ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাপাহারে গৃহবধুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৮:২২, ২০ অক্টোবর ২০১৯

সাপাহারে গৃহবধুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁর সাপাহারে নিজ স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি ডাকাতির ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করছে চতুর স্বামী নজরুল ইসলাম। শনিবার দিনগত রাতে উপজেলার বিদ্যানন্দী বাহাপুর গ্রামে নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে। চতুর নজরুল ওই গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলনা। এসময় সে বাড়িতে তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একাই থাকত। ঘটনার দিন রাত ২টার দিকে উক্ত গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩২) তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে গ্রামের অন্যলোকের দরজায় আঘাত করলে গ্রামের কয়েকজন লোক বেরিয়ে আসে এবং তাকে তার মুখে কসটেপ আটানো ও হাত দু’টি পিছনের দিকে গামছা দিয়ে বাধাঁনো অবস্থায় দেখতে পায়। এসময় তারা তার মুখের টেপ ও বাধঁন খুললে সে তাদেরকে বলে যে আমার বাড়িতে ডাকাত দল প্রবেশ করেছে। তারা আমার ছেলেকে কুপের মধ্যে ফেলে দিতে চায়। আপনারা আমার ছেলেকে বাঁচান বলে সে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গ্রামের লোকজন তার বাসায় ছুটে এসে দেখতে পায় যে, বিছানায় তার স্ত্রী (রুমী) (২৫) অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে ও সন্তান রাফি (২) ঘুমন্ত অবস্থায় রয়েছে। লোকজন তৎক্ষনাত তাকে ও তার স্বামী নজরুল ইসলামকে সেখান থেকে উদ্ধার করে রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করে। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক রুমীকে দেখে মৃত ঘোষনা করেন। মৃত রুমীর গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। মৃত গৃহবধু রুমীর স্বামী নজরুল ইসলামের সাথে হাসপাতাল বেডে কথা হলে তিনি জানান,, রাত দেড়টার দিকে সে বাড়ির বাথরুম থেকে বেরুনোর সময় তাকে অপরিচিত ৩জন লোক ঝাপটে ধরে এবং তাকে তার ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে বাহিরের দরজার চাবি আদায় করে। বাড়ির দরজায় তালা ছিল তারা কি করে বাসায় প্রবেশ করল এ প্রশ্নের জবাবে সে কিছুই বলতে পারেনা। এর পর ডাকাতরা চাবি দিয়ে বাড়ির সদর দরজা খুললে আরো ৬জন লোক বাইরে থেকে বাসায় প্রবেশ করে এবং তাকে তার শয়ন ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গামছা দিয়ে দু’হাত বেধেঁ ফেলে ও মুখে কসটেপ এঁটে দেয়। এর মধ্যে ঘরে ডাকাতদল কি করল এবং কি সম্পদ লুট করল তা স্বামী নজরুলের জানা নেই বলে জানান এবং এ পর্যন্ত তার স্ত্রী ও সন্তান ঘুমেই ছিল বলে তিনি জানান। বিষয়টি নিয়ে বিশাল রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। কোন পরকীয়া কিংবা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্ট কোন মন মালিন্যের কারণে সে তার স্ত্রীকে ঘুমের ঘোরে শ্বাস রোধ করে হত্যা করতে পারে এ নিয়ে এলাকায় খুব জোরালো গুঞ্জন চলছে। পুলিশ ও বলছে এটি কোন চুরি কিংবা ডাকাতির ঘটনা নয়। চুরি বা ডাকাতি ঘটনা হলে তারা ঘরের মধ্যে থাকা নগদ টাকা পয়সা, গহনা কিছুই নেয়নি। সবই ঠিক মত অবস্থায় রয়েছে। একটি জিনিষ পত্র ও খোয়া যায়নি কিংবা কোন দরজা জানালাতেও কোন চিহ্ন নেই সবই অক্ষত রয়েছে। তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কোন ঘনটা থাকতে পারে বলেও পুলিশ ধারণা করছে। নিহত গৃহবধুর পিতা রমজান আলী ও বড় আব্বা নুরমোহাম্মাদ দাবী করে বলেছেন, তাদের মেয়েকে জামাই নজরুল হত্যা করে ডাকাতির নাটক সাজিয়েছে। তাদের বাড়ি ধামইরহাট উপজেলার ফতেপুর গ্রামে। থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই নিউটন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, এটি চুরি কিংবা ডাকাতির কোন ঘটনা নয়। স্বামীর দ্বারাই ঘটনাটি ঘটতে পারে। তবে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উম্মোচিত হবে বলে তিনি মনে করেন।
×