ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এম.এইচ উল্লাহ

শিশুশ্রম অনভিপ্রেত

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ৭ নভেম্বর ২০১৯

 শিশুশ্রম অনভিপ্রেত

শিশুদের দিয়ে অনেক কষ্টের কাজ করানো হচ্ছে। এটা অনৈতিক ও অনভিপ্রেত। যারা এ ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। যে বয়সে একটি শিশু স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করবে সেই বয়সে শিশুটিকে যদি রাস্তায় ইট ভাঙ্গার কাজ করতে হয় কিংবা কোন কারখানায় আগুনের মধ্যে লোহা নিয়ে কাজ করতে হয় তাহলে এর চেয়ে দুঃখের বিষয় আর কী হতে পারে? জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুধু বেঁচে থাকার জন্য এই শিশুকে কাজ করতে হচ্ছে। প্রশ্ন হলো যারা শিশুটিকে দিয়ে এ ধরনের অনৈতিক কাজ করাচ্ছে তারা কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। সমাজে এরা বুক ফুলিয়ে হাঁটছে আর নিজেদের বিত্তবান বলে জাহির করছে। অনেক শিশু বাসা বাড়িতে ঘর গৃহস্থালির কাজ করে। ২৪ ঘণ্টা না হলেও দিন রাতই তাদের কাজ করতে হচ্ছে। সামান্য ভুলের জন্য এই শিশুটিকে কঠিন সাজা দেয়া হচ্ছে। অনেক সময় একটি শিশুকে অত্যাচার করতে করতে মেরেই ফেলা হয়। ইদানীং দেখা গেছে একটি শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারা হচ্ছে, কখনও কখনও তাকে এমন ভাবে মারা হচ্ছে যে শেষ পর্যন্ত সে মরেই যাচ্ছে। সামান্যতম ভুলের জন্য গৃহকর্তা কিংবা গৃহিণী একটা শিশুর ওপর অকথ্য নির্যাতন করে। দুমুঠো ভাতের জন্য একটি শিশু অন্যের বাসায় কাজ করে। তার অপরাধ সে গরিব, তার বাবা মা তাকে খেতে পরতে দিতে পারে না, তাই অভাবের তাড়নায় সে কোন ধনী গৃহে বেঁচে থাকার জন্য কাজ করে। এমনও দেখা গেছে সামান্য মোবাইল চুরির ঘটনা কেন্দ্র করে পায়ুপথে বায়ু ঢুকিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করে একটি শিশুকে মেরে ফেলা হয়েছে। এখন কথা হচ্ছে কতদিন আর এই শিশুদের ওপর এমন অত্যাচার চলবে? শিশুদেরকে খুশি করার জন্য নানা সময় তাদেরকে পথকলি, টোকাই ইত্যাদি নাম দেয়া হয়েছে। জ্ঞানী-গুণী লোকেরা বলেন, ‘নামে কি আসে যায়?’ যে ছেলে চোখে দেখতে পায় না অর্থাৎ কানা ছেলের নাম ‘পদ্মলোচন’ রাখলে সে কি চোখে দেখতে পাবে? প্রতিটি শিশুই নিষ্পাপ জন্মগ্রহণ করে আর বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সে আপন ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। আমাদের সকলের ঘরেই শিশু রয়েছে। আমরা নিজেদের শিশুদের আদর যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করি, কিন্তু পরের শিশু সন্তানকে তা করি না- এসব নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছুই নয়- এসব আমাদের পরিহার করা উচিত। কাজ করতে গিয়ে কত শিশু অকালে মৃত্যুবরন করেছে, কত শিশু বিকলাঙ্গ হয়েছে, কত শিশু দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছে আমরা কি তার খবর রাখি। এখন সময় এসেছে এ ধরনের নিষ্ঠুর ও নির্মম কাজের প্রতিবাদ করার। আইন করে শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হবে কারণ কোন সভ্য সমাজে শিশুকে নির্যাতন করা যায় না। নির্যাতন করলে এ অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হয়। সমাজে গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে যাতে শিশুদের ওপর এ ধরনের নির্যাতন বন্ধ হয়। কলাবাগান, ঢাকা থেকে
×