ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইডেনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে অগ্নিপরীক্ষা!

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

ইডেনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে অগ্নিপরীক্ষা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইন্দোর টেস্টে বাউন্স তেমন সামলাতে হয়নি। মোহাম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদবরা গতি আর সুইংয়েই কাত করে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের। তাতে করে ইনিংস ও ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। খেলাও তিনদিনেই শেষ হয়ে গেছে। এবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি শুক্রবার শুরু হবে। এই টেস্ট দিবারাত্রিতে এসজির গোলাপি বলে খেলা হবে। যে বলটি নাকি সুইংয়ের সঙ্গে প্রচুর বাউন্সও করে। আর এই অধিক বাউন্স সামলাতে হবে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের। তাতে করে ইডেন টেস্টে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের সামনে মহাবিপদই অপেক্ষা করছে। এখনও বাংলাদেশ ও ভারত দল ইন্দোরেই আছে। আজ দুইদলের ক্রিকেটাররা দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু কলকাতায় আসবেন। কলকাতায় দুইদিন অনুশীলন করে প্রথমবারের মতো দিবারাত্রির টেস্টে খেলতে নামবেন। দুপুর দেড়টায় শুরু হবে টেস্টটি। কলকাতায় অনুশীলন শুরুর আগে ইন্দোরে দুই দলের ক্রিকেটাররা অনুশীলন করেছেন। সেখানেই দেখা গেছে, এসজির গোলাপি বল প্রচুর বাউন্স করে। যদিও বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানদের অনুশীলনে এমন বাউন্স সামলাতে হয়নি। কারণ, এমন বাউন্স দেয়ার মতো বোলার কোথায়? তবে সুইংয়ে যে মুস্তাফিজুর রহমান মাত করতে পারেন, তার আলামত মিলেছে। মুস্তাফিজের দিকেই বেশি নজর দেয়া হয়েছে। প্রথম টেস্টে না খেললেও দ্বিতীয় টেস্টে তাহলে খেলছেন মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের সঙ্গে ৪ উইকেট নিয়ে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের সফল বোলার আবু জায়েদ রাহি না হয় ভারত ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেবেন। তাতে কাজ হলে ভাল। না হলে বিপদ! ভারত ব্যাটসম্যানরা শামি, ইশান্ত, যাদবদের মতো বোলারদের বিরুদ্ধেই অনুশীলন করেন। তাতে সুইং কিংবা বাউন্স, দুটিরই সুবিধা-অসুবিধা তাদের ভাল করেই জানা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা কী করবেন? ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা মহাবিপত্তিতে পড়তে পারেন। গোলাপি বলে বিরুদ্ধে আসলে দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই থাকবেন অস্বস্তিতে। তবে সেই অস্বস্তি বেশি করে ঘিরে ধরতে পারে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের। ইন্দোরে লাল বলেই যেখানে কোন ইনিংসেই আড়াই শ’ রানও করা যায়নি। সেখানে ইডেনে গোলাপি বলে কতদূর যেতে পারবেন মুমিনুল, মুশফিকরা। আবার গোলাপি বল নাকি আরও আজব আচরণ করে। ইনসুইং দিলে কখনও কখনও আউটসুইং অটোমেটিক হয়ে যায়। এমন হলেতো আরও বিপদ। চেতশ্বর পুজারার মতো ব্যাটসম্যান অনুশীলনে সুইংয়ের কাছে বারবার হার মেনেছেন। আর বাউন্সত তাকে ভালই ভুগিয়েছে। তিনটি বাউন্স এমন অসমান হয়েছে যে কোন রকমে মাথা বাঁচিয়েছেন পুজারা। কোহলি আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘লাল বলের চেয়ে গোলাপি বলে বেশি সুইং করে। তা ব্যাটসম্যানদের সামনে বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াতে পারে। পুরনো বলও সে রকম রিভার্স সুইং করে না। সে ক্ষেত্রে পেসাররা কী রকম বল করে সেটাও দেখার।’ তবে বাউন্স যে অস্বাভাবিক, সেটি নিয়ে মহাভাবনা চলতে শুরু করে দিয়েছে। ইডেনে আবার ঘাসে ভরা উইকেট। এমন উইকেটে বল ভয়ঙ্করভাবে নড়াচড়াও করবে। দিনের আলো শেষ হতেই বলের আচরণও পরিবর্তন হবে। তখন ব্যাটসম্যানরা আরও ভুগতে শুরু করবেন। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা পুরোদমে অনুশীলন করেছে। মুস্তাফিজের দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। কোহলি আগেই বলেছিলেন, বাঁহাতি পেসারদের বিরুদ্ধে বরাবরই আমরা একটু সমস্যায় পড়েছি। তার অন্যতম কারণ, আমাদের দলে বাঁহাতি পেসার নেই। ওদের বিরুদ্ধে নিয়মিত খেলা হয় না আমাদের। তাই মুস্তাফিজুর অবশ্যই আমাদের পরীক্ষায় ফেলতে পারে। কিন্তু প্রথম টেস্টে দেখা যায়নি মুস্তাফিজকে। এবার দ্বিতীয় টেস্টে তিনি থাকতে পারেন। অনুশীলনে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও শাদমান ইসলামকে কয়েকবার আউট করেছেন মুস্তাফিজ। একবার ইমরুলের উইকেটই ছিটকে ফেললেন মুস্তাফিজ। এ ‘কাটার মাস্টার’ ভালই বোলিং করে দেখালেন। কিন্তু মুস্তাফিজের বোলিংয়েই যদি ব্যাটসম্যানরা এমন কাত হন, তাহলে শামি, ইশান্ত, যাদবের গতি আর সুইং ও বাউন্স কিভাবে সামলাবেন। আর স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিনও তো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের সামনে বড় বিপদই অপেক্ষা করছে।
×