ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

কৃষক লীগের পর আজ শ্রমিক লীগের সম্মেলন

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ৯ নভেম্বর ২০১৯

 কৃষক লীগের পর আজ শ্রমিক লীগের সম্মেলন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কৃষক লীগের পর আজ শনিবার আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন শ্রমিক লীগের ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলন। দুই বছরের স্থলে প্রায় সাত বছর পর আজ সকাল এগারোটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে এ সম্মেলন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে বিকেল তিনটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ও ঘোষণা করা হবে। জানা গেছে, কৃষক লীগের মতো জাতীয় শ্রমিক লীগও নতুন নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের সম্মেলনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ও ৯টি উপকমিটির নেতারা তাদের কাজ গুছিয়ে এনেছেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল সম্মেলন মঞ্চ ও প্যান্ডেল নির্মাণ ছাড়াও সম্মেলনস্থল ও আশপাশের সড়ক বর্ণাঢ্য সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সারাদেশে সংগঠনের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা থেকে ৮ হাজার কাউন্সিলর ও সমসংখ্যক ডেলিগেটস সম্মেলনে যোগ দেবেন। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতাসহ কয়েকজন বিদেশী অতিথি এতে উপস্থিত থাকবেন। আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর, আইটিসির এশিয়া প্যাসিফিকের সেক্রেটারি জেনারেলসহ কয়েক বিদেশী অতিথিকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ১৯৬৯ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত জাতীয় শ্রমিক লীগ আগে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বলে বিবেচিত হতো। তবে নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ-২০০৮’র বিধিমালা অনুযায়ী দলীয় গঠনতন্ত্র সংশোধন করায় এই সংগঠনসহ ছাত্রলীগ সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা হারায়। অবশ্য সংগঠন দুটি ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের মর্যাদা পাচ্ছে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই শ্রমিক লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক নেতা শুকুর মাহমুদ সভাপতি এবং জনতা ব্যাংক ট্রেড ইউনিয়নের নেতা সিরাজুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছরের জন্য বর্তমান কমিটি নির্বাচিত হলেও এবার দীর্ঘ সাত বছরের বেশি সময় পর জাতীয় সম্মেলন হচ্ছে। তবে শ্রম আইন অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে তিন বছর করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পরবর্তী নেতৃত্বে কারা আসছেন, এ নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। মূল দুটি পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্য পদেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম আলোচিত হচ্ছে। সংগঠনের বর্তমান সভাপতি শুকুর মাহমুদ একই পদে আবারও নির্বাচিত হতে চাইছেন। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নামও সভাপতি পদের আলোচনায় রয়েছে। এই পদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হচ্ছেন- বর্তমান কমিটির কার্যকরী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মন্টু, সহসভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, আমিনুল হক ফারুক, মোল্লা আবুল কালাম আজাদ ও জহিরুল ইসলাম চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে বর্তমান কমিটির এক ডজনের বেশি নেতা জোর লবিংয়ে নেমেছেন। এরা হচ্ছেন- বর্তমান কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান সিরাজুল ইসলাম, সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম মিল্কি, তোফায়েল আহমেদ, প্রচার সম্পাদক কে এম আজম খসরু, দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, শিল্প ও সাহিত্য সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব মোল্লা। আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত সাত বছরে যেসব শ্রমিক লীগ নেতা বিতর্কিত কিংবা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে, তাদের কাউকেই এবারের নতুন কমিটিতে রাখা হবে না। আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে পরিবর্তনের হাওয়া উঠেছে, শ্রমিক লীগও তার বাইরে নয়। আজকের সম্মেলন থেকে জাতীয় শ্রমিক লীগেরও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
×