ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কাঠ মিস্ত্রি কন্যা প্রিয়াংকা এখন মেডিক্যাল ছাত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২২ অক্টোবর ২০১৯

কাঠ মিস্ত্রি কন্যা প্রিয়াংকা এখন মেডিক্যাল ছাত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল ॥ নড়াইলে হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান প্রিয়াংকার মেডিক্যালে পড়ার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এলেন এক যুবলীগ নেতা। জেলা যুবলীগের সদস্য তরুন ব্যবসায়ী সরদার তারিক হাসান তার নড়াইল শহরের অফিসে প্রিয়াংকার বাবা গাঙ্গুলির হাতে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং মেডিক্যাল কলেজের লেখাপড়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে তার লেখাপড়ার খরচের জন্য ২ হাজার টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন। সোমবার প্রিয়াংকার কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রিয়াংকার বাবা তাপস গাঙ্গুলি ও তার মা কাঞ্চন গাঙ্গুলি জানান, আমরা ভাবতে পারিনি প্রিয়াংকার স্বপ্ন পূরণ হবে। তারিক হাসান এগিয়ে না আসলে কিভাবে সে ভর্তি হতো তা ভেবে পাচ্ছিনা। আমরা তার কাছে চির কৃতজ্ঞ। প্রিয়াংকা জানান, স্বপ্ন ছিল ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবার। সে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। তার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসার জন্য তারিক হাসানসহ স্কুল ও কলেজের সমস্ত শিক্ষকের কাছে চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রিয়াংকার শিক্ষক প্রভাষক প্রশান্ত সরকার জানান, প্রিয়াংকা অনেক কষ্ট স্বীকার করে এ পর্যন্ত এসেছে। দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে তার উচ্চ শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করা ছিল অসম্ভব একটি বিষয়। তিনি যুবলীগ নেতা ও তরুন ব্যবসায়ী তারিক হাসানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জানা গেছে, নড়াইল সদরের দূর্গাপুর গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি ও ঘরামি তাপস গাঙ্গুলির কন্যা প্রিয়াংকা। বসতভিটার ৭ শতাংশ জমি ছাড়া তাদের চাষের আর কোনো জমি নেই। চার জনের সংসারে তাপস গাঙ্গুলি অন্যের ছন বা টিনের ঘর তৈরি করে যা পান তাই দিয়ে সংসার চলে। নিজে ঘরামি হলেও বসবাসের মাত্র একটি ঘর রয়েছে। বাড়িতে নিজস্ব বিদ্যুৎ লাইন নেই। অন্য বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ এনে লেখাপড়ার কাজ চলে। প্রিয়াংকার মা কাঞ্চন গাঙ্গুলি বাড়ির উঠানে শাক-সবজি, হাঁস-মুরগির চাষ করে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করেন। অভারে সংসারে প্রতিদিন সে তিন কিলোমিটার বাই সাইকেল চালিয়ে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে এসে ক্লাস করেছে। প্রিয়াংকা নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয় হতে এসএসসি এবং নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করে।
×