ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় সিভিল সার্জন ও ডাক্তারের অপসারণ দাবি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

নেত্রকোনায় সিভিল সার্জন ও ডাক্তারের অপসারণ দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ইয়াসমিন আক্তার (২৮) নামে আরও এক প্রসূতি মারা গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ইয়াসমিন জেলা সদরের দক্ষিণ কাটলী এলাকার লোকমান মিয়ার স্ত্রী। তার স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসক ও নার্সদের ভুলের কারণেই তার মৃত্যু ঘটেছে। এদিকে ইয়াসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার বাসিন্দারা নেত্রকোনা মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ রঞ্জন কুমার কর্মকার এবং সিভিল সার্জন ডাঃ তাজুল ইসলামের অপসারণ দাবি করে আজ বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মানববন্ধন করেছেন। জানা গেছে, ইয়াসমিন আক্তার গত মঙ্গলবার প্রসব ব্যাথা নিয়ে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ওইদিন দুপুরে গাইনী চিকিৎসক ডাঃ রঞ্জন কুমার কর্মকার তার অপারেশন করেন। রাতে তার রক্তচাপ ও স্পন্দন কমে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। ইয়াসমিনের আত্মীয় নেত্রকোনা পৌরসভার কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন শেখ অভিযোগ করেন, অপারেশনের সময় চিকিৎসক এবং নার্সদের ভুলের কারণেই অবস্থার অবনতি ঘটে তার মৃত্যু হয়েছে। কাউন্সিলর হেলালের নেতৃত্বে স্থানীয়রা বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মানববন্ধন করেছেন। এ সময় তারা নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরে সিভিল সার্জন ডাঃ তাজুল ইসলাম এবং সহকারী অধ্যাপক ডাঃ রঞ্জন কর্মকারের অপসারণ দাবি করেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডাঃ রঞ্জন কুমার কর্মকার বলেন, ‘অপারেশনে কোনো ত্রুটি হয়নি। সুষ্ঠুভাবে অপারেশনের অনেক পরে তিনি অসুস্থতা অনুভব করলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরদিন সেখানে তার দ্বিতীয় দফা অপারেশন হয়। এরপর কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছেÑ ময়মনসিংহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবে।’ জানা গেছে, গত মঙ্গলবার গাইনী চিকিৎসক ডাঃ রঞ্জন কর্মকার ও ডা. জান্নাত আফরোজ নূপুর মোট পাঁচজন গর্ভবতীর সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় আবেদনবিদ (এনেস্থেটিস্ট) হিসেবে ছিলেন ডাঃ প্রীতি রঞ্জন। ওই পাঁচ প্রসূতির মধ্যে লিমা চৌধুরী নামে একজন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে রক্তক্ষরণে মারা যান। আর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরদিন মারা যান ইয়াসমিন আক্তার। লিমার পিতা জিয়া উদ্দিন চৌধুরীও এ ব্যাপারে কর্তব্যরত নার্স এবং আয়াদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সিভিল সার্জন ডাঃ তাজুল ইসলাম বলেন, লিমার মৃত্যুর ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য সার্জারী কনসালট্যান্ট ডাঃ শফিকুর রহমানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে ইয়াসমিন আক্তারের মৃত্যুর কারণ ময়মনসিংহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবে। নেত্রকোনা হাসপাতালে অপারেশনের পরবর্তীতে অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় এবং শ^াসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে ময়মনসিংহে রেফার্ড করা হয়েছিল।
×