ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উন্নয়ন প্রকল্পে ধীরগতি

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

উন্নয়ন প্রকল্পে ধীরগতি

আবু জাফর সাবু, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধা পৌরসভার দীর্ঘ প্রত্যাশিত শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পরিত্যক্ত ঘাঘট লেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। সম্প্রসারিত বাজেটের অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় প্রকল্পটির কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের একটি প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালে প্রকল্পটির বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। এজন্য ব্যয়বরাদ্দ করা হয় ১৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় লেকটির ভাঙ্গন রোধকল্পে দু’পাশে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ, ব্রিজ ও শ্মশানঘাটে ৫৪ ও ৪৫ মিটার দীর্ঘ দুটি আরসিসি ব্রিজ নির্মাণ এবং শহরের ডেভিড কোম্পানিপাড়া-ব্রিজ রোড, এসিল্যান্ড অফিস সংলগ্ন এ্যাকোয়াস্টেটপাড়া ও শ্মশানঘাটে বসার দুটি পাকা বেঞ্চ ও নদীর তলদেশ পর্যন্ত প্রশস্ত সিঁড়িসহ চারটি ঘাট নির্মাণ ও ঘাটগুলোতে উন্নতমানের নান্দনিক আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়া হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চারটি ঘাট নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ব্রিজ দুটি নির্মাণের কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। তদুপরি লেকের দেয়াল নির্মাণের কাজ এ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে শতকরা ২২ ভাগ। এছাড়া ঘাট সংলগ্ন সড়ক উন্নয়ন ও আলোকসজ্জার কাজ শতকরা ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকালে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রকল্পের আওতায় আরও কিছু জরুরী কাজ একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ায় এলজিইডির সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একটি সম্প্রসারিত বাজেট সরকারের নিকট দাখিল করেছে। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বমোট ৭৫ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সম্প্রসারিত এই প্রকল্পের আওতায় ঘাঘট লেক সংলগ্ন এলাকায় একটি শিশু পার্ক, সড়ক, নদীর দু’পাড়ে পানি নিষ্কাশনের দুটি ড্রেন নির্মাণ এবং ড্রেনের ওপর ওয়াকওয়ে নির্মাণ, লেকের দু’পাশে নান্দনিক বাগান সৃজন, উন্নত প্রযুক্তির আলোকসজ্জায় সজ্জিতকরণ, লেকের দু’পাশে আরও বসার বেঞ্চ নির্মাণ করা এবং লেকের পানি সব সময় বিশুদ্ধ রাখার জন্য একটি পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে। সম্প্রসারিত এই প্রকল্পের অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ না করায় ঘাঘট লেক প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ এখন স্থগিত হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, গাইবান্ধা তিস্তার শাখা নদী হিসেবে এই ঘাঘট নদীটি রংপুর পেরিয়ে গাইবান্ধায় প্রবেশ করে এবং জেলা শহরের মাঝ বরাবর প্রবাহিত হয়ে গাইবান্ধার গিদারী ইউনিয়নের বাগুড়িয়া হয়ে ব্রহ্মপুত্রে গিয়ে পড়ে। শহরের মাঝ বরাবর প্রবাহিত হওয়ায় ঘাঘট নদীটির অকালবন্যা, নদী ভাঙ্গন, শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা সঙ্কটসহ নানা দুর্ভোগের কবলে পড়তে হয় গাইবান্ধা পৌরবাসীকে। এমতাবস্থায় পৌর এলাকার ডেভিড কোম্পানিপাড়া ও শ্মশানঘাট এলাকায় নদীটির মুখ বন্ধ করে দিয়ে ডেভিভ কোম্পানিপাড়া থেকে পূর্বকোমরনই পর্যন্ত লুপকাটিং করে ঘাঘট নদীর মূল প্রবাহটিকে শহরের বাইরে দিয়ে প্রবাহের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। ফলে পরিত্যক্ত এই ঘাঘট লেকটিতে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং শহরের সৌন্দর্যকে ব্যাহত করে। এমতাবস্থায় পরিত্যক্ত লেকটিকে উন্নয়ন করে শহরের নান্দনিক সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি এবং বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার এই উদ্যোগ নেয়া হয়।
×