ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মণিরামপুরে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

মণিরামপুরে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের মণিরামপুরের ভবদহ এলাকায় ৬ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট-খোয়া, বালু ব্যবহার করে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের ক্ষমতাধর এক এসও (তদারকি কর্মকর্তা)’র হাত করে এ কাজের নয় ছয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দরপত্র অনুয়ায়ী কাজের মান ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, সরকার বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যশোরের মণিরামপুর-নওয়াপাড়া-কুলটিয়া সড়কের প্রশস্থকরণের উদ্যোগ নেয়। ৫ দশমিক ৪১ কিলোমিটার সড়কের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে ৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। মেসার্স মতিউর রহমান নান্নু জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়ে চলতি বছরের ২৮ মার্চ থেকে কাজ শুরু করে। দরপত্র অনুযায়ী সড়কের বেজে .৫০ মিলিমিটার এফএম মানের বালু রুলারে কমপ্যাকশন (সন্নিবিষ্ট) করার পর ৪৫০ মিলিমিটার হলেই ৮ ইঞ্চি সাববেজ করে পিকেট ইটের খোয়া দিয়ে ৬ ইঞ্চি ম্যাকাডম করার কথা রয়েছে। কিন্তু সরেজমিন গিয়ে দরপত্র অনুযায়ী কাজ না করার চিত্র চোখে পড়েছে। বেজে দেয়া হয়েছে নিম্নমানের বালু। ওই বালু রুলারে কমপ্যাকশন না করেই সড়কের আগের ম্যাকাডমের খোয়া-বালি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে ট্রলিতে তুলে দেয়া হচ্ছে। সড়কের আরেক প্রান্তে সংশ্লিষ্ট অফিসের ফ্লাড প্রকল্পের কর্মকর্তা রেজার উপস্থিতিতে ইটভাটায় ভাঙ্গানো নিম্নমানের খোয়া ট্রাকে এনে ম্যাকাডম করার চিত্র চোখে পড়ে। এক প্রশ্নের জবাবে রেজা বলেন, সব কিছু সংশ্লিষ্ট কাজের এসও ( তদারকি কর্মকর্তা) গাউছুল আজম ভালো বলতে পারবেন। কর্মরত শ্রমিক আজহার আলী বলেন, ট্রলিতে তুললেই মিক্সিং হচ্ছে, যা এসও গাউছুল আজমের উপস্থিতিতে ল্যাবটেস্টের পর কাজ করা হচ্ছে। অবশ্য ওই শ্রমিক এটিকে ভুল হিসেবে স্বীকার করেন। কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবি করেন এসও গাউছুল আজম। তিনি গত ২৬ বছর ধরে একই কর্মস্থলে আছেন। তিনি এতটাই ক্ষমতাধর বনে গেছেন যে, অফিসের সব কিছু তার নিয়ন্ত্রণেই চলে। বরাবরই তিনি বড় প্রকল্পের এসও’র দায়িত্বও বাগিয়ে নেন। তার ভয়ে বড় কর্তা থেকে অফিসের কর্মচারীরা থাকেন তটস্থ। তার বিরুদ্ধাচরণ করলেই বদলি হতে হয় বলে প্রচার আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন। অবশ্য দক্ষ বলেই এখানে আছেন- দাবি করেন তিনি। প্রণব মল্লিক, রঞ্জিত মল্লিক, শহিদুলসহ উপস্থিত একাধিক স্থানীয়দের দাবি, বন্যা হলে সড়কে কোমর পানি উঠে ফলে নির্মাণে ত্রুটি হলে ভবিষ্যতে তাদেরই ভোগান্তি হবে। উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, কাজে অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ইফতেখার আহম্মেদ বলেন, কোন ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।
×