ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুদের সচেতনতায় বিকজ উই কেয়ার

প্রকাশিত: ১২:৩২, ১২ নভেম্বর ২০১৯

শিশুদের সচেতনতায় বিকজ উই কেয়ার

সমাজসেবা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে বিকজ উই কেয়ার (ইবপধঁংব ডব ঈধৎব) এর বিকাশ। মূলত সমমনা স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মূল প্রতিষ্ঠাতা আনিকা সাবার হাত ধরেই এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটির পথচলার শুরু। শুরুর দিকে অন্তর্জালভিত্তিক কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকলেও আস্তে আস্তে এই প্রতিষ্ঠানের শুভ উদ্যোগ ও সমাজসেবামূলক কার্যক্রম বিকশিত হতে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের যৌন নির্যাতন ও সহিংসতাবিরোধী সচেতনতা কর্মশালা ছাড়াও শিশুদের রজঃচক্রকালীন সময়ে করণীয়তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ মানসিক বিকাশে কাউন্সেলিং এবং ১০ টাকার বিনিময়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন করে আসছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকার বাইরে বগুড়া জেলায় অবস্থিত তালোড়া সরকারী উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল স্কুলে যৌন নির্যাতন এবং পিরিয়ডকালীন করণীয় সম্পর্কে কর্মশালা আয়োজন করা হয় ২০১৮ সালে। এছাড়াও সংগঠনটি ঢাকায় অবস্থিত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত আরবান-স্লাম-আনন্দ স্কুলগুলোতে ভাল স্পর্শ - খারাপ স্পর্শবিষয়ক কর্মশালা ছাড়াও বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ‘হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’ এর প্রি-স্কুল ও কেজি ক্লাসের ১৮০ জন শিশুকে নিয়ে ভাল স্পর্শ খারাপ স্পর্শ বিষয়ক সচেতনতা কর্মশালা আয়োজন করে। যেখানে খেলার মাধ্যমে শিশুদেরকে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানসমূহ, শিশু সুরক্ষামূলক হেল্পলাইন নাম্বার ১০৯৮ সম্বন্ধে অবহিত করা হয় এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সচেতনতামূলক কার্টুন প্রদর্শন করা হয়। কর্মশালাটি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ ও পরিচালনা করেন ডাঃ সুস্মিতা জাফর, ডাঃ সুস্মিতা সরকার, দাদাভাই (অতনু অন্তু), আনিকা সাবা ও জোবায়দা ফাতেমা। কর্মশালাটি শিশুদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে বিকজ উই কেয়ার পরবর্তীতে আরও দুটি কর্মশালা পরিচালনা করে হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে। ১৫ অক্টোবর সকালে বিকজ উই কেয়ার এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দাদাভাই (অতনু অন্তু) এর পরিচালনায় ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণীর ৩৬৩ জন শিশুকে নিয়ে, শিশু নিরাপত্তা ও যৌন নির্যাতনবিরোধী সচেতনতা, রজঃচক্রকালীন সময়ে করণীয় এবং স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের উপকারিতা, ইন্টারনেট ও মোবাইল গেমের প্রতি আসক্তি ও মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি সাইকলজিক্যাল ফার্স্ট-এইড সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়ে থাকে। পুরো কর্মশালায় ডাঃ সুস্মিতা জাফর, ডাঃ সুস্মিতা সরকার, নিশাত সাইফ বাঁধন, শারমিন আক্তার, জোবায়দা ফাতেমা, রাবেয়া নিঝুম সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২৯ অক্টোবর ১ম ও ২য় শ্রেণীর ১৯৬ জন শিশুর সঙ্গে ভাল স্পর্শ-খারাপ স্পর্শ, শিশু নিরাপত্তা হেল্পলাইন, মোবাইল গেম আসক্তির ক্ষতিকারক দিক সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও কিছু গঠনমূলক খেলায় অংশগ্রহণ করানোর মাধ্যমে শিশুদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানসমূহ, শিশু সুরক্ষামূলক হেল্পলাইন নাম্বার ১০৯৮ সম্পর্কে অবহিত করা হয় এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সচেতনতামূলক কার্টুন প্রদর্শন করা হয়। কর্মশালায় সরাসরি অংশগ্রহণ ও পরিচালনা করেন সহ-প্রতিষ্ঠাতা জোবায়দা ফাতেমা, দাদাভাই (অতনু অন্তু) ও ডাঃ সুস্মিতা জাফর। বিকজ উই কেয়ারের প্রতিটি কর্মশালাতে অংশগ্রহণকারী শিশুদের দারুণ সাড়া পাওয়া যায়, যার ফলশ্রুতিতে শিশুদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং শিশুরা সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো সম্পর্কে তাদের অভিভাবকদেরকের অবহিত করে। পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের অনুরোধে বিকজ উই কেয়ার কে হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কর্তৃপক্ষ শিশুদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য এই কার্যক্রমটি পরবর্তীতে ও চালিয়ে যাবার অনুরোধ জ্ঞাপন করেন এবং লিখিত সম্মাননাসূচক প্রশংসা পত্র প্রদান করেন। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে বিকজ উই কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অতনু অন্তুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উনি জানান যে, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে যেহেতু এই স্বেচ্ছাসেবী সচেতনতামূলক কার্যক্রমের শুরু, তারা ভবিষ্যতেও এই কর্মশালা ঢাকা ও ঢাকার বাইরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তথা দেশব্যাপী পরিচালনা করে যাবেন। প্রয়োজনে যেকোনো আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবক অথবা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল আইডি : [email protected] অথবা ফেসবুক পেইজ ইবপধঁংব ডব ঈধৎব ঠিকানায়।
×