অনলাইন ডেস্ক ॥ ইরান ও ইরাকসহ আজ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা এবং শোকের ভাব-গাম্ভীর্য নিয়ে পালন করা হয়েছে ইমাম হুসাইন (আ)'র শাহাদাতের চেহলাম-বার্ষিকী বা আরবাঈন।
ইরাকের পবিত্র কারবালায় ইমাম হুসাইন (আ)'র শাহাদাতের ১৩৮০ তম চেহলাম-বার্ষিকী বা আরবাঈন পালন করা হয়েছে। বিশ্বের ৫৫ দেশের কয়েক মিলিয়ন অনুরাগী এ উপলক্ষে জড় হয়েছেন পবিত্র এই শহরে। জিয়ারতে আরবাইন নামক বিশেষ দোয়া পাঠ ছিল আজকের এই দিনের অন্যতম প্রধান কর্মসূচি।
কেবল ইরান থেকেই ৩৫ লাখ ইরানি জিয়ারতকারী আরবাঈনে যোগ দেয়ার জন্য ইরাকের কারবালায় এসেছেন বলে ইরানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ইরান হয়ে বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশের লাখ লাখ জিয়ারতকারী কারবালায় যান।
বিদেশ থেকে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ জিয়ারতকারী আরবাঈন পালনের জন্য ইরাকে আসবেন বলে সংশ্লিষ্ট ইরাকি সূত্রগুলো জানিয়েছিল। ফলে দেশী-বিদেশী জিয়ারতকারীর মোট সংখ্যা তিন কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশ-বিদেশ থেকে আসা জিয়ারতকারীদের সেবা দেয়ার জন্য কারবালাগামী পথে সক্রিয় ছিল শত শত সেবা-সদন। বিনামূল্যে খাবার, পানীয়, বিশ্রাম ও চিকিৎসা দেয়াসহ নানা ধরনের সেবায় নিয়োজিত থেকেছেন হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী কর্মী।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটার কোনো খবর পাওয়া যায়নি কারবালায়।
প্রতি বছর ঐতিহাসিক বিশে সফর তথা ইসলামী-আরবি পঞ্জিকার সফর মাসের ২০ তারিখে পালন করা হয় শহীদ-সম্রাট হযরত ইমাম হুসাইনের (অনন্ত সালাম তাঁর প্রতি) শাহাদাতের চেহলাম। এ উপলক্ষে ইরাকের কারবালায় সমবেত হন বিশ্বের কয়েক কোটি শোকার্ত অনুরাগী।
প্রায় দেড় যুগ ধরেই এখানে এই সময় ঘটছে শতাধিক দেশের কোটি কোটি অনুরাগীর সমাবেশ। অনেকেই শত শত মাইল পথ দূর থেকে পায়ে হেঁটে সমবেত হচ্ছেন পবিত্র কারবালায়।
এর আগে সাদ্দাম সরকারের শাসনামলে ইরাকে আরবাঈন পালন করার ক্ষেত্রে ব্যাপক বাধা দেয়া হত এবং সরকারের নানা ধরনের বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ ও সন্ত্রাসী হামলা সত্ত্বেও ইরাকের বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ জনগণ আরবাঈনের সময় সাধারণ পথ এড়িয়ে কোনো না কোনোভাবে কারবালায় উপস্থিত হতেন।
এদিকে আজ ইমাম হুসাইনের পবিত্র মাজারের কাছে অনুষ্ঠিত হয়েছে 'মানবজাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে আরবাঈন' শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার।
মানুষের মুক্তির ক্ষেত্রে আরবাঈনের প্রভাব নিয়ে এই সেমিনারে আলোচনা হয়েছে। বক্তারা আরবাঈনকে গণ-কূটনৈতিক অভিযান বলে উল্লেখ করেছেন এবং বিশ্ব-অঙ্গনে জুলুম প্রতিরোধে আরবাঈনের ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কমিটির সদস্য ডক্টর মানুচেহের মোহাম্মাদি এবং ইরাকের আননুজাবা আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা হাজ নাস্র আশশামারি ছিলেন এই সেমিনারের অন্যতম বক্তা।
ওদিকে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতিতে পালন করা হয়েছে ইমাম হুসাইন (আ)'র শাহাদাতের ১৩৮০ তম চেহলাম-বার্ষিকী বা আরবাঈন। সর্বত্র ছিল গভীর শোকের বিশেষ ভাবগম্ভীর পরিবেশ।
রাজধানী তেহরানের একটি কেন্দ্রে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর উপস্থিতিতে আজ দুপুরের আগে পালন করা হয় আরবাঈনের শোক-অনুষ্ঠান ও সমাবেশ।
রাজধানী তেহরানের ইমাম হুসাইন স্কোয়ার থেকে বিপুল সংখ্যক অনুরাগী আরবাঈনের পদযাত্রায় যোগ দিয়ে রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চলে রেই শাহর এলাকায় অবস্থিত শাহ আবদুল আযিমের মাজারে উপস্থিত হন। মসজিদসহ সারা দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা ও শোক-সভা। এ ছাড়াও বিলানো হয় নানা ধরনের খাদ্য সামগ্রী
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: