ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বাড়তি ঋণ সুবিধা দিতে চায় : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ১৯ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বাড়তি ঋণ সুবিধা দিতে চায়  :  অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বাড়তি ঋণ সুবিধা দিতে চায় বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ঋণ ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়ায় বিশ্বব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সড়ক নিরাপত্তা জোরদার ও দুর্ঘটনারোধে বিশ্বব্যাংক সহযোগীতা প্রদানে আগ্রহ দেখিয়েছে। এছাড়া বেসরকারী খাতে ঋণ সহযোগীতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইএফসি (ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশন)। এতে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেসব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আইএফসির বিনিয়োগের ফলে দেশে কর্মসংস্থানের বড় সুযোগ তৈরি হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বৈঠকে শুরু থেকে যারা আমাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছে সবাই বলেছে বাংলাদেশের সক্ষমতা বেড়েছে। সবাই স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সঠিক পথে রয়েছে। সবার কাছ থেকে একটা স্পষ্ট বার্তা ছিল যে, সবাই প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়। এটা আমাদের জন্য বড় বার্তা। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বাড়তি ঋণ দিতে উন্মুখ হয়ে আছে। এর আগে অর্থমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে আইএফসির আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট স্নিজানা স্টিইল্জকোভিকের নেতেৃত্বে প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেন। জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশনের (জেবিআইসি) ডেপুটি গবর্নর নবুমিতসু হায়াশির সাথে সৌজন্য সাক্ষাত, ইউএসএআইডি’র সাথে ট্যাক্স রিফর্ম বিষয়ক বৈঠক এবং সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের আয়োজিত বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াবে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি)। এখাতে সারাবিশ্বে সংস্থাটি মোট এক হাজার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি কোম্পানি ইতোমধ্যে ১৯ মিলিয়ন ডলার নিয়েছে। এর আগে আরো অনেকগুলো বেসরকারি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে আইএফসি। এর ফলাফল বেশ ভাল। এজন্য এদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় সংস্থাটি। আইএফসি’র বিশাল বিনিয়োগ ঘোষণা লুফে নিতে পারে বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের পরিধি আরো বাড়বে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার। আইএফসি ঋণে সুদহার ১০ শতাংশের কম হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইনকাম ট্যাক্স কালেকশনে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইউএসএআইডি সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবৎ নিস্ত্রিয় ছিল। এবার তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে কার্যকরভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বিনিয়োগ করলে আমাদের আরেকটি নতুন উইন্ডো খুলে যাবে। তারা তাদের দেশের বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমাদের দেশে নিয়ে আসবে, যা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক। সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠক সম্পর্ক অর্থমন্ত্রী বলেন, সড়কের নিরাপত্তা জোরদারকরণ অত্যন্ত জরুরি। অকাল মৃত্যু কখনও কারোর জন্য কাম্য হতে পারে না। সড়কে চলাচল ও ট্রাফিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনারোধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশ্ব ব্যাংক যদি এ বিষয়ে কাজ করে, আশা করি অত্যন্ত ভাল করবে। তবে শুধু একটি কোন নির্দিষ্ট পদ্ধতি দিয়ে এটি সম্ভব নয়, যে দেশের জন্য যেটি উপযোগী সেটি সেদেশে প্রয়োগ করতে হবে। এটি একটি অত্যন্ত জরুরী এবং সময়ের দাবী। তবে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে, সেটি হচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধি। সকলের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি করতে হবে এবং এটি শুরু করতে হবে, স্কুলের বাচ্চাদের থেকে। তাদের বিভিন্নভাবে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রধান করতে হবে। তারা তাদের পিতামাতাকে এবং পিতামাতারা সকল আত্ত্বীয়স্বজনের সাথে শেয়ারের মাধ্যমে এই সচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব। পাশাপাশি সরকারকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে আইন পাশ করা হয়েছে, চারলেন-ছয়লেন রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এগুলোর পাশ দিয়ে লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস লেন রাখা হচ্ছে, চালকদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করা হচ্ছে।
×