ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘মায়া’ দ্য লস্ট মাদার মুক্তিযুদ্ধের এক অনিবার্য অধ্যায়

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

 ‘মায়া’ দ্য লস্ট মাদার মুক্তিযুদ্ধের এক অনিবার্য অধ্যায়

গত কয়েকদিন ধরে দেশের বেশির ভাগ নিউজ পোর্টালে একটা সিনেমার নাম বিভিন্ন শিরোনামে খবর হচ্ছে। কবি ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী চিত্র পরিচালক মাসুদ পথিকের নতুন সিনেমা ‘মায়া’ দ্য লস্ট মাদার। দীর্ঘ সময় ধরে পরিচালক তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র দেশ-বিদেশের দর্শকদের জন্য নির্মাণ করেছেন। বছরের শেষ এবং বিজয়ের মাসে এই সিনেমা ঢাকাসহ দেশব্যাপী প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। মাসুদ পথিকের নতুন সিনেমা নিয়ে এমন খবর ইতোমধ্যে চাউর হয়েছে। নতুন সিনেমা, গল্প, বর্তমান সময়ের ব্যস্ততা এবং আগামীর চিন্তা নিয়ে এই গুণী মানুষের সঙ্গে কথা হয় আনন্দকণ্ঠের, লিখেছেন সব্যসাচী দাশ শুরুতে নতুন সিনেমা নিয়ে ব্যস্ততা কেমন? ব্যস্ততা তো একটু আছেই, নতুন সিনেমা সঙ্গে অন্যান্য কাজ বুঝতেই পারছেন। মুক্তির ডেট কি ঠিক হলো? সিনেমা মুক্তির ডেট ঠিক হয়ে আছে তবে সেটা আমার ভেতরে! আপনাকে এখন বলব না। তবে হ্যাঁ; বিজয়ের মাস ডিসেম্বর নিশ্চিত। সমগ্র দেশেই কি মুক্তি পাবে? হ্যাঁ, আমরা চেষ্টা করছি ঢাকাসহ সারাদেশে হল পাবার। আশা করি পেয়ে যাব। সেন্সর অনুমতি? তাও পেয়ে যাব। মাসুদ পথিক নামে বা পরিচয়ে একজন কবি হলেও চলচ্চিত্র নির্মাণ তার ভালবাসার পরিচয়। জানতে চেয়েছিলাম কোন পরিচয় আপনাকে ভাল লাগায়? উত্তরে বলেছিলেন, আমি প্রথমত কবি, দ্বিতীয়ত কবি তারপর চিত্রপরিচালক সত্যি বলতে কি আমি যখন কোন কবিতা বা শিল্পকর্ম অনুধ্যানে থাকি তখন তার ভেতর নতুন কোন গল্পের ইঙ্গিত পেলে ভেতরে ভেতরে চলচ্চিত্রের প্রস্তুতি নেই। সত্যি বলতে আমার কাছে চলচ্চিত্র এবং কবিতা পৃথক কিছু নয়, দুটোই একে অপরের পরিপূরক। এবার আসি আপনার সিনেমা প্রসঙ্গে। প্রথম যে সিনেমা আপনি নির্মাণ করেছিলেন সেটা ছিল কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা অবলম্বেনে ‘নেক্কাবরের মহাপ্রয়াণ’ এবার যতদূর জানি বিখ্যাত চিত্রশিল্পী শাহবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম ‘নারী’ এবং কবি কামাল চৌধুরীর কবিতা ‘যুদ্ধশিশু’ অবলম্বনে আপনার নতুন সিনেমা ‘মায়া’ দ্য লস্ট মাদার এই সিনেমায় দর্শকদের জন্য কি থাকছে। মাসুদ পথিক; আমি মূলত এই দুটি শিল্পকর্ম থেকে সিনেমায় দেখাতে চেষ্টা করেছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে। মুক্তিযুদ্ধে নারী নির্যাতন এবং যুদ্ধশিশুর সীমাহীন অনিশ্চিয়তাকে। আসলে ‘মায়া’ দ্য লস্ট মাদার, চলচ্চিত্র আমাদের শেকরের গল্প। দেশের সবশ্রেণী দর্শকদের কাছে একটা গভীর বার্তা পৌঁছে যাবে। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন তাদের সম্পর্কে আপনার অভিব্যক্তি? সবাই ভাল করেছে তবে, দুজনের কথা না বললেই নয়, এই সময়ের দেশ-বিদেশ খ্যাত অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি এবং মুমতাজ সরকারের কথা উল্লেখ করা দরকার। প্রথমত, জ্যোতি একজন ন্যাচারাল অভিনেত্রী আবহমান বাংলার প্রকৃতির সঙ্গে জ্যোতির রূপ এবং অভিনয় দারুণভাবে সম্মিলন ঘটেছে। অন্যদিকে আর এক শক্তিশালী চরিত্রে মুমতাজ সরকার অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। শিল্প-সাহিত্যনির্ভর চলচ্চিত্র অতীতে অহরহ দেখা গেলেও বর্তমানে খুব একটা নেই বললেই চলে, সেদিক থেকে আপনার চলচ্চিত্র নির্মাণ শিল্প কেন্দ্রিক ভবিষ্যতে এমন শিল্প-সাহিত্যনির্ভর সিনেমা নির্মাণের পরিকল্পনা আছে? অবশ্যই আছে। আমার এই সিনেমার পরই অন্য গল্পের কাজ শুরু করব। আশা করি আগামী বছর আমার আরও একটি সিনেমা আসবে। বিদেশের উৎসবে পাঠানোর কোন পরিকল্পনা? অবশ্যই আছে। বাংলাদেশে মুক্তির পর এই সিনেমা সর্বাধিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পাঠানোর পরিকল্পনা ইতোমধ্যে আমরা করে ফেলেছি। সিনেমার টিজার এবং পোস্টার নিয়ে কোন বিতর্কের মধ্যে পড়েননি? হ্যাঁ ইতোমধ্যে যা আঁচ পেয়েছি তাতে করে আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই আমাকে নিয়ে যড়যন্ত্র হচ্ছে। তবে ভয় পাই না। জন্মেছি যখন মরতে তো হবেই। তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনার সিনেমার যে টিজার বা পোস্টার প্রকাশিত হয়েছে এখানে কোন বিতর্কিত বিষয় নেই, যা দেখিয়েছেন শিল্পের এবং গল্পের খাতিরে? হ্যাঁ একদমই তাই। দেখেন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকসেনারা বাংলার নারীদের ওপর যে পাশবিক অত্যাচার করেছে তা আমরা কেউই ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সুতরাং সেসব সীমাহীন পাশবিকতা ভুলে গেলে চলবে না। ধন্যবাদ।
×