ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাতভর শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ, আহত ৩৮

হংকংয়ে ক্যাম্পাস রণক্ষেত্র

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

হংকংয়ে ক্যাম্পাস রণক্ষেত্র

হংকংয়ে সোমবার দিনটি শুরু হয় সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে। ভোরে পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের পুলিশের সঙ্গে গণতন্ত্রপন্থী শিক্ষার্থীদের তীব্র সংঘর্ষ হয়। এ সময় ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনী। কিছু শিক্ষার্থী বাইরে বের হতে চাইলে দাঙ্গা পুলিশ তাদের ওপর রাবার বুলেট, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরা পাল্টা পেট্রোলবোমা ছোড়ে ও প্রধান গেটে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেখানে আটশ’র বেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রবিবার রাতভরও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ চলে। আল-জাজিরা, সিএনএন ও গার্ডিয়ান। সোমবার সকালে আন্দোলনকারীরা অবরুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। ওই সময় কয়েক শ’ আন্দোলনকারীর পেট্রোলবোমা ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে পুলিশের অভিযানের জন্য অপেক্ষা করছিল বলে রয়টার্স জানিয়েছে। এভাবেই পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সৃষ্ট অচলাবস্থা দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। রাতে সংঘর্ষের সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এর আগে রবিবার বিকেলে আন্দোলনকারীদের নিক্ষিপ্ত তীরে এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। রবিবার রাতের সংঘর্ষে ৩৮ জন আহত হয়েছেন বলে নগর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। পুলিশের জলকামান থেকে ছিটানো পানি গায়ে পড়ার পর কয়েকজন আন্দোলনকারীর শরীর পুড়ে যেতে দেখেছেন রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক। রাসায়নিক ব্যবহারজনিত কারণে এমনটি ঘটেছে বলে দাবি করেছেন তিনি। কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান এড়াতে আন্দোলনকারীরা গ্যাস মুখোশ পরে ও সামনে ছাতা ধরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে পুলিশ বহু আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রফেসর জিং গুয়াং ত্যাং এক ভিডিওবার্তায় জানান, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্যাম্পাস ছাড়তে চাইলে তিনি সর্বাত্মক সাহায্য করবেন। রবিবার সারারাত পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের ইঁদুর-বিড়াল খেলাই চলে কিন্তু শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। প্রায় ছয় মাস ধরে চলা হংকংয়ের অস্থিরতায় প্রথমবারের মতো তাজা গুলি ব্যবহার করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে পুলিশ। দাঙ্গাকারীরা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার অব্যাহত রাখলে এমনটি করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ের অন্য এলাকার মধ্যে ব্যাণিজ্যিক এলাকা নাথান রোডে ভোরে কালো পোশাক পরা আন্দোলনকারীদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। এ সময় তাদের অনেকেই পেট্রোলবোমা বহন করছিল। পরে সকালে দাঙ্গা পুলিশ এলাকাটিতে গিয়ে হাজির হয়। শহরটির অন্যতম ব্যস্ত ওই পর্যটন ও ব্যাণিজ্যিক এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ রাস্তা থেকে ছাতা, ইট ও রাস্তায় ফেলে রাখা বিভিন্ন আসবাবপত্র সরানো শুরু করে। কওলুন উপদ্বীপের বহু সড়ক ও কিছু ট্রেন সার্ভিস এদিনও বন্ধ থাকে। সব স্কুলও বন্ধ থাকে। এক সময়ের ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকং এখন চীনের অংশ। ‘এক দেশ, দুই নীতি’র অধীনে কিছু মাত্রায় স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে হংকং।
×