ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও তিশা

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

 আবারও তিশা

২০০৯ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’র মাধ্যমে প্রথমবার বড় পর্দায় নিজেকে মেলে ধরেন নন্দিত অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। তবে অভিনয়ে নিয়মিত থাকলেও প্রথম সিনেমার পর খুব কমই বড় পর্দায় তাকে পাওয়া গেছে। গত ১০ বছরে তিশার মাত্র ৭টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছে একটি। এদিকে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। এবার পাচ্ছেন হালদা সিনেমায় অভিনয়ের জন্য, তাও আবার সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার। তারও আগে অস্তিত্ব সিনেমার জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন। অন্যদিকে প্রথমবার সিনেমার প্রযোজক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করছেন। তিশা ব্যস্ত আছেন পরিবার নিয়ে। দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন তিশা। দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন। অনুভূতি কেমন? ‘খুবই ভাল লাগছে। যে কোন পুরস্কারই ভাললাগার বিষয়। তবে একজন শিল্পী পৃথিবীর যে কোন পুরস্কার পান না কেন তার চাওয়ার থাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। দ্বিতীয়বারের মতো পাচ্ছি খুবই ভাল লাগছে। আমিও যখন শুনেছি হালদা সিনেমার জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পুরস্কারটি পাচ্ছি, তখন থেকেই অন্যরকম আনন্দ কাজ করছে। অনেক খুশি আমি।’ সিনেমাটি করার সময় কি পুরস্কার প্রাপ্তির কথাটি মাথায় ছিল? ‘শিল্পীর কাজ অভিনয় করা। পুরস্কারের কথা ভেবে কোন শিল্পী কাজ করেন না। আমিও করি না। ভাল স্ক্রিপ্ট পেলে তা নিয়ে থাকি। কোন কাজ করার সময় পুরস্কারের কথা চিন্তা করে কাজ করি না। সর্বদা চেষ্টা থাকে কাজটি কিভাবে ভাল করা যায়। যখন কাজটি দর্শক গ্রহণ করে এবং পুরস্কার পাই তখন অসম্ভব ভাললাগে।’ বড় কোন প্রাপ্তি একজন শিল্পীকে কতটা দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়? ‘অনেকখানি দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। কাজের জন্য প্রাপ্তি ঘটলে আরও ভাল কাজ করার জন্য প্রত্যাশা ও দায়িত্ব বেড়ে যায়। এটা আমার বেলায় ঘটে। নিজের প্রতি আস্থাটাও বাড়ে।’ বড় পর্দায় সাফল্য পেলেও অনিয়মিত তিশা, মনে করেন যতটুকু বড় পর্দায় কাজ করছেন সেটাই যথেষ্ট তার জন্য। এদিকে নতুন সিনেমার ব্যাপারে কথা হচ্ছে। কোনটাই ফাইনাল হয়নি। খুব শীঘ্রই নতুন খবর দিতে পারবেন বলে জানান। আগামী ১৫ নবেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে তিশা অভিনীত একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়া ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ সিনেমাটি। এরই মধ্যে ছবিটি ২৩টি আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে। ১১ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা তৈরি করেছেন ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ ছবিটি। ১১ জন তরুণ নির্মাতা হলেন- গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, মাহমুদুল ইসলাম, মীর মোকাররম হোসেন, রাহাত রহমান, রবিউল আলম, সৈয়দ সালেহ আহমেদ সোবহান, সৈয়দ আহমেদ শাওকী, তানিম নূর, তানভীর আহসান, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় ও নুহাশ হুমায়ূন। এই একটি ছবিতে অভিনয় করেছেন ৫৪ জন জনপ্রিয় বাংলাদেশী তারকা। দেখা যাবে ফজলুর রহমান বাবু, নুসরাত ইমরোজ তিশা, অর্চিতা স্পর্শিয়া, এ্যালেন শুভ্র, ইরেশ যাকের, মোস্তফা মনোয়ার, মনোজ প্রামাণিক, ইন্তেখাব দিনার, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইয়াশ রোহান, রওনক হাসান, শ্যামল মাওলা, শেহতাজসহ আরও অনেকে। ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ প্রসঙ্গে তিশা বলেন, ‘পুরো গল্পটি একেবারে নতুন। দর্শক যখন দেখবে সবধরনের ফ্লেবার পাবে। বাংলাদেশে প্রথমবার এ রকম একটি আয়োজন হয়েছে। সেখানে আমি ছোট একটি অংশে কাজ করেছি। কাজটি করতে ভাল লেগেছে। চলচ্চিত্রের মূল বিষয় রাজধানী ঢাকা। এই চলচ্চিত্রে উঠে এসেছে ঢাকার নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাপন, তাদের সংগ্রাম আর বেঁচে থাকার নিরন্তর যুদ্ধ। সেই সঙ্গে ঢাকার নিজস্ব সংস্কৃতিও ফুটে উঠেছে সেখানে। ১১ জন পরিচালক, অর্ধশতাধিক অভিনয়শিল্পী এবং শতাধিক কলাকুশলীর এই যে সহযোগিতা, দেশের সিনেমার ইতিহাসে বড় পর্দায় এত বৈচিত্র্যময় প্রজেক্ট আগে দেখা যায়নি। খুবই সাধারণ একটা গল্পকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফিল্মটি বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয়েছে। ছবিটি দর্শকের জন্য ভিন্ন অভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে আসবে।’ দর্শকদের বলব ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ সিনেমাটি দেখার জন্য। দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখতে হবে, তারা যদি সিনেমা বাঁচাতে চায়। কারণ সিনেমা বানানোই হয় দর্শকদের জন্য। প্রথমত প্রেক্ষাগৃহে এসে দর্শকদের সিনেমা দেখতে হবে। দ্বিতীয়ত, ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ এটি দর্শকদের জন্য এবং তারা সিনেমাটিতে নিজেদের খুঁজে পাবেন, মেসেজসহ সুন্দর একটি গল্পও দেখতে পাবেন।
×