ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ২/৩ দিন লাগবে ॥ উল্লাপাড়ায় রেলপথ মন্ত্রী

বি’বাড়িয়া ও সিরাজগঞ্জের ট্রেন দুর্ঘটনা এক নয়, তদন্ত শুরু

প্রকাশিত: ১০:২৭, ১৬ নভেম্বর ২০১৯

 বি’বাড়িয়া ও সিরাজগঞ্জের ট্রেন দুর্ঘটনা এক নয়, তদন্ত শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ ভ্রমণের নিরাপদ বাহন ট্রেনও এখন নিরাপদ নয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার পর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সংগঠিত দুর্ঘটনায় ভ্রমণকারীদের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। উল্লাপাড়ায় ট্রেনের লাইনচ্যুতি ও আগুন লাগার ঘটনায় কোন প্রাণহানি না ঘটলেও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার হয়েছিল যাত্রীরা। সিরাজগঞ্জ-ঈশ্বরদী রেলপথের উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ মুখে বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর এক্সপ্রেস নামক ট্রেন দুর্ঘটনার পর ট্রেন চলাচলের এক ও দুই নম্বর লাইন এখন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রেলের সিøপার ভেঙ্গে গেছে। লোহার রেলও বাঁকা হয়ে উপড়ে পড়েছে। বিকল্প পথেই চলছে এখন ট্রেন। তবে খুব সাবধানে, ধীরগতিতে। কেন এই দুর্ঘটনা তা নির্ণয়ে মন্ত্রণালয়, রেল অধিদফতর ও স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পৃথক তিনটি তদন্ত টিম শুক্রবার সকাল থেকেই কাজ শুরু করেছেন। শুক্রবার বিকেলে রেলপথমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম, সকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জল হোসেন, রেলওয়ে বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মাদসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দুর্ঘটনাটি কোন নাশকতা কি-না তা খতিয়ে দেখছে তদন্ত টিম। উল্লাপাড়া থানা পুলিশ ইতোমধ্যেই রেল বিভাগের দুই খালাসিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এরা হচ্ছে আরিফ এবং আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, উদ্ধারকারী ট্রেন জেটি লাগিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগি ও ইঞ্জিন সরানোর কাজ শুরু করেছেন। রেলের কর্মীরাও রেলপথের রেল ও সিøপার সরানোর কাজ করছে। তবে বিধ্বস্ত ট্রেনের বগি ও রেলপথ পরিষ্কার করতে আরও দুই/তিনদিন সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই বিধ্বস্ত ট্রেনের বগিগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে সদ্য আমদানি করা হয়েছিল। আমদানি করা বগির টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০ কোটি টাকা হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে রেলপথমন্ত্রী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সংগঠিত ট্রেন দুর্ঘটনার স্থান পরির্দশন করে সাংবাদিকদের বলেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেন দুর্ঘটনা এবং সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা এক রকম নয়। হঠাৎ এখানে কেন ট্রেনে আগুন ধরল বিষয়টি ভাবাচ্ছে। কারণ এখানে মিটার গেজের লাইন একটাই এবং তা ক্লিয়ার ছিল। তাই নাশকতা কিনা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালেও এই এলাকায় ট্রেন জ্বালিয়ে দিয়ে নাশকতা চালানো হয়েছিল। সে ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- হয়েছে কিনা সে ধারণাও উড়িয়ে দিচ্ছি না। ইঞ্জিনে তেল থেকে আগুন ধরতে পারে। তবে বগিগুলোতে কেন আগুন লাগল। আবার যাও বা লাগবে ভেতরে কেন লাগবে। সেজন্যই নাশকতার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না। এ বিষয়টি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুঁজে বের করবে। এছাড়া আমাদের কারও গাফলতি হয়েছে কিনা তদন্তে ধরা পড়লে তারও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই দুর্ঘটনা কোন নাশকতা কি-না, কিংবা ভুল সিগনালের কারণে ঘটেছে কি-না তা খতিয়ে দেখার জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। রেলপথমন্ত্রী আরও বলেন খুব শীঘ্রই রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এদিকে সকালে রেলপথ বিভাগের সচিব মোফাজ্জল হোসেন, সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদসহ রেল বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রেল বিভাগের সচিব সাংবাদিকদের বলেছেন এই দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য মন্ত্রণালয়, রেলপথ অধিদফতর এবং সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসকের পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই কাজও শুরু করেছেন।
×