ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জয় বাংলা আওয়ামী লীগের স্লোগান নয়, মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ॥ মোজাম্মেল

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ২০ অক্টোবর ২০১৯

জয় বাংলা আওয়ামী লীগের স্লোগান নয়, মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ॥ মোজাম্মেল

সংবাদদাতা, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, ১৯ অক্টোবর ॥ জয় বাংলা আওয়ামী লীগের কোন দলীয় স্লোগান নয় এটি মুক্তিযোদ্ধাদের রণধ্বনি। মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করার পাশাপাশি এ রণধ্বনি দিয়ে পাক হানাদারদের মনোবল ভঙ্গ করেছিল। অনেকেই আজ মনে করেন জয় বাংলা দলীয় স্লোগান এটি কখনোই দলীয় স্লোগান হতে পারে না। এ স্লোগানকে মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব স্লোগান করা উচিত। শনিবার দুপুরে সোনারগাঁ উপজেলার সাহাপুর এলাকায় সোনারগাঁ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভবন উদ্বোধনে এসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদেরকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের বিদ্যুত ও গ্যাস বিল এবং চিকিৎসা ভাতা বাবদ মাসে তিন হাজার টাকা করে প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। তাছাড়া আগামী বছর মুজিব বর্ষ পালন উপলক্ষে দেশের ১৫ হাজার দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাকে গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হবে। প্রতি গৃহ নির্মাণে ১৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হবে। একই ডিজাইনে তৈরি করা হবে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের বাস ভবন। মন্ত্রী আরও বলেন, চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত নামের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এ গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে আগের সকল গেজেট বাতিল হয়ে যাবে। সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক এ গেজেটের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে বির্তকের অবসান হবে। কেউ চাইলেই মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ নকল করতে পারবে না। এ তালিকার নিরাপত্তার জন্য ছয়টি বার কোড ব্যবহার করা হবে। তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। ২৫ উপজেলায় কমপ্লেক্স নির্মাণ বাকি আছে অচিরেই এগুলো সম্পন্ন করা হবে। এছাড়া দেশের প্রতিটি যুদ্ধ ক্ষেত্র, বধ্যভূমি, মুক্তিযোদ্ধাদের কবর একই নক্সায় নির্মাণ করা হবে যাতে পরবর্তী প্রজন্ম এগুলো দেখেই বুঝতে পারে এগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি চিহ্ন। মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন বিভিন্ন কারণে এতদিন বন্ধ ছিল অচিরেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা কখনোই নির্বাচনের বিপক্ষে নই। আদালতে মামলা থাকায় নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে এখন কোন মামলা নেই তাই নির্বাচনে কোন বাধা নেই। তিনি আরও বলেন, আমরা জীবনবাজী রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু আমাদের সন্তানরা যদি অন্য মতাদর্শে বড় হয় তাহলে এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার সন্তান যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে বড় হয় সে বিষয়ে সজাগ থাকবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জসিমউদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার, নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ মোল্লা বাদশা, জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক ড. সেলিনা আক্তার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সোনারগাঁ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সোহেল রানা, ডেপুটি কমান্ডার ওসমান গনি প্রমুখ। উল্লেখ্য, সোনারগাঁ উপজেলার সাহাপুর এলাকায় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন অধিদফতরের আওতায় ১০ শতাংশ সরকারী জমির ওপর ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ বছরে নির্মাণ করা হয় ৩ তলা বিশিষ্ট সোনারগাঁ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স।
×