কিন্তু বয়স তাকে অনুমোদন দেয় না। এক পর্যায়ে কিশোরীর সেই ছায়া প্রেম সম্মুখে দাঁড়ায়। সে তার সেনাপতিকে চিনতে পারে। তারপর যুদ্ধযাত্রা। লক্ষ্যে পৌঁছবার আগেই পুরুষ যোদ্ধারা কেউ শহীদ হোন, কেউ নদীর জলে হারিয়ে যান। পাঁচ যুবতীসহ যুদ্ধযাত্রী এই কিশোরীর জীবনে ঘটে নানা অভিজ্ঞতা। চৌদ্দ বছরের কিশোরীর ধবধবে সাদাজমিন যুদ্ধকালীন নয় মাসে রক্তরাঙা হয়ে ওঠে। ‘লালজমিন’ কিশোরীর রক্তরাঙা অভিজ্ঞতার মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্য প্রকাশ। দেশের বরেণ্য নাট্যাভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরীর প্রাণবন্ত অভিনয় নাটকটি নিমিষেই দর্শকদের আকৃষ্ট করে। চরিত্রানুযায়ী কণ্ঠের সূক্ষ্ম কাজ যেমন দেখিয়েছেন তেমনি নাচ এবং কোরিওগ্রাফিতে নিজেকে মিলিয়ে দিয়েছেন গল্পের বুনুনিতে। নাটকের পোশাক সেট আলো সবই যেন মোমেনা চৌধুরীকে নিয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়ে। মঞ্চে মোমেনা চৌধুরী যেন হয়ে ওঠেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দলিল। দেশে-বিদেশে অসংখ্য মঞ্চায়ন সাফল্যে অনেকটাই উচ্ছ্বসিত নাটকের অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী। তিনি বলেন, শুরু থেকে নাটকটির প্রতি দর্শকদের ও আমাদের পথচলাকে করেছে গতিময়। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে যারা আমাদের ‘লালজমিন’ নাটকটি প্রদর্শন করার সুযোগ করে দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি আরণ্যক নাট্যদলের কাছে। আর আমাদের সবটুকু ভালবাসা দর্শকদের জন্য। তাদের অনুপ্রেরণায় আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি। অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী জানান, ‘লালজমিন’ গত অর্থবছরে ৪৪টি প্রদর্শনীর জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুদান দিয়েছিল। আমরা সফলভাবে ৪৪টি প্রদর্শনী সম্পূর্ণ করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় গত অর্থবছরেও ‘লালজমিন’ নাটক আরও ৩০টি প্রদর্শনীর জন্য অনুদান দেয় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এজন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি, সচিব মোঃ নাসিরউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল মান্নান ইলিয়াস, যুগ্ম-সচিব মোঃ ফয়জুর রহমান ফারুকী ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি। ধন্যবাদ সকল জেলা প্রশাসন ও শিল্পকলা একাডেমিকে। সকল দর্শকের প্রতি জানাই ভালবাসা। জয় হোক থিয়েটারের। প্রসঙ্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমন্ডলে ২০১১ সালের ১৯ মে শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের প্রথম প্রযোজনা ‘লালজমিন’ নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন হয়।
×