ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আরণ্যকের দর্শকনন্দিত নাটক ‘ময়ূর সিংহাসন’ মঞ্চস্থ

প্রকাশিত: ১১:১১, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

আরণ্যকের দর্শকনন্দিত নাটক ‘ময়ূর সিংহাসন’ মঞ্চস্থ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আরণ্যক নাটক্যদলে দর্শকনন্দিত নাটক ময়ূর সিংহাসন। সাম্প্রদায়িকতা ও সামরিক শাসনের ভয়াবহতা উঠে এসেছে নাটকটির ঘটনাপ্রবাহে। ১৯৯১ সালে প্রযোজনাটি মঞ্চে আসার পর থেকেই দারুণভাবে সমাদৃত হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এটির শততম প্রদর্শনী হয়। এরপর নানা কারণে নাটকটির মঞ্চায়নে ছিল দীর্ঘ বিরতি। সেই বিরতির অবসান ঘটিয়ে এ বছর থেকে আবার শুরু হয়েছে এটির নিয়মিত প্রদর্শনী। সোমবার হেমন্ত সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে নাটকটির ১১৬তম মঞ্চায়ন হয়। মান্নান হীরার রচনায় এটির নির্দেশনা দিয়েছেন শাহ আলম দুলাল। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নাট্যকার মান্নান হীরা বলেন, আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, ক্ষমতার নিকটবর্তী মানুষরাই প্রকৃত দেশপ্রেমিক। কিন্তু দল, ক্ষমতা এসবের বাইরে যে বিশাল জনগোষ্ঠী তাদের মধ্যে কোথায়-কীভাবে দেশপ্রেমের অগ্নিশিখা প্রজ্বলিত রয়েছে তা দেখার অভ্যাস আমাদের গড়ে ওঠেনি বললেই চলে। অথচ কত নিভৃত পল্লীতে দেশপ্রেমকে বুকে বেধে কত বীর নীরবে শাসকের হাতে নিগৃহীত হয়েছে, আজও হচ্ছে, তার হিসাব আমরা কজন রাখি। সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের এ ভূখ-ে বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়টাতেই গড়ে ওঠে গণতন্ত্রের দাবি, ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা। আবার একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প তৎকালীন সামরিক শাসক ছড়িয়ে দিয়ে রচনা করেছে কালো অধ্যায়। সেই ভয়ানক আগুনে আজও জ¦লছে মানুষ, জ্বলছে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি। যার ভয়াবহ দায় আমাদের আজও বহন করতে হচ্ছে। নাটকের নেপথ্যের সূত্র ধরে নাট্যকার বলেন, মফস্বল শহরে কেটেছে আমার শৈশব ও কৈশোর। সেই বয়সে নিমজ্জিত ছিলাম নাট্যকর্মের মাঝে। তখনকার দেখা দেবতাতুল্য নাট্যাভিনেতাদের জীবনকর্ম, বিশ্বাস, ত্যাগ-তিতিক্ষা আজও অন্তরে জ্বলছে। সবাই মিলে মঞ্চের পাদপ্রদীপে যখন উচ্চারণ করতেন দেশপ্রেমের বাণী তখন তার ঢেউ গিয়ে লাগত পথে-প্রান্তরের গণতন্ত্র আর স্বায়ত্তশাসনের রাজনীতিতে। অথচ সেই আলো জ্বালানো মানুষদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে অনেকের অলক্ষ্যে ঘটে যেত বড় বড় ট্র্যাজেডি। তার ইতিহাস আমরা রচনা করতে পারিনি। সেসব দেশপ্রেমিক মানুষের স্মরণে নির্মিত এই নাটক। প্রযোজনাটিতে বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন মামুনুর রশীদ, তমালিকা কর্মকার, মোমেনা চৌধুরী, আমিন আজাদ, মান্নান হীরা, আমানুল হক হেলাল, আমিনুল হক, আরিফ হোসেন আপেল, সাজ্জাদ সাজু, কামরুল হাসান, দিলু মজুমদার, সাঈদ সুমন প্রমুখ। কেশবেন্দ্র রায় স্মরণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নৃত্য সংগঠন স্পন্দন স্মরণ করল শিল্পপতি কেশবেন্দ্র রায় চৌধুরীকে। সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সজ্জিত এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন বিশিষ্ট জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, সঙ্গীতশিল্পী তপন চৌধুরী, ফেরদৌস আরা, অনিমা মুক্তি গোমেজ, তানজিনা তমা ও নৃত্যশিল্পী অনিক বোসসহ অনেকেই। স্মৃতিচারণ শেষে স্পন্দনের পরিবেশনায় অনিক বোসের পরিচালনায় পরিবেশিত হয় নান্দনিক নৃত্যানুষ্ঠান। বটতলার রঙ্গমেলা উৎসবে স্পেনের নাটক মঞ্চস্থ ঢাকার নাট্য সংগঠন বটতলার আয়োজনে চলছে ‘রঙ্গমেলা’ শীর্ষক নাট্যোৎসব। সোমবার ছিল উৎসবের তৃতীয় দিনের আয়োজন। এতে প্রদর্শিত হয় নাটক। আগারগাঁও’র মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে সন্ধ্যা সাতটায় মঞ্চস্থ হয় স্পেনের নাট্যদল ‘মুন প্যালেস’ এর পরিবেশনায় ‘ডিলেমাস উইথ মাই ফ্লামেনকো টেইলকোট’। ৭০ মিনিট সময়ব্যাপ্তী নাটকটিতে অভিনয় করেন বালেরিয়া তাহেরো নাবাস। একজন নৃত্যশিল্পী নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এই নাটকের মূল উপজীব্য। গল্পটি ইসাবেল ভালদেরামা’র- যিনি ‘সোনালী নক্ষত্র’ নামে পরিচিত, তার জীবনকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে এ নাটক। তার অভিজ্ঞতা এবং নৃত্য ও তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ গল্প নিয়ে তৈরি এ নাটকে ফ্ল্যামেনকো নাচ নিয়ে কি করে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে তা বলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রঙ্গমেলার চতুর্থ দিনের আয়োজনে সন্ধ্যা ৬টায় নাদিম মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করবে গানের দল ‘সমগীত’। এরপর সন্ধ্যা সাতটায় নেপালের আরোহণ থিয়েটার মঞ্চস্থ করবে নাটক ‘৪.৪৮ সাইকোসিস’। এদিন নেপথ্য শিল্পীর সম্মাননা জানানো হবে রূপসজ্জা শিল্পী আলী বাবুলকে। রঙ্গমেলার উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী হায়দার বলেন, ‘মোহাম্মদপুর, ধানম-ি, মিরপুর, শ্যামলী, আগারগাঁও এলাকার মানুষেরা আসছেন রঙ্গমেলায়। অনেক নতুন দর্শক দেখছি, যারা নিয়মিত নাটক দেখেন না। রঙ্গমেলার মধ্য দিয়ে নতুন দর্শক তৈরি হচ্ছে।
×