ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উপাচার্যের প্রতি অবমাননা ॥ জাবিতে নারী শিক্ষকদের মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২২ অক্টোবর ২০১৯

উপাচার্যের প্রতি অবমাননা ॥ জাবিতে নারী শিক্ষকদের মানববন্ধন

জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহকে নারীর প্রতি অবমাননা ও সহিংসতা আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। মানববন্ধনে প্রায় শতাধিক নারী অংশগ্রহন করে। এসময় বক্তারা বলেন, একজন নারীর কুশপুত্তলিকা দাহ করার মাধ্যমে সকল নারী সমাজকে অবমাননা করা হয়েছে। আর শাড়ি নারীর অগ্রযাত্রা ও সম্মানের প্রতিক। শাড়িকে পুড়িয়ে নারীর প্রতি সহিংস মনোভাব ও বিদ্ধেষ প্রকাশ পেয়েছে। আমরা মনে করি কোন শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা দাহ করা শিক্ষকসুলভ আচরন নয়। মানববন্ধন শেষে নারী অপমানের বিচার চেয়ে নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনের করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বারতা চক্রবর্তী বলেন, ‘কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগ করে বাংলাদেশের প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে পদচ্যুত করার জন্য কয়েকজন শিক্ষক ও কিছু শিক্ষার্থী এমন কিছু কর্মসূচী অবলম্বন করেছেন যা নারীর জন্য অবমাননাকর । কিন্তু কর্মসূচীর নামে বল প্রয়োগ করা, নারীকে অসম্মান করা মেনে নেওয়া যায় না। নারীর ক্ষমতায়নে তার প্রদক্ষেপ সবসয়মই আমাদের সম্মানিত করেছে। অথচ এমন একজন নারীকে অন্যায়ভাবে আন্দোলনের নামে ধিক্কার প্রদান, লাল কার্ড প্রদর্শন, অশালীন মন্তব্যবাণ ছুড়া ইত্যাদি তথাকথিত প্রগতিশীল সহকর্মীগন অহরহ করে যাচ্ছেন। সবশেষে নারী বিদ্বেষী আন্দোলনকারীগন কুশপুত্তলিকা দাহ করার মাধ্যমে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তারা উপাচার্যের মুখচ্ছবি সংযুক্ত করে শাড়িতে আগুন ধরিয়েছে।’ বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘আবহমানকাল ধরে শাড়ি বাঙালী নারীর সম্মানের প্রতিক হয়ে আছে। শাড়িতে আগুন ধরিয়ে চরম নারী বিদ্ধেষীরা কেবল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদেরই অপমান করেনি বরং একই সঙ্গে অপমান করেছে বাঙালী নারীর অগ্রণী ভূমিকা রাখা সকল সম্মানিত নারীদের । আমরা নারী অপমানের বিচার চাই। বিচার চাই নারী বিদ্ধেষী অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক ড. তারেক রেজা, অধ্যাপক ড. খবির উদ্দিনসহ যারা নারীর শাড়ি ও মুখচ্ছবিতে আগুন দিয়েছে। এরকম আচরন সাধারণ মানুষদের নারীর প্রতি সহিংস হতে উৎসাহিত করেবে।’ সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রাশেদা আখতার, সহযোগী অধ্যাপক সালমা আহ্মেদ, সোলনারা আকতার সহ প্রায় ৫০ জন নারী শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গত ২০ অক্টোবর উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। এর মাধ্যমে উপাচার্যকে সকল প্রশাসনিক কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেন তারা। এদিকে অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে সন্ধ্যা সাতটায় মশাল মিছিল করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
×